হলদিবাড়ি ব্লকের যুব তৃণমুল কংগ্রেস কমিটি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। হলদিবাড়ি ব্লক তৃণমূল সভাপতি বিপ্লব সরকার বলেন, “শহর যুব তৃণমূল কমিটি দলের কোনও নিয়মকানুন মানছে না। তাদের জন্যে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। মূলত তাঁদের জন্যেই আমরা হলদিবাড়ি ব্লকের সমস্ত যুব তৃণমূল কংগ্রেস কমিটি ভেঙে দিতে বাধ্য হচ্ছি।” তবে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি অর্ঘ্য রায়প্রধান ওই কমিটি ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি মানতে নারাজ। তিনি জানান, দুর্নীতির প্রতিবাদ করতে যাওয়ায় মিথ্যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তাঁর ও দলের ক’জন নেতার বিরুদ্ধে। তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “কেউ দুর্নীতির প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিতর্কে পড়লে সেটা অবশ্যই দল দেখবে। কিন্তু, গুরুতর অভিযোগ উঠলেও সেটা দেখা দরকার। তবে এটা সাংগঠনিক ব্যাপার। সংবাদমাধ্যমে এখনই কিছু বলতে চাই না।”
তৃণমূল সূত্রের খবর, হলদিবাড়ি শহরে মুখ্য বাজার চত্বর তৈরির জন্য ২০১১ সালের গোড়ায় ৯ জনকে বরাত দেওয়া হয়। ৬ জন ঠিকাদারের ওই কাজ করার মতো ন্যূনতম যোগ্যতা নেই বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঠিকাদারদের কাছে ঠিকঠাক কাগজপত্র না থাকার অভিযোগ ওঠে শহর তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। ঠিকাদারদের অনিয়মের বিরুদ্ধে রাজ্য কৃষি বিপণন দফতরে অভিযোগ দায়ের করা হয়। রাজ্য কৃষি বিপণন দফতর থেকে অভিযুক্ত ঠিকাদারদের শো-কজ করা হয়।
এই ঘটনার পর আসরে নামে অভিযুক্ত ঠিকাদাররা। কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের কাছে সরাসরি লিখিতভাবে কয়েকজন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। যাঁদের নামে অভিযোগ হয়েছে তাঁরা হলেন, হলদিবাড়ি শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি চন্দন রায়, হলদিবাড়ি শহর তৃণমূল সম্পাদক স্বদেশ রায়, হলদিবাড়ি ব্লক তৃণমূল সহ সম্পাদক কমল প্রধান এবং কোচবিহার জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি অর্ঘ্য রায়প্রধান। তাঁদের বিরুদ্ধে দলের নামে টাকা চাওয়া এবং টাকা নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
যে ঠিকাদাররা অভিযোগ করেছেন, তাঁরা হলেন নির্মল ঘোষ, সিদ্ধার্থ মজুমদার, বাসেদ আলি সরকার, আবু রোশন সরকার, ধর্মদেব বর্মন এবং অজয় সিংহ। তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা কাজে যাতে ব্যাঘাত না-হয়, সে জন্য ওই নেতাদের টাকা দিয়েছেন। তবে সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অর্ঘ্যবাবু। তিনি বলেন, “আমি থাকতে ব্লক সভাপতি কমিটি ভেঙে দেওয়ার কে? ঠিকাদারদের বেআইনি কাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঠিকাদাররা প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছে। ঠিকাদারদের কথায় দল চলবে?” চন্দনবাবু, স্বদেশবাবু ও কমল প্রধান জানান, তাঁরা কেউ কোনও টাকা নেননি। ঠিকাদারদের অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। |