দূষণের অভিযোগ তুলে শহরের অদূরে পাঙ্গা এলাকায় পুরসভার ভাগাড়ে ময়লা ফেলতে বাধা দিচ্ছেন বাসিন্দারা। দু’দিন ধরে জলপাইগুড়ি শহরের আবর্জনা অপসারণের কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের বর্জ্য সংগ্রহের কাজ বন্ধ রেখেছে পুরসভা। শহরের বাড়ি বাড়ি থেকে পুর কর্মীরা জঞ্জাল সংগ্রহ করলেও সেই জঞ্জাল ভাগাড়ে না নিয়ে যেতে পেরে শহরের বিভিন্ন মোড়ে থাকা পুরসভার ভ্যাটগুলিতেই জমিয়ে রাখা হয়েছে। দু’দিনের জমা জঞ্জালে ভ্যাটগুলি উপচে রাস্তায় পড়ছে। দূর্গন্ধে শহরের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এই অবস্থায় পরিস্থিতি সামলাতে আগামী ৬ জানুয়ারি বিষয়টি নিয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি সদরের মহকুমাশাসক সাগর চক্রবর্ত্তী বলেন, “আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। পাশাপাশি পুরসভাকে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য জমি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।” পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, নতুন ভাগাড় তৈরির জন্য জমি না পাওয়ায় শহরের আবর্জনা ফেলার জায়গা পাচ্ছে না পুরসভা। |
পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “শহরের বাড়ি থেকে আবর্জনা অপসারণের কাজ বন্ধ রাখা যাবে না। সেই কাজ চলবে, কিন্তু ডাম্পিং গ্রাউন্ড না থাকায় ভ্যাটেই সেই আবর্জনা জমিয়ে রাখা ছাড়া উপায় নেই। ভাগাড় ছাড়া অন্য কোথায় আবর্জনা ফেলা যাবে না।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আড়াই বছরের বেশি সময় ধরেই পাঙ্গা এলাকার বাসিন্দারা ভাগাড় অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন। বাসিন্দাদের দীর্ঘ আন্দোলনের চাপে পড়ে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তদানিন্তন সদর মহকুমাশাসকের উপস্থিতিতে পুরসভা ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১০ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে হওয়া সেই চুক্তিতে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বরের পরে পাঙ্গার ভাগাড়ে পুরসভা আবর্জনা ফেলবে না বলে লেখা হয়। মহকুমাশাসকের উপস্থিতির কথা লিপিবদ্ধ করে চুক্তিপত্রে গত বছরের নভেম্বর মাসের মধ্যে জেলা প্রশাসন নতুন ভাগাড় তৈরির জন্য পুরসভাকে অন্যত্র জমি দেবে বলেও উল্লেখ করা হয়। সেই চুক্তিমতো ১৩ ডিসেম্বর পার হয়ে যাওয়ার পরে নতুন বছরের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ সোমবার থেকে পাঙ্গার বাসিন্দারা পুরসভাকে ভাগাড়ে ময়লা ফেলতে বাধা দিতে শুরু কনে। মঙ্গলবারেও ভাগাড় লাগোয়া এলাকায় ফেস্টুন, পোস্টার লাগিয়ে অবরোধ করেছেন পাঙ্গার বাসিন্দারা। আগামী ৬ জানুয়ারী মহকুমাশাসকের দফতরে বৈঠকে পুরসভা এবং পাঙ্গার আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদেরও ডাকা হয়েছে। আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র অরিন্দম ঘোষ বলেন, “বৈঠকে যেতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। পাঙ্গায় আর পুরসভাকে ময়লা ফেলতে দেওয়া হবে না। গত সেপ্টেম্বরে চুক্তি অনুযায়ী ওই সিদ্ধান্ত।” চুক্তিপত্রে উল্লেখ্য থাকলেও নতুন ভাগাড় তৈরির জমি না পাওয়ায় আবর্জনা ফেলার জায়গা পাচ্ছে না পুরসভা। সংগ্রহ করা ময়লা শহরের বিভিন্ন রাস্তার পাশেই রেখে দিতে বাধ্য হচ্ছেন পুর কর্তৃপক্ষ। |