খাটাল উচ্ছেদে বাম-বিরোধিতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শহর থেকে খাটাল উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে বামেদের বিরোধিতার মুখে পড়ল শিলিগুড়ি পুরবোর্ড। শুক্রবার পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে ঘোষণা হয়, খাটাল উচ্ছেদ করা হবে বলে মেয়র পারিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে। তা শোনার পরেই আপত্তি জানান বাম কাউন্সিলররা। বামেদের পক্ষে কাউন্সিলর দিলীপ সিংহ বলেন, “আমরা উচ্ছেদের বিরুদ্ধে। খাটালগুলি কোথায় যাবে, ওই বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের কী ব্যবস্থা করা হবে তা বিস্তারিত না জানিয়ে ওই কাজ করা যাবে না। আমরা বাধা দেব। বিস্তারিত আলোচনা না-করলে কোনভাবেই উচ্ছেদ করতে দেব না। অতীতে বাম জমানায় মহানন্দার পাড় থেকে খাটাল উচ্ছেদের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই কাজ করা যায়নি। নানা বাধার মুখে তাদের চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত ভাটা পড়েছিল। কিন্তু শহরের সৌন্দার্যায়নে, দূষণ রুখতে খাটাল সরানোর কথা তাঁরাও জানিয়েছিলেন। এ দিন বোর্ড মিটিংয়ে মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা করেই ওই কাজ করা হবে।” পরিবেশ বিভাগের উদ্যোগেই ওই কাজ করার কথা। এ দিন বোর্ড মিটিংয়ে পরিবেশ বিভাগের মেয়র পারিষদ তথা ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “শহরকে দূষণ মুক্ত করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। শহরের সৌন্দর্যায়ন করতে খাটাল সরাতেই হবে। বিরোধী দলনেতা এবং তাদের কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলেই আমরা ওই কাজ করব। সর্বদল বৈঠকও ডাকা হবে। খাটাল মালিকদের নিয়েও আলোচনায় বসা হবে।” এ দিন পুরসভার সিদ্ধান্তের খবর পেয়ে বিরোধিতা করেছেন শিলিগুড়ি খাটাল মালিক সংগঠনের সভাপতি রাজেশ যাদব। তিনি বলেন, “ওই সিদ্ধান্তের প্রতি আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তা ছাড়া পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে কোনও খাটাল সরানো তলবে না। প্রয়োজনে আমরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করব।” খাটাল মালিকদের সংগঠনের তরফে জানা গিয়েছে, শহরে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৩০০ খাটাল রয়েছে। মহানন্দা নদীর পাড়ে ১,২,৩, ৫ নম্বর ওয়ার্ডগুলিতে খাটালের সংখ্যা বেশি। ১ নম্বর ওয়ার্ড কংগ্রেসের দখলে থাকলেও ৩ এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ড বাম শরিক আরএসপি এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের দখলে। খাটাল মালিকদের দাবি, এর সঙ্গে তাদের রুজিরুটি জড়িত। তাই তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা আগাম করতে হবে। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শহরের মধ্যে খাটাল রাখার বিধি নেই। মহানন্দা সেতু লাগোয়া এলাকায় যে ভাবে খাটাল পরিবেশ দূষণ করছে তা ভবিষ্যতের ক্ষেত্রেও ক্ষতিকারক। তা ছাড়া শহরে ঢোকার মুখে ওই পরিস্থিতি দেখে সকলেই সমালোচনা করেন। |