সেতু দ্রুত সারাতে আজ গৌতম দেবের দ্বারস্থ ময়নাগুড়ির ব্যবসায়ীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ময়নাগুড়ি |
শুক্রবারেও ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। বুধবার দুপুর থেকে জাতীয় সড়কে যে যানজট শুরু হয়েছে তা শুক্রবার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌছে যায়। এ দিন সকাল থেকে তিস্তা সেতুর দু’পারে জাতীয় সড়কের প্রায় ২২ কিলোমিটার এলাকায় যানজট আরও তীব্র হয়েছে। কয়েক হাজার ট্রাক ও বাসের জটে নাকাল যাত্রীরা বাস থেকে নেমে হেঁটে দীর্ঘপথ অতিক্রম করতে বাধ্য হয়েছেন। অফিস যাত্রীদের অনেকে মাঝ পথে আটকে পড়ে ফিরে চলে যান। বিপর্যস্ত হয়েছে হাট ও বাজার। এ দিকে যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল দশা নিয়ে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। চাষিরা এ দিন জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। দ্রুত তিস্তা সেতু মেরামতের দাবিতে আজ, শুক্রবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর দ্বারস্থ হচ্ছে ময়নাগুড়ি ব্যবসায়ী সমিতি। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ও ক্ষোভের কথা অস্বীকার করেননি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কর্তারা। সংস্থার টেকনিক্যাল ম্যানেজার পঙ্কজ মিশ্র বলেন, “জানি সাধারণ মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু আমরা নিরুপায়। কংক্রিটের চাঙ্গর কাটার পরে সেতুর অনেক ক্ষয়ক্ষতি বার হয়েছে। দীর্ঘদিন নিয়ম মেনে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ না-হওয়ায় এমনটা হয়েছে। |
থমকে। জলপাইগুড়িতে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
আমরা বিশেষ রাসায়নিকের সাহায্যে ঢালাই করে মেরামতের কাজ শুরু করেছি। এটা শুকোতে সময় লাগবে ছ’দিন। ওই কাজের জন্য সহযোগিতা প্রয়োজন।” কিন্তু কাজের গতি দেখে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কথায় এলাকার বাসিন্দারা আশ্বস্ত হননি। এ দিন এলাকার নিয়ন্ত্রিত বাজারে বাইরের ব্যবসায়ীরা পৌছতে পারেনি। অন্য বাজারগুলিও ফাঁকা ছিল। কেনাকাটা তলানিতে ঠেকেছে সর্বত্র। ওই ঘটনায় উদ্বিগ্ন ময়নাগুড়ি ব্যবসায়ী সমিতির কর্তারা দ্রুত সেতু মেরামতের দাবিতে আজ, শনিবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর দ্বারস্থ হচ্ছেন। সংস্থার সহকারি সম্পাদক স্বপন দত্ত বলেন, “বৃহস্পতিবার থেকে বাজারে পণ্যসামগ্রী পৌছচ্ছে না। ক্রেতাদেরও ভিড় নেই। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বেশিরভাগ দোকানে বিক্রি হয়নি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে পরিস্থিতির কথা জানিয়ে দ্রুত তিস্তা সেতু মেরামতের দাবি জানানো হবে।” সেতু মেরামতের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবিতে শুক্রবার ময়নাগুড়ি রোডের কাছে চারটি বামপন্থী কৃষক সংগঠনের সমর্থক কয়েকশো চাষি বেলা ১২টা থেকে প্রায় এক ঘন্টা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। সারা ভারত কৃষক সভার ময়নাগুড়ি ব্লক কমিটির সম্পাদক নির্মল চৌধুরী বলেন, “বেহাল তিস্তা ও জলঢাকা সেতুর জন্য চাষিরা খেতের ফসল বাইরে কোথাও পাঠাতে পারছে না। দুটি সেতু মেরামতের কাজ দ্রুত শেষ না-হলে বড় মাপের আন্দোলন শুরু হবে।” শুক্রবারও ময়নাগুড়ি-শিলিগুড়ি রুটের বেশিরভাগ বাস ওদলাবাড়ি হয়ে যাতায়াত করেছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে নাকাল হয়েছেন চিকিৎসক সমর দের মতো অনেকে। ওই চিকিৎসক ময়নাগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন বিকেল পাঁচটা নাগাদ। যানজটের জন্য তাঁর গাড়ি রাত ন’টাতেও ১২ কিলোমিটার দূরে দোমহনি মোড়ে পৌছতে পারেনি। বিরক্ত সমরবাবু বলেন, “সেতু মেরামতের কী কাজ হচ্ছে সেটাই বুঝতে পারছি না। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ একটি সেতুতে এ ভাবে ঢিমেতালে কাজ চলতে পারে!” |