কলেজ গড়ার ঘোষণায় রাতারাতি সাফ জঙ্গল
প্রায় একশো একরের সরকারি জমি। কৃত্রিম জঙ্গল গড়ে ওঠায় বুনো হাতির পাল রেতি থেকে মরাঘাট জঙ্গলে যাওয়ার পথে প্রায়ই সেখানে দিনভর বিশ্রাম নিত। সম্প্রতি ওই জমিতে হিন্দি কলেজ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। তার পরেই রাতারাতি ওই জঙ্গলের কয়েকশো গাছ দুষ্কৃতীরা লোপাট করে নেয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় এলাকার বাসিন্দা এবং পরিবেশপ্রেমীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষুব্ধ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবও। গাছ লোপাটের খবর পেয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “বানারহাটের কাছে হিন্দি কলেজ তৈরি করার জন্য প্রস্তাব গিয়েছে। কলেজের জন্য যে জমি দেখে এসেছি তার গাছ চুরি রোধ করতে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। পুরোটাই দুষ্কৃতীদের কাজ। বিষয়টি মানা যায় না।” কৃত্রিম ওই জঙ্গলটি বনকর্মীদের কাছে হাতিদের বিশ্রামাগার বলে পরিচিত ছিল। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বানারহাট থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে মরাঘাট ও হলদিবাড়ি বাগানের মাঝখানে ১১৬ একর জমি একসময় এক বেসরকারি সংস্থার হাতে ছিল। ঘাস থেকে নানা ওষুধ ও রাসায়নিক তৈরির উদ্দেশ্যে জমিটি লিজ নেওয়ার পরে কয়েকটি বাড়ি তৈরি করে ওই বেসরকারি সংস্থা। গাছগাছালিতে ভরা জমিটিতে বছরে বেশ কয়েকবার বুনো হাতির পাল আশ্রয় নিত। সন্ধ্যায় হাতির পাল জঙ্গলে ফিরে যেক।
এই জঙ্গল সাফ হওয়ায় ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরা
১৯৯৩ সালে ওই বেসরকারি সংস্থা সরকারের হাতে জমি তুলে দিয়ে চলে যায়। গত বছর ২৯ জুলাই ডুয়ার্সের বীরপাড়ার পাশাপাশি বানারহাটের ওই জমিতে কলেজ তৈরি করা যায় কি না তা দেখতে গিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। তিনি ফিরে যাওয়ার পরদিন থেকে দুষ্কৃতীরা গাছ কেটে ফেলতে লুঠ হতে শুরু করে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি প্রশাসনকে জানালেও কোন লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। জলপাইগুড়ির ডিএফও কল্যাণ দাস বলেন, “হাতিদের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য জায়গাটি উপযুক্ত ছিল। রাতারাতি গাছ চুরি হয়ে যাওয়ার ফলে এখন হাতিদের সেখানে দাঁড়াতে অসুবিধা হচ্ছে। বন দফতরের জমি না হলেও আমরা ওই জমি থেকে কেটে নেওয়া অনেক গাছ পরে উদ্ধার করেছি।” সম্প্রতি এক দল হাতি রেতি থেকে মরাঘাট জঙ্গলে যাওয়ার পথে আটকে পড়ে ওই জঙ্গলে জঙ্গলে। শীত কাল বলে হাতির পালকে সমস্যায় পড়তে হয়নি। বছরের অন্য সময় এই এলাকায় হাতির পাল আটকে পড়লে বন দফতরকে প্রচণ্ড বেগ পোহাতে হবে বলে আশঙ্ক করা হচ্ছে। বানারহাটের পরিবেশ প্রেমী সংগঠন জাগরণ মঞ্চের সম্পাদক ভিক্টর বসু বলেন, “বছরে ৮-৯ বার ওই জমিতে দিনভর বিশ্রাম নিত হাতির পাল। মন্ত্রী গৌতম দেব হিন্দি কলেজ তৈরি করার জন্য ওই জমি দেখে যাওয়ার পরদিন থেকে ব্যাপক হারে গাছ লুঠ হয় বলে অভিযোগ।” বানারহাটের কংগ্রেস নেতা সজল রায়চৌধুরী এই ঘটনার জন্য প্রশাসনকে দায়ী করেন। তাঁর অভিযোগ, “প্রশাসনকে বহু বার বলে লাভ হয়নি।” সিপিএম-এর জেলা নেতা জিয়াউল আলমের অভিযোগ, বাম আমলে ওই জমিটির উপরে সরকারি নজর ছিল বলে কোনও সমস্যা হয়নি। তিনি বলেন, “প্রশাসনের ঢিলেঢালা মনোভাবের কারণে প্রচুর অমূল্য গাছ যে ভাবে কেটে নেওয়া হয়েছে তা মানা যায় না।” ধূপগুড়ির বিডিও অর্ঘ্য অধিকারী দাবি করেছেন, গাছ চুরির ঘটনা শোনার পরেই তিনি পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পরে প্রচুর কাঠ উদ্ধার হয়েছে বলে বন দফতরও দাবি করেছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.