ভূমিকম্পের পরে কেটেছে তিন মাস, সরব বামেরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির পর সাড়ে ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও শহরের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিকরা কোনও ক্ষতিপূরণ পাননি বলে অভিযোগ। শুক্রবার তা নিয়েই শিলিগুড়ি পুরসভার মাসিক সভায় সরব হলেন বিরোধী বামেরা। বিরোধী দলের কাউন্সিলর জয় চক্রবর্তী এ দিন অভিযোগ করেন, গত ১৮ সেপ্টেম্বর শিলিগুড়িতে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর পুরসভার তরফে ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে সমীক্ষা করা হয়। সমস্ত কাউন্সিলররাই ওই কাজে এগিয়ে আসেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব যান বিভিন্ন এলাকায়। সে সময় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল ক্ষতিপূরণের। অথচ সাড়ে ৩ মাস কেটে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি, স্কুল ভবন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হল না। শহরের অনেক গরিব মানুষ তাতে বিপাকে পড়ে রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল ভবনে বসেই পড়ুয়াদের ক্লাস করতে হচ্ছে। ভাঙা ঘরেই গরিব পরিবারগুলিকে দিন কাটাতে হচ্ছে।
বাম কাউন্সিলর দিলীপ সিংহ জানান, তাঁর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সোনালি রায় নামে এক মহিলা গুরুতর জখম হয়েছিলেন। রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকার থেকে ভূমিকম্পে মৃত এবং জখমদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই মহিলার জখম, হাসপাতালে চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য-সহ বিস্তারিত জানানো হলেও তিনি আজ পর্যন্ত কোনও ক্ষতিপূরণ পাননি।
শিলিগুড়ির মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত জানান, মৃত এবং জখমদের ক্ষতিপূরণের কথা তারা বলেননি। সরকারের তরফে শহরে ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখে তাদের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। তারা সেই কাজ করেছেন। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের কাছে সে সব রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, “মৃতের পরিবার এবং জখমদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন রাজ্য সরকার। সেই মতো তথ্য পাঠানো হয়েছিল। প্রশাসনের তরফে সে সব খতিয়ে দেখে ইতিমধ্যেই তাঁদের পরিবারকে সরাসরি ক্ষতিপূরণের টাকার চেক পাঠানো হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। দিলীপবাবুর ওয়ার্ডের জখম মহিলার বিষয়টি কেন আটকে রয়েছে তা খোঁজ নেব। তাঁকে ক্ষতিপূরণ দিতে পুরসভার তরফে ফের সুপারিশ করব। তা ছাড়া মহকুমা প্রশাসনের কাছে সম্প্রতি ভূমিকম্পে শিলিগুড়ি মহকুমার ৪ টি ব্লকের ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির জন্য ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বরাদ্দ এসেছে বলে জানানো হয়েছে।”
পুর কর্তৃপক্ষ জানান, মহকুমা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে বরাদ্দ ক্ষতিপূরণের মধ্যে মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া এলাকার জন্য রয়েছে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা। বাকিটা শিলিগুড়ি পুর এলাকার জন্যই। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির ছবি, বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে। বসবাসের ঘর, স্কুল ভবন, স্বাস্থ্যকেন্দ্র মিলিয়ে শহরের প্রায় ৩ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। ক্ষতির পরিমাণ জানানো হয়েছিল প্রায় ৩০ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা। সেই মতো এখন পর্যন্ত ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ এসেছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে শীঘ্রই ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান মেয়র। সে ক্ষেত্রে গরিব পরিবারগুলি অগ্রাধিকার পাবে বলে জানানো হয়েছে। |