|
|
|
|
অসিযুদ্ধ |
সিডনিতে ব্যাগি গ্রিন বনাম উত্তেজিত ভারত |
গৌতম ভট্টাচার্য • সিডনি |
সিডনির ঐতিহাসিক টেস্ট পটভূমিতে দুই অধিনায়কের পূর্বেকার মিলিত শপথকে কেমন যেন রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিবাহিনীর মতো মনে হচ্ছে! যারা অশান্ত দেশে গিয়ে পৌঁছয়। সংঘর্ষের তীব্রতা কমিয়ে আনে। কিন্তু বেশির ভাগ জায়গাতেই ব্যর্থ হয় হিংসার চোরাস্রোত থামাতে।
শপথটা কী ছিল? ছিল যে, চার বছর আগের কলঙ্কজীর্ণ ‘মাঙ্কিগেট’ আর আমরা ফিরিয়ে আনব না।
অথচ ক্রিকেট রাষ্ট্রপুঞ্জ বলে সত্যি কিছু থাকলে তার হেডকোয়ার্টার হওয়ার পথে সিডনি ক্রিকেট মাঠের চেয়ে উপযুক্ত ভূখণ্ড এই গ্রহে নেই। নবীন আর প্রাচীনের যুদ্ধহীন সহাবস্থান। রোম্যান্টিকতার সঙ্গে নতুন কংক্রিট গ্যালারির। ক্রিকেটীয় সভ্যতার সঙ্গে ম্যাচজয়ী পারফরম্যান্সের। স্পনসরের স্টিকারের সঙ্গে ঊনবিংশ শতাব্দীর উইলো কাঠ দিয়ে তৈরি ব্যাটের। এমন মিলনমেলা কোথাও নেই। সিডনি মাঠে বোগেনভেলিয়া থেকে দেবদারু, কী সুন্দর সুন্দর সব গাছ। আর নিরন্তর পাখির ডাক। ক্যালিপসো না হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ক্রিকেট কবিতা কেন এখানে বসিয়ে লেখানো হয় না?
হলিউডের যেমন ‘ওয়াক অফ ফেম’ আছে। সেখানে রাস্তার ওপর বিশ্ববন্দিত সব অভিনেতা-অভিনেত্রীর নাম খোদাই করা। তেমনই সিডনি মাঠের আছে ‘ওয়াক অফ অনার’। মেম্বার্স প্যাভিলিয়ন থেকে ব্র্যাডম্যান চেঞ্জিংরুম পর্যন্ত দু’শো মিটারব্যাপী একটা রাস্তা, যেখানে কিংবদন্তিরা চিরঅক্ষয় হয়ে আজও জীবিত। সিডনি মাঠ পরিচালনার দায়িত্ব যে ট্রাস্টের হাতে, সেই রডনি ক্যাভেলিয়র তার চেয়ারম্যান। আদ্যন্ত ক্রিকেট রোম্যান্টিক এক মানুষ তিনি। যিনি সিডনি মাঠের সর্বকালের সেরা অস্ট্রেলীয় দল ঘোষণার আগে আজ নির্বাচনী বৈঠকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ‘‘শুনুন, আর এক জন ওপেনার কাকে নেবেন আপনারা বেছে নিন। হেডেন? বুন? না সিম্পসন? কিন্তু এক দিকে ভিক্টর ট্রাম্পারকে নিতেই হবে। আমি জানি আপনারা বলবেন, ভিক্টরের রান আর গড় অনেক কম। কিন্তু অঙ্কের সেই দারিদ্র দিয়ে আমাদের কিছু আসে যায় না। রান দিয়ে ক্রিকেট আত্মাকে হারানো যায় না।”
|
একটু দেখা...
|
প্রিয় খেলোয়াড়দের এক ঝলক দেখতে প্রবাসী ভারতীয়দের ভিড়। সোমবার সিডনিতে। ছবি:এ পি |
পরিচালন সমিতি এমন ভাবনাসম্পন্ন বলেই বোধহয় স্টিভ ওয়-র বিশাল ব্রোঞ্জ মূর্তির এক হাতে ব্যাট। আর এক হাতে হেলমেট নয় ব্যাগি গ্রিন। পিছনে রিচি বেনোর মূর্তি। ও দিকটায় ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচ জেতানো নিউ সাউথ ওয়েলসের বোলার, প্রবাদপ্রতিম ফ্রেড স্পফোর্থ। সামনে স্ট্যান ম্যাকেব। এ মাঠেই বডিলাইনের প্রথম আবির্ভাবে যিনি ১৮৭ করেছিলেন। চারটে মূর্তির মাঝামাঝি ছোট ছোট ফলক। সিম্পসন। আর্থার মরিস। গ্রেগরি। ব্র্যাডম্যান। লর্ডস গমগমে আভিজাত্য আর বনেদিয়ানায় এগিয়ে থাকতে পারে। সিডনি এগিয়ে আছে ক্রিকেট কীর্তির রক্ষণাবেক্ষণ, সৌন্দর্য আর রোম্যান্টিসিজমে।
বডিলাইনের মতো চিরকালীন তাণ্ডব সৃষ্টিকারী একটা ব্যাপারের এখানেই আবির্ভাব হওয়াটা যেমন ‘কন্ট্রাডিকশন’, তেমনই ভয়ঙ্কর বেসুরো লাগল ক্রিকেট আত্মার ওই ছায়াবীথিতে দাঁড়িয়ে জনৈক সিনিয়র ভারতীয় ক্রিকেটারের মনোভাব: কী ধরনের অনুভূতি এদের। প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির বাইরে এত ক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখল! আমরা কোথাও নেমন্তন্ন খেতে গিয়ে যদি পাঁচ মিনিট আগে পৌঁছই, তা হলে দরজার বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখবে? কখনও কেউ শুনেছে?
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি কি তা হলে আজ প্রসঙ্গটা নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ খুলবেন না কি? কাল তো প্রধানমন্ত্রীর সামনেই কেমন ফট করে বলে দিলেন, “আমাদের সাপোর্ট স্টাফও এখানে আসতে পারলে খুশি হত।” তা জানা গেল, ধোনি এখনও রাগে ভেতরে ভেতরে ফুঁসছেন। কিন্তু টিম পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত মানতেই হচ্ছে যে, এত বড় ইস্যু নিয়ে মুখ খুললে আন্তর্জাতিক বিতর্ক বেঁধে যেতে পারে। অতএব ‘কিছুই হয়নি’ এমন মনোভাব নাও। ধোনি আবার পুরোপুরি দলীয় লাইনে হাঁটলেন না। টিম প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির বাইরে অতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার গত কালের অভিজ্ঞতায় ক্ষুব্ধ কি না প্রশ্ন শুনে বলে দিলেন ইঙ্গিতপূর্ণ ‘নো কমেন্টস।’ ব্যস, অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যমও নড়েচড়ে বসল। তখনও ভারত অধিনায়ক জানেন না, প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় আজ এর জন্য তাঁদের ওপরই দোষ চাপাবে!
কারণ, পরে ‘সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’-কে দেওয়া অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের বক্তব্য হল, ক্রিকেটারদের সঙ্গে দ্বিপ্রাহরিক চা-পানের সময় ছিল দুপুর ২.১০। ভারতীয় টিম বাস সেই সময়ের কিছুটা আগেই চলে আসে। প্রধানমন্ত্রীকে যখন জানানো হয় যে, ওঁরা পৌঁছে গিয়েছেন, তখনই ঝটিতি উনি টিমকে ভেতরে ডেকে নেন। স্বাগত জানান অতিথিদের কিরিবিলি হাউসে।
যাক, না জেনেও ধোনি এ দিন এর পরে আরও যা বললেন সময় সময় বিস্ফারিত লাগছিল। শত প্ররোচনাতেও মাথা গরম করেননি অতীতে। ‘ক্যাপ্টেন কুল’ নামটা তো আর এমনি এমনি হয়নি। কিন্তু এ দিন যেন মূর্তিমান ‘ক্যাপ্টেন অ্যাংগ্রি’। অস্ট্রেলিয়াকে লক্ষ করে পরের পর শব্দবাণ ছুড়ছেন!
সকালে সচিন তেন্ডুলকর নিয়ে অস্ট্রেলীয় কাগজের সমালোচনা কি এতে ইন্ধন জুগিয়েছিল? জানি না। তবে সচিন সম্পর্কে চতুর্দিকে এমন ‘ধন্য ধন্য’র সৌরজগতে লেখাটা যেন গ্রহান্তরের মানুষের আচম্বিত অনুপ্রবেশ। নামী অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট প্রতিনিধি ম্যালকম কন লিখছেন, ‘এসসিজি-তে যদিও সচিনের রাজ্যাভিষেকের উপযুক্ত মঞ্চ তৈরি। তবু তার সঙ্গে এটাও মনে রাখা দরকার, এই সেই মাঠ যা তেন্ডুলকরের সবচেয়ে বড় পাপের ভিত্তিভূমি। এই মাঠে এবং ক্রিকেটজীবনে ওঁর পারফরম্যান্স অসাধারণ। তা সত্ত্বেও কিছু অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারের ওঁর সম্পর্কে শ্রদ্ধা অনেক নেমে গিয়েছে আদালতে মিথ্যে সাক্ষ্যদানের জন্য। হরভজন বনাম সাইমন্ডস সংঘাতে প্রথমে সচিন বলেন দূরে থাকায় তিনি কিছুই শুনতে পাননি। ওটাই ঠিক ছিল। কিন্তু সচিন পরে সাক্ষ্য বদলে বলেন, “হরভজন মোটেও মাঙ্কি বলেনি। পঞ্জাবি একটা গালাগাল দিয়েছিল। যেটা ‘ম’ দিয়ে শুরু বলে অস্ট্রেলীয় কানে মাঙ্কি শোনাতে পারে।” ম্যালকমের লেখাটার শিরোনাম হয়েছে ‘সিডনি সচিনের পাপনগরী’! এত বড় অভিযোগ সচিন সম্পর্কে কখনও ওঠেনি।
|
|
এসসিজি-তে স্টিভ ওয়র সেই ব্রোঞ্জ মূর্তি। ছবি: গৌতম ভট্টাচার্য |
সোমবার ম্যালকম কন আনন্দবাজারকে বললেন, “ট্যুইটারে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা প্রভূত গালাগাল দিচ্ছে আমায়। ভারতীয় সাংবাদিকরাও দেখছি সকাল থেকে পরিষ্কার এড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু রিপোর্টার হিসেবে সত্যি কথাটা আমায় লিখতেই হবে। গিলক্রিস্ট তো ওর বইতেও সচিন প্রসঙ্গটা উল্লেখ করেছে।” অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটমহলের কানাঘুষো অনুযায়ী, ম্যালকম যে ক্রিকেটারদের সচিন সম্পর্কে শ্রদ্ধা কমে গিয়েছে বলছেন, তাঁরা হলেন গিলক্রিস্ট। পন্টিং। হেডেন। সাইমন্ডস। সত্যি কি তাই? লেখক নিজে কোনও নাম বলতে চান না। “ওরা তো নিজের মুখে বলবে এমন সাহস নেই। সচিন সম্পর্কে বিপক্ষে বলা মানে রাষ্ট্রদ্রোহিতা। সবাই আসলে বিল ওরিলির শেখানো সেই মডেলে চলতে চায়। বাবা, তোমার মনে যা-ই থাক, লোকটা স্ট্যাচু যখন হয়ে গিয়েছে তাতে হিসি করতে যেও না।”
এখানে যোগ করতেই হচ্ছে যে, ম্যালকমের সমালোচনাটা একেবারেই ছিন্নমূল। এর বাইরে সচিন এবং সিডনি ঘিরে যা ঘটছে, আধুনিক সময়ে তা যে সম্ভব, ভাবাই যায় না। একটা সময় প্রয়াত পঙ্কজ গুপ্তের খুব সমালোচনা করত সত্তর দশকের ভারতীয় ক্রিকেট। ১৯৪৭-৪৮-এর অস্ট্রেলিয়া সফরে ম্যানেজার হয়ে আসা পঙ্কজবাবু তাঁর প্রথম বক্তৃতায় বলেছিলেন, “ব্র্যাডম্যান যদি আমাদের বিরুদ্ধে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ওঁর শততম শতরান করেন, নিজেদের ধন্য মনে করব।” পঙ্কজ গুপ্তের সমালোচনা করে পরবর্তী কালে বলা হয়েছিল, “সাহেবদের সম্পর্কে আমাদের হীনমন্যতা কোন স্তরের ছিল যে, এ সব মুখ দিয়ে বার হত। বিপক্ষকে কি না বলছে এসো, সেঞ্চুরি করে যাও!”
অথচ চৌষট্টি বছর পর একই কথা তো অস্ট্রেলিয়া বলছে তেন্ডুলকর সম্পর্কে! রডনি ক্যাভেলিয়র দেখলাম ইন্টারভিউ দিয়েছেন, “এই বায়ুমণ্ডল, হিন্দু সব দেবদেবী আর সচিনের নিজস্ব কর্মফল মিলে সিডনিতে সেঞ্চুরি হচ্ছেই।” অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রীর আতিথেয়তায় ত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু তিনিও তো সচিনকে ব্যক্তিগত ভাবে বলেছেন, সিডনিতে কীর্তিটা ঘটলে খুব খুশি হবেন। কাগজপত্রে যত লেখালেখি সবার বিষয় এক সচিন এসো। সিডনিতে সেরে নাও মহান কাজটা। যেখানে তোমার গড় ২২১।
পঙ্কজ গুপ্তের ভারত না হয় হীনমন্যতায় ভুগতে পারে। সদ্য স্বাধীন হওয়া আতঙ্কিত তৃতীয় বিশ্ব! অস্ট্রেলিয়া প্রথম বিশ্বই শুধু নয়, ক্রিকেট ঐশ্বর্যে এমন বনেদি যে, তিনটে প্রায় সমমানের সর্বকালের সেরা বিশ্ব একাদশ গড়ে ফেলতে পারে। তারা সচিনের এমন পায়ে পড়ছে কেন? এটা জেনেও যে, এক বলের খেলায় সেঞ্চুরি মানে কী পরিমাণ ‘চান্স ফ্যাক্টর’ নির্ভরশীল!
যে কোনও ক্রিকেট শিক্ষার্থীর উচিত টেস্ট দেখা বর্জন করে বরঞ্চ তিন মহাতারকার ব্যাটিং অনুশীলন খুঁটিয়ে দেখা। তাঁরা সচিন, পন্টিং, সহবাগ। পন্টিংয়ের শরীর আগের মতো নড়ছে না। ‘মাসল মেমোরি’ নির্ভর ব্যাটিং করছেন। তবু দিনমজুরের মতো লড়ছেন রোজ নেটে। যদি সেই সোনার সময় ফেরত আসে! সহবাগ প্রতিভার ওপর নির্ভর না করে ব্যাটিংয়ের মধ্যবিত্ত সব শর্তপূরণে নেটে খাটছেন। বলছেন, “সিডনি পিচ ঠিক আছে। শুধু দেড়টা সেশন আমাদের ভাল ভাবে ব্যাটিং করতে হবে।” সচিন থ্রো ডাউন করিয়ে যাচ্ছেন অবিরত। বোলারের বিরুদ্ধে প্র্যাক্টিস নয়। ম্যাচের আগের দিন তাই করেন। এর পিছনে বিজ্ঞান হল, থ্রো ডাউনের বল মারতে মারতে অবচেতনে অনুভূতিটাকে ‘লক’ করে দেওয়া। মাঠে যাতে দ্রুত মেশিনের মতো আপনাই রিঅ্যাক্ট করতে পারে তাঁর শরীর!
এত কীর্তির পরেও এঁদের অধ্যবসায়, গরজ আর বিপন্নতা দেখলে বোঝা যায়, ক্রিকেটের সার সত্য হল, তুমি আগের দিন যা-ই করে থাকো, সব মূল্যহীন। প্রতিদিন ক্রিজে তোমার জীবন শুরু হয় শূন্য থেকে। তোমার পেশায় পূর্বনির্ধারিত বলে কিছু নেই। গ্যারান্টিকৃত নিরাপত্তা বলেও না। তুমি রাজাও বনতে পারো, অথবা ফকির।
তাই যদি হয়, তা হলে তেন্ডুলকরের জন্য আগাম ডিজাইনার আলোকসজ্জার বন্দোবস্ত কেন? প্রচারে প্রচারে সিডনি টেস্টকে তো মোটামুটি বিয়েবাড়ির সেট করে ফেলা হয়েছে। যেখানে লগ্ন ঠিক। বর শুধু আসবে। আনুষ্ঠানিক মালাবদল করে রাজকন্যাকে নিয়ে চলে যাবে।
|
ধোনি যখন রাগী |
প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির বাইরে অতক্ষণ দাঁড়াতে
হয়েছিল বলে
ভারতীয় ক্রিকেট টিম
অসন্তুষ্ট কি না?
উঁহু। নো কমেন্টস।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি |
...এত বড় বড় কথা বলছে অস্ট্রেলীয়রা, আমি তো বলব ওয়াক দ্য টক। বন্ধুরা, কথার সঙ্গে সমান তালে হাঁটুন, তা হলে তো বুঝি...
...সিমিং উইকেটে গতিসম্পন্ন আক্রমণ ভারত খেলতে পারে না বলা হচ্ছে। আমি বলব বড় বেশি অপরিণত কথাবার্তা হচ্ছে। আমাদের ব্যাটসম্যানরা এক-এক জন প্রবাদপুরুষ। তাদের সম্পর্কে একটু আগেই বলে ফেলা হচ্ছে না?...
...আমরা সাম্প্রতিককালে বিদেশে ভাল খেলতে পারছি না সত্যি কথা। তা বলে কি দৃঢ়তা দেখিয়ে টেস্ট সিরিজে কামব্যাক আমরা বিদেশে করিনি নাকি...
...অস্ট্রেলীয় বোলিং নিয়ে জাঁকজমকের সব কথা শুনছি। কিন্তু ওদেরও মনে রাখতে হবে বোলিংয়ের চাপটা আমাদের ওপর গোটা সিরিজ ধরে রাখতে হবে... |
|
ম্যালকম কনের লেখা নিয়ে এত বিতর্ক তৈরি হয়ে গেল। তার চেয়েও আশ্চর্য তো চিরবিদ্রোহী ইয়ান চ্যাপেলের আত্মসমর্পণ। চ্যাপেল কিছু দিন আগেই তেন্ডুলকরের ট্রেনিং পদ্ধতির সমালোচনা করেছেন। সচিন কেন ভারতীয় জনমানসের চাপ অহেতুক নিজে নিতে চান, তা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। সেই তিনিই আবার লিখছেন, “অস্ট্রেলিয়া সাবধান। তোমরা সহবাগকে থামাতে পেরেছ। তেন্ডুলকরের কোনও উত্তর কিন্তু এখনও খুঁজে পাওনি। মেলবোর্নে ওর যা ভাবগতিক দেখলাম, সিডনিতে মুকুট নিয়ে চলে যাবে।”
এক এক সময় মনে হচ্ছে, সিডনি টেস্টের আগে অপার্থিব সব ব্যাপার ঘটছে। মঙ্গলবার টেস্ট শুরুর আগে দু’দলের ক্রিকেটারদের শততম টেস্টের স্মারক ক্যাপ উপহার দেবে এসসিজি। ব্যাগি গ্রিন নয়, সোনালি স্কাল ক্যাপ গোছের কিছু দেবে। ১৮৮২-তে যখন এ মাঠে প্রথম টেস্ট খেলা শুরু হয়েছিল, সেই প্রাচীনত্বের দিগনির্দেশ থাকছে উপহারে।
সময়টাও কি একশো উনত্রিশ বছর দমকা হাওয়ায় পিছিয়ে গেল? নইলে যা ঘটছে সব পার্থিব না অপার্থিব? সচিনের সেঞ্চুরি কি ক্রিকেটের অমৃত হয়ে গেল যে, বিপক্ষও খেতে চাইছে? সত্যি শান্তির ম্যাচ? নাকি ছোটখাটো সংঘর্ষ শেষ হয়ে মহাযুদ্ধের নীরব প্রস্তুতি? সব কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে! কী যে লিখি! |
|
|
|
|
|