|
একগুচ্ছ পরিকল্পনা ঘোষণা রুদ্রনাথের
সঞ্জয় চক্রবর্তী • বিধাননগর |
|
শিলিগুড়ির অদূরে বিধাননগরের আনারস বিক্রয়কেন্দ্রটিকে একটি পৃথক ‘ব্র্যান্ড’ হিসাবে তুলে ধরতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিল শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ)। শুক্রবার স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং উৎপাদকদের সঙ্গে বৈঠকের পরে এসজেডিএ-র পক্ষ থেকে ওই বিক্রয়কেন্দ্রে আনারস মিউজিয়াম, গবেষণাকেন্দ্র এবং জুন-জুলাইয়ে আনারস উৎসবের পরিকল্পনা হয়। এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “কেন্দ্রীয় বরাদ্দে আনারস বিক্রয়কেন্দ্র তৈরি সম্পূর্ণ। কিছুদিনের মধ্যেই সেটি চালু হবে। বিধাননগরের আনারস জনপ্রিয় করতে আনারস উৎসব, মিউজিয়াম এবং গবেষণাকেন্দ্র হবে।” বিধাননগরের আনারস ব্যবসায়ীদের এই বিক্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে আনার ব্যাপারে এ দিন একটি কমিটিও গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে এসজেডিএ-র আধিকারিকেরা ছাড়াও আনারস, ব্যবসায়ী এবং উৎপাদকেরাও রয়েছেন। জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেই কমিটি বৈঠক করে বিক্রয়কেন্দ্রটি চালু করার ব্যাপারে দিনক্ষণ চূড়ান্ত করবে। গোটা দেশ জুড়ে বিধাননগরের আনারস জনপ্রিয় হলেও আনারস বিক্রির পরিকাঠামো একসময়ে কিছুই ছিল না। এলাকার কয়েকশো একর জমিতে কৃষকেরা সারা বছর আনারস চাষ করলেও ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে দোকান তৈরি করে ব্যবসায়ীরা আনারস বিক্রি করেন। সারা বছর ফল ও প্রক্রিয়াজাত পণ্য মিলিয়ে কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলেও ভিন রাজ্যে এখনও আনারস পাঠানো হয় জাতীয় সড়কের পাশে ট্রাক দাঁড় করিয়ে। তার ফলে রাস্তায় যানজট নিত্য ঘটনা। স্থানীয় আনারস ব্যবসায়ীদের আন্দোলনের জেরে এসজেডিএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্যের উদ্যোগে পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়। কেন্দ্রীয় সরকার বিধাননগরের বটতলা এলাকায় একটি আধুনিক আনারস বিক্রয়কেন্দ্র তৈরির জন্য প্রায় ১২.৬৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। ব্যবসায়ীদের জন্য এখানে ৪৮টি স্টল ছাড়াও হিমঘর তৈরি করা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে প্রশাসনিক ভবনও। এসজেডিএ-এর বর্তমান চেয়ারম্যান রুদ্রনাথবাবু সেই কাজে গতি আনার উপরে জোর দেন।রুদ্রনাথবাবু বলেন, “বিক্রয়কেন্দ্রই একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। বহু পর্যটকেরও আনারস নিয়ে কৌতুহল রয়েছে। তাঁদেরকেও জানানো হবে। ভিন রাজ্য থেকে ব্যবসায়ীরা যাতে এই এলাকায় পৌঁছতে পারেন প্রচার হবে সেই ব্যাপারেও।” এসজেডিএ-র এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিধাননগর আনারস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কাজল ঘোষ। তিনি বলেন, “আমাদের আনারসের বাজার রয়েছে। কিন্তু পণ্যটিকে ঠিকমতো বিক্রি করার জন্য কোনও পরিকল্পনাই এতদিন হয়নি। এসজেডিএ উদ্যোগী হলে আমরা অবশ্যই পাশে থাকব।” সভায় উপস্থিত আনারস চাষিরা প্রস্তাব দেন আনারস নিয়ে গবেষণা কেন্দ্র তৈরির জন্য। মোহিতনগর থেকে আনারস এগ্রি এক্সপোর্ট জোন বিধাননগরে সরিয়ে আনার দাবিও জানান তাঁরা। উত্তরবঙ্গ আনারস উৎপাদক সমিতির সম্পাদক অরুণ মণ্ডল বলেন, “আনারস নিয়ে অনেক কিছু করা যায়। তাহলে এলাকার অন্যান্য কৃষকেরাও উৎসাহিত হবেন। এসজেডিএকে আমরা কিছু প্রস্তাব দিয়েছি। সেগুলি গ্রহণ করা হলে এলাকার অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।” সভায় এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান গোদালা কিরণকুমার, উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলেশ ভৌমিক, জেলা উদ্যানপালন আধিকারিক বিপ্লব সরকার-সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। |