করলা নদীর জলে আবর্জনা ফেলা থেকে জামাকাপড় কাচা, সবই নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন ও পুরসভা। শনিবার জলপাইগুড়ির সার্কিট হাউসে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের উপস্থিতিতে করলা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। গত নভেম্বর মাসে করলায় বিষকাণ্ডের পরে নদীর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতেই এ দিনের বৈঠক হয়। বৈঠকে করলাকে দূষণ থেকে বাঁচাতে নদীতে নানা বিধি-নিষেধ জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ দিনই করলার জলকে পরিষ্কার করতে তিস্তা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার কাজ শুরু হয়েছে। দুপুর ১২টা নাগাদ মান্তাদরি এলাকার তিস্তা-মহানন্দা ক্যানেল থেকে ফিডার ক্যানেলের মাধ্যমে করলায় ব্যারেজের জল ছাড়ার কাজ শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “দু’দিন ধরে ব্যারেজের জল করলায় ছাড়া হবে। নদীতে এখন যে পরিমান জল আছে তার অন্তত তিনগুণ জল ব্যারেজ থেকে ছাড়া হবে। নদী বিশেষজ্ঞদের ধারণা দু’দিন পরে করলা নদীর জল ফের স্বাভাবিক সুস্থতা ফিরে পাবে। বিষের প্রভাব পুরোপুরি কেটে যাবে।” অন্য দিকে, বিষকাণ্ডের পরেও শহর লাগোয়া সারদাপল্লি এলাকায় করলার খাতে শীতের শাকসবজি চাষের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এলাকার কয়েকজন চাষিকে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় এনে জিঞ্জাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। পরে একজনকে আটক করা হয়। |
করলা নদী সংস্কারের কাজ শুরুর সিদ্ধান্তও এ দিনের বৈঠকে নেওয়া হয়েছে। ২০০০-০১ সালে করলা সংস্কারের জন্য উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি প্রকল্প তৈরি করেছিল। সেই প্রকল্পের বিস্তারিত রিপোর্ট দু’দিনের মধ্যে তাঁর দফতরে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী গৌতমবাবু। প্রকল্পে করলার খাতকে গভীর ভাবে কেটে মোহনার দিকে প্রায় ৬ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গিয়ে খরখড়িয়া নদীতে মেশানোর প্রস্তাব রয়েছে। এর ফলে নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি পাবে বলে জানানো হয়েছে। গৌতমবাবু বলেন, “বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্টটি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সময় প্রকল্প ব্যয় সাড়ে ৬ কোটি টাকা ধরা হলেও এখন তা ১০ কোটি টাকা হতে পারে। প্রকল্পের বিস্তারিত রিপোর্ট জমা পড়লে বিআরজিএফ তহবিল থেকে বরাদ্দ অনুমোদন করিয়ে কাজ শুরু করানো হবে।” বৈঠকে জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র, পুলিশ সুপার সুগত সেন ছাড়াও কৃষি, মৎস্য-সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা ছাড়াও জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসুও ছিলেন। মোহনবাবু বলেন, “করলা নিয়ে সচেতনতা প্রসারে কনভেনশন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুরসভা সেই কনভেনশনের আয়োজন করবে।” |