কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কাজে ‘অনিয়ম’ নিয়ে রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার এক বৈঠকে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, বিল্ডিং বিভাগের কাজকর্মে তিনি আদৌ খুশি নন। মুখ্যমন্ত্রী এই হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন
যে, শহরের বাড়িগুলোর নক্শা অনুমোদনে পুর-বিল্ডিং বিভাগের ভূমিকা নিয়ে প্রয়োজনে সিআইডি, এমনকী সিবিআই পর্যায়ের তদন্ত করাবেন তিনি।
এ দিন টাউন হলে কলকাতা পুলিশ, পুরসভা, দমকল ও আবগারি বিভাগের কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে ছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ শোভন চট্টোপাধ্যায় ও পুর-কমিশনার অর্ণব রায়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান, মুখ্যসচিব সমর ঘোষ, স্বরাষ্ট্র-সচিব জ্ঞানদত্ত গৌতম ও কলকাতার পুলিশ কমিশনার রঞ্জিতকুমার পচনন্দা।
|
আর সেখানেই আলোচনা চলাকালীন মেয়রের উপস্থিতিতে মমতা প্রশ্ন ছুড়ে দেন, কলকাতা পুর-এলাকায় পরিকল্পনা বহির্ভূত ভাবে বাড়ি তৈরি হচ্ছে কী করে? বৈঠকে উপস্থিত এক অফিসারের কথায়, পুর-বিল্ডিং বিভাগের কাজকর্ম সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী নিজের মনোভাবকে ‘একেবারে আনহ্যাপি’ বলেও অভিহিত করেন। এ-ও প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কী করছে পুরসভার ভিজিল্যান্স বিভাগ? বিল্ডিং দফতরের অফিসারদের বাড়িতে তারা তল্লাশি করে না কেন?’’ রাজ্য ভিজিল্যান্স বিভাগকে আরও শক্তিশালী করা হবে বলে জানিয়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দেন, পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কিছু কেস সিআইডি-কে তদন্ত করতে দেওয়া হবে। দরকার পড়লে কিছু কেস তুলে দেওয়া হবে সিবিআইয়ের হাতে। এ দিকে এ দিনই রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী সৌমেন্দ্রনাথ মহাপাত্র জানিয়েছেন, বৃষ্টির জল ধরে তা মাটিতে ‘রিচার্জিং’-এর ব্যবস্থা না-থাকলে কলকাতা-সহ রাজ্যের কোনও পুরসভা আর বহুতল বাড়ির নক্শার অনুমোদন দিতে পারবে না। এ ব্যাপারে নতুন আইন আনতে চলেছে তাঁর দফতর। আগামী বাজেট অধিবেশনেই সংশ্লিষ্ট বিল আনা হবে। শুধু তা-ই নয়, বিশেষত যেখানে চাষের কাজে অগভীর নলকূপ ব্যবহার করা হয়, সেই সব পঞ্চায়েত-এলাকার জন্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
টাউন হলে এ দিনের বৈঠকে মশা তাড়ানোর পুর-উদ্যোগ সম্পর্কেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের কালীঘাটের বাড়িতেও মশার উপদ্রব ‘যথেষ্ট’ বলে জানিয়ে ক্ষুব্ধ মমতার মন্তব্য, “পুর-কর্তৃপক্ষ মশা মারার কাজও ঠিক মতো করছেন না!” |