পুস্তক পরিচয় ২...
আসক্তিহীনতাই পরম বৈভব
খনও কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বেঁচে, ১৯৯৮। মোহর প্রকাশিত হওয়ার পর তাঁর হাতে তুলেও দেওয়া হয়েছিল। বারো বছর পর ২০১১-য় পরিবর্ধিত পরিমার্জিত হয়ে প্রায় নতুন ভাবেই বেরল বইটি (সম্পা: সুমিতা সামন্ত। সপ্তর্ষি, ৩৫০.০০)। কাঞ্চন দাশগুপ্তের প্রচ্ছদ সংবলিত এ-বইয়ে পরিতোষ সেন শ্যামল দত্তরায় যোগেন চৌধুরী প্রমুখের আঁকা কণিকার ছবি। তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনপঞ্জি তো বটেই, রবীন্দ্রসংগীতের রেকর্ড ক্যাসেট সিডি এমপিথ্রি-র তালিকা, তাঁরই অ্যালবাম থেকে নেওয়া স্মৃতি-ওস্কানো বেশ কিছু ছবি, সর্বোপরি তাঁকে নিয়ে তৈরি গৌতম ঘোষের ছবির চিত্রনাট্য ঋদ্ধ করেছে বইটিকে। আর আছে বিশিষ্ট বাঙালিদের লেখা স্মৃতিকথা, মূল্যায়ন। তাতে পনেরো বছর আগে লেখা বিজয়া রায়ের রচনাটিতে আছে: ‘মোহরের কণ্ঠস্বরে যেন জাদু ছিল। এবং এখনও আছে।’ আর শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন ‘কণিকার গান আমাদের প্রথম যৌবনকে স্মৃতির মধ্যে ভরে তোলবার গান।’

‘রবীন্দ্রনাথের সঙ্গীত-সাগর-সৈকতে সদ্যকৈশোরোত্তীর্ণ আমি একদিন যাঁর বলিষ্ঠ হাত ধরে এসে দাঁড়াতে সাহস করেছিলাম, সেই পরমপূজ্যপাদ শিক্ষক দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছেও তো এই শিক্ষাই পেয়েছিলাম। কবিগুরুর সকল গানের ভাণ্ডারী ও সকল সুরের কাণ্ডারীর জীবনচর্যাতেও তো এই শিক্ষাই ছিল যে আসক্তিহীনতাই শিল্পীজীবনের পরম বৈভব।’ ১৯৭৮-এ পঙ্কজকুমার মল্লিকের এই স্বীকারোক্তি পাওয়া যাবে রাজীব গুপ্তের বেতার ও চলচ্চিত্রের জগতে/ প্রবাদপ্রতিম সঙ্গীত সাধক/ পঙ্কজ কুমার মল্লিক (পঙ্কজ মল্লিক মিউজিক অ্যান্ড আর্ট ফাউন্ডেশন, ২৯৫.০০) বইটিতে। চারটি ভাগে লেখক সাজিয়েছেন শিল্পীর গোটা জীবনকে ‘গোড়ার কথা’, ‘বেতার তরঙ্গে পঙ্কজ কুমার মল্লিক (১৯২৭-১৯৭৫)’, ‘ছায়াছবির নেপথ্যের পথ-প্রদর্শক পঙ্কজ মল্লিক (১৯৩১-১৯৬৮)’, ‘শেষের দিনগুলো’। রয়েছে শিল্পীর কর্মময় জীবনের নানা দুর্লভ ছবি তাতে বিবিধের সঙ্গে ঠাঁই পেয়েছে সেই সব চলচ্চিত্রের প্রচার পুস্তিকা যাতে তিনি গান গেয়েছেন, সংগীত পরিচালনা বা অভিনয় করেছেন। রয়েছে বংশলতিকাও। নিবেদন-এ লেখক জানিয়েছেন যে, তিনি চেষ্টা করেছেন শিল্পীর ‘বহুমুখী প্রতিভাগুলোর ওপর যতটা আলোকপাত করা সম্ভব, তাই করতে’, এবং ‘বর্তমান প্রজন্মকে এই অসাধারণ শিল্পীর বিষয়ে সচেতন করে তুলতে।’

‘সলিলদার পাঁচশোর কাছাকাছি বাংলা গানের সন্ধান পাওয়া গেছে, কিছু গান এখনো উদ্ধার করা হয়নি। এই বইটিতে স্বাধীনতার ঠিক আগে কি পরে রচিত সলিলদার বেশ কিছু গণসংগীত নিয়ে আলোচনা হবে।... সলিল চৌধুরীর গণসংগীত নিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছিল ১৯৯৩ সালে।... গণসংগীত সংগ্রহের কাজ প্রায় সম্পূর্ণ বলে গণসংগীত-বিষয়ক বইটি আগে প্রকাশিত হল।’ ভূমিকায় জানিয়েছেন সমীরকুমার গুপ্ত। তাঁরই রচিত সলিল চৌধুরী/ প্রথম জীবন ও গণসংগীত (মিলেমিশে, ৪০০.০০) বইটি প্রকাশ পেয়েছে। সলিলের সাহিত্য-সংক্রান্ত বইটি প্রকাশ পাবে এর পরেই। মূল্যবান এ-বইতে সলিলের গণসংগীত নিয়ে আলোচনার সঙ্গে রয়েছে তাঁর ছেলেবেলা ও ছাত্রজীবন, রাজনৈতিক জীবন, ব্যক্তিগত পারিবারিক জীবনের আলোচনাও। রয়েছে সুকান্তের গান ও আধুনিক গানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা। গণসংগীতগুলির সংকলনের সঙ্গে আছে কৃষক আন্দোলনের গান, দেশমুক্তির গান, বন্দিমুক্তির গান, সাম্যবাদের গান, ছাত্র আন্দোলনের গান, ভ্রাতৃঘাতী দাঙ্গাবিরোধী গান, ব্যঙ্গ গান, শান্তি আন্দোলনের গান, বাংলাদেশ মুক্তির গান ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা। পারিবারিক জীবনের সঙ্গে কর্মময় জীবনের বহু দুষ্প্রাপ্য ছবি রয়েছে সারা বইটি জুড়ে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.