সরাসরি জমি কেনার অনুমতি চাইল বিএসএফ
জমি-জটিলতায় থমকে চৌকি নির্মাণের কাজ
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে জমি জটিলতার জন্য ৪০টি সীমান্ত চৌকি বা বর্ডার আউট পোস্ট (বিওপি) তৈরির কাজ থমকে গিয়েছে। সমস্যা মেটাতে কৃষকদের থেকে সরাসরি জমি কেনার অনুমতি চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে বিএসএফ। শুক্রবার সকালে শালুগাড়ায় বিএসএফের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা জানান উত্তরবঙ্গের আইজি কমল কেশোয়ানি। তিনি বলেন, “আমাদের জমি পেতে অনেক দেরি হচ্ছে। প্রথমে ডিএমকে জানাতে হয়। সেখান থেকে রাজ্য সরকারকে বলা হয়। রাজ্য সরকারের অনুমতি মিলতে সময় লাগে। তার পরে জেলা প্রশাসন সেই জমি কিনতে নামে। দাম নিয়ে সমস্যা হয়। জমি কিনতে অন্তত ২ বছর গড়িয়ে যায়। সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে যাতে জমি কেনা যায় সে জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে।” সরাসরি জমি কেনার অনুমতি দেওয়া নিয়ে প্রসাসনের অফিসাররা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক পাশাং নরবু ভুটিয়া বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনে বিএসএফকে জমি দিতে একটু সময় তো লাগেই। আমাদের জেলায় কিছু সরকারি জমি বিএসএফকে দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি মালিকানায় থাকা কিছু জমি তাদের দেওয়ার জন্য পদ্ধতি শুরু করা হয়েছে।”
শালুগাড়ায় বিএসএফ ট্রেনিং ক্যাম্পে পদক দিচ্ছেন বিএসএফের
আইজি কমল কেশোয়ানি। নিজস্ব চিত্র।
দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনও জানান, বিএসএফ যাতে তাড়াতাড়ি জমি পায় সে জন্য তাঁরা সবসময়ই উদ্যোগী হন। তিনি বলেন, “বিএসএফের তরফে যে সমস্ত জমি চেয়ে আমাদের কাছে আবেদন করা হয়েছে, তা দ্রুত পেতে সাহায্য করার চেষ্টা হয়ে থাকে।” বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে প্রতি তিন কিলোমিটার অন্তর একটি করে বিওপি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের অধীনে ১৪১ বিওপি রয়েছে। প্রায় ৬০০ কিলোমিটারের ওই সীমান্তে স্বাভাবিক নজরদারি করার জন্য আরও ৬৪টি বিওপি প্রয়োজন। সেই বিওপি তৈরি করার জন্য কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করছেন বিএসএফ কর্তৃপক্ষ। আইজি জানান, সীমান্তে বিওপি করার জন্য দেড় থেকে দুই একর জমির প্রয়োজন হয়। জমি পেতে দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া চললে দামও বেড়ে যায়। উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের নজরদারিতে থাকা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ৪১১ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। বাকি ১৮৯ কিলোমিটার সীমান্তে এখনও বেড়া দেওয়ার কাজ শেষ হয়নি। এর মধ্যে ৭৪ কিলোমিটার নদী সীমান্ত রয়েছে। এই ৬০০ কিলোমিটারের কিছু বেশি এলাকা পাহারা দেওয়ার জন্য ১৪১টি বিওপি তৈরি করা হয়েছে। সেখান থেকে বিএসএফ জওয়ানরা সীমান্তে সাইকেল, মোটর সাইকেল এবং জিপসির মাধ্যমে নজরদারি চালায়। তার মধ্যেই চোরাকারবারিরা সক্রিয় বলে বিএসএফও স্বীকার করেছে। ২০১০ সালেই ৮ কোটি টাকার গরু, ফেন্সিডিল, হেরোইন, গাঁজা বাজেয়াপ্ত করে বিএসএফ। সীমান্ত টপকানোর চেষ্টার অভিযোগে ১৫৯ জন ভারতীয় এবং ১৪২ জন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। বিএসএফের এক কর্তা বলেন, “সমস্ত বিওপি তৈরি হলে সীমান্তে চোরাকারবার আরও নিয়ন্ত্রণে আসবে। এ জন্যই জমি সমস্যা মেটানো প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে সে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।” পাশাপশি আইজি বলেন, “সীমান্তে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কে এখন অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে মাঝে মধ্যেই ফ্ল্যাগ মিটিং হচ্ছে। গণ্ডগোল অনেক কমে গিয়েছে।” এদিন শালুগাড়া প্রশিক্ষণ শিবিরে ১৫৪ ও ১১৫ নম্বর ব্যাচের প্রশিক্ষণ শেষ হওয়া উপলক্ষ্যে প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আইজি উপস্থিত ছিলেন। সেখানে কয়েকজন জওয়ানকে সোনার পদক দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। পরে আইজি জানান, শালুগাড়ার প্রশিক্ষণ শিবিরে নতুন বছরে মহিলা বিএসএফ জওয়ানদের ট্রেনিং দেওয়ার কাজ শুরু হবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে বিভিন্ন পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.