লোকপাল বিল নিয়ে দলের অভ্যন্তরে এত দিন যা বলছিলেন, এ বার প্রকাশ্যেই তা স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের এক্তিয়ারের প্রশ্ন তুলে লোকপাল বিলের আওতায় লোকায়ুক্ত গঠনের তীব্র বিরোধিতা করেছেন মমতা। তৃণমূল সূত্রের খবর, মমতার লক্ষ্য, এই বিষয়টিকে সামনে রেখে আঞ্চলিক আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হয়ে ওঠা। অতীতে যেমন হয়েছিলেন কামরাজ বা বিজু পট্টনায়ক। মঙ্গলবার সরাসরি
সেই ইঙ্গিত দিয়ে মমতা মহাকরণে বললেন, “আমি শুধু আমার কথা বলি না। সব রাজ্যেরই এই কথা।” অর্থাৎ, দেশে সব অঙ্গরাজ্যের প্রতিভূ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো রক্ষার পক্ষে কেন্দ্রের সঙ্গে লড়াই করেছেন তিনি।
তবে একই সঙ্গে রাজনৈতিক কৌশলের অঙ্গ হিসেবে কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন না-করার কথা বলেছেন তৃণমূল নেত্রী। এমন একটা দিনে, যে দিন প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর সংঘাত বড় আকার ধারণ করেছে। লোকপাল-সহ কিছু বিষয় নিয়ে কেন্দ্রের নীতির সঙ্গে তৃণমূল একমত না হলেও কোনও সরকার ফেলে দেওয়া তাঁর লক্ষ্য নয় জানিয়ে মমতা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এবং কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে কোনও বিরোধিতায় যাব না।”
তাঁর নির্দেশে সংসদে দাঁড়িয়ে তৃণমূল সাংসদেরা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো রক্ষার পক্ষে যে সওয়াল করেছেন এ দিন তারই পুনরাবৃত্তি করে মমতা বলেন, “লোকায়ুক্ত রাজ্যকে দেওয়া হোক। কী মডেল হবে, তা রাজ্য ঠিক করবে। লোকপাল বিল নিয়ে আমরা আপত্তি তোলার পরে বলা হল বিকল্প ব্যবস্থার অবকাশ থাকছে। অথচ, একটা মডেল তৈরি করে দেওয়া হল। আমি যদি তা না নিই? আমরা তো আরও ভাল মডেল নিতে পারি!”
মমতার মতে, সব দলকে সঙ্গে নিয়েই লোকপাল বিল পাশ করা উচিত। তাঁর কথায়, “প্রায় সব রাজনৈতিক দলই মনে করে লোকপাল বিল পাশ করা উচিত। কিন্তু এ ব্যাপারে দলগুলোকে নিয়ে একমত হতে হবে।”
সংসদে তৃণমূলের আপত্তি ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্কের প্রসঙ্গ তুলে মমতা এ দিন বলেন, “এ নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলছে। কিন্তু মমতা ব্যানার্জি কোনও ‘ডিল’-এ বিশ্বাস করে না। মমতা ব্যানার্জি ‘ডিল’-কে ‘কিল’ করে। আমার জীবনে হারানোর কিছু নেই। পাওয়ারও কিছু নেই। জীবনকে মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছি। আমি স্বচ্ছ রাজনীতিতে বিশ্বাস করি।” |