সম্প্রতি মাসিক সাহিত্যবাসরের হয়ে গেল বিষ্ণুপুর মহকুমা গ্রন্থাগার সভাগৃহে। ওই গ্রন্থাগার ছাড়াও স্থানীয় একটি সাহিত্য সংগঠন এর আয়োজক ছিল। সাহিত্যবাসরে এবার স্মরণ করা হয় প্রয়াত সাহিত্যিক শৈবাল মিত্র ও নাট্যকার বাদল সরকারকে। ছিল কবিতা নিয়ে মনোজ্ঞ আলোচনা ও কবিতাপাঠ। অংশ নিলেন হরিপ্রসন্ন মিশ্র, অঞ্জন বন্দোপাধ্যায়, তুলসীদাস মাইতি, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ এলাকার কবি ও লেখকেরা।
|
পুরুলিয়ার জয়পুরের পাথরবাড়ি মঞ্চে ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হল ‘মাটির জন্য’ নাটক। প্রযোজনায় গড়জয়পুর সপ্তর্ষি। নাট্য সংস্থার পক্ষে সনৎ দাস জানান, রবীন্দ্রনাথের জন্ম সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে দুই বিঘা জমি অবলম্বনে এই নাটকটি চলতি বছরের যুব উৎসবে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। ওই দিনই নাট্যকার গৌতম দশন্দি আরও দু’টি নাটক ‘আলোর পথযাত্রী’ ও ‘শুরু করেছি’ অনুষ্ঠিত হয়।
|
রামপুরহাটের ‘প্রবাহ নাট্যম’ সংস্থার ৩৪ বছর পূর্তিতে গত ২৪-২৫ ডিসেম্বর স্থানীয় রক্তকরবী পুর মঞ্চে আয়োজিত নাট্যমেলায় ৩টি নাটক মঞ্চস্থ হল। প্রথমদিন স্থানীয় রঙ্গম প্রযোজিত মোহিত চট্টোপাধ্যায় রচিত ও অমলেশ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশিত ‘দর্পণ’ ও আয়োজক সংস্থা প্রযোজিত প্রিয়ব্রত প্রামাণিক নিদের্শিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বৈকুন্ঠের খাতা’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। পরের দিন কলকাতার মিউনাস নাট্য সংস্থার ‘লজ্জা’ নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। দশর্কদের প্রভূত সুনাম পেয়েছে নাটকগুলি। নাট্যমেলায় নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার পরেই দর্শক ও নাট্য সংস্থার নির্দেশক, কুশীলবদের মুখোমুখি আলোচনায় বসিয়েছিল আয়োজক সংস্থা। সেখান দর্শকেরা ‘দর্পণ’ নাটকের সাবলীল অভিনয়ের প্রশংসা করেন এবং আলোর ব্যবহার সম্পর্কে আরও যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেন। অন্যদিকে ‘বৈকুন্ঠের খাতা’ নাটকটির পুননির্মান নিয়ে নির্দেশককে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তাঁরা। মূল নাটকে কোন গান ব্যবহার করেননি রবীন্দ্রনাথ। কিন্তু নির্দেশক দু’টি রবীন্দ্রসঙ্গীত ব্যবহার করেছেন নেপথ্যে আবহসঙ্গীত হিসেবে। মহিলা কন্ঠে গাওয়া ‘রূপসাগরে ডুব দিয়েছি’ গানটির প্রয়োগ যথাযথ হলেও একটু নীচু স্বরে গাওয়া হলে এবং ‘সখী আঁধারে একেলা’ গানটি যন্ত্রসঙ্গীতের সাথে গাওয়া হলে ভালো হত বলে দর্শকদের অভিমত। দর্শকেরা প্রকাশ্যেই বলেন, ‘‘বৈকুন্ঠের বয়স ৭০ বছর কিন্তু তার দাপাদাপি ২৬ বছরের যুবকের মতো। পরচুলা ব্যবহারও বেমানান লেগেছে।’’ নির্দেশকেরা দর্শকদের জানান পরবর্তীতে ত্রুটিগুলি সংশোধন করা হবে।
|
নাসিরুদ্দিন মোল্লা নাটকের একটি দৃশ্য। |
সিউড়ির ‘আত্মজ’ নাট্যসংস্থা প্রতিমাসের উৎসব শুরু করেছে গত মে মাস থেকে। অষ্টম প্রযোজনায় আত্মজ গত ২৫ ডিসেম্বর স্থানীয় রবীন্দ্রসদনে মঞ্চস্থ করল ‘নাসিরুদ্দিন মোল্লা’ নাটকটি। ওই নাটকের দলগত অভিনয় ভালো হলেও নাটকটির আঙ্গিকে প্রত্যাশাপূরণ হয়নি বলে মত দর্শকদের। ১ ঘন্টার নাটকে কোরাসে সূত্রধরের নাচগান প্রায় ৪০ মিনিট ছিল। মূল চরিত্র নাসিরুদ্দিন মোল্লার সংলাপও গোনাগুনতি। যেহেতু নাটকটি নাসিরুদ্দিনের জীবন নির্ভর এবং রচয়িতা ছড়াকার ও কৌতুক অভিনেতা অতনু বর্মন, সেখানে দর্শকদের প্রত্যাশা ছিল অন্যরকম। নাট্যকার, নির্দেশক ও নামভূমিকায় অভিনেতা মুকুল সিদ্দিকী নাটকটির গতানুগতিক আঙ্গিকের বাইরে একটু ভাবলে ভালো হত বলে দর্শকরা জানিয়েছেন।
|
রামপুরহাটে নুপুর বন্দনার অনুষ্ঠান। |
সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখায় প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান প্রথমে শুরু হয়েছিল জেলার ১৯ টি ব্লক ও ৬টি পুরসভায়। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে প্রথম স্থান পাওয়া প্রতিযোগী ও প্রতিযোগী দলের জেলা পর্যায়ে প্রতিযোগিতা হল সিউড়িতে গত ২৭-২৮ ডিসেম্বর। গান, নাচ, আবৃত্তি, ক্যুইজ ইত্যাদি বিষয়ে প্রতিযোগীরা অংশ নিলেও নাটকের দল ছিল খুব কম। কোথাও কোথাও নাটকদলের অভাবে নাটকের প্রতিযোগিতা করা যায়নি। একটিমাত্র দল নাটক করার আবেদন করলে সেই দলকেই পুরসভাগত ভাবে জেলা ছাত্র-যুব উৎসবে অংশ নিতে দেওয়া হয়। ফলে ৯টি নাটক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। প্রথম স্থান দখল করে লাভপুরের বীরভুম সংস্কৃতি বাহিনীর তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়ের কাহিনী অবলম্বনে উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় রচিত ও নির্দেশিত ‘নাগিনী কন্যার কাহিনী’ নাটকটি। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হয়েছেন নাগিনীর ভূমিকায় অন্বেষা ঘোষ। ওই নাটকটি রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। অন্য দিকে রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের খরুন গ্রামের রামকৃষ্ণ সঙ্গীত চর্চা সংস্থা গণসঙ্গীত, দেশাত্মবোধ ও লোকসঙ্গীতে সমবেতসঙ্গীতে প্রথম হয়েছে। ওই সংস্থাও রাজ্যস্তরে অংশগ্রহণ করবে। তবে দু’দিনের অনুষ্ঠানে চরম অব্যবস্থায় অংশগ্রহণকারীরা বিরক্ত হয়েছেন।
|
কীর্ণাহারের তরুণ সমিতির ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে গত ২৫ ডিসেম্বর শুরু হয়েছে সংস্কৃতি উৎসব। শেষ হবে আজ শনিবার। উৎসবে ভাদু, বোলান, বাউল, রাইবেশে, ছৌনাচ প্রভৃতি লোক সংস্কৃতি ছাড়াও নাটক, যাত্রা এবং বহিরাগত শিল্পীদের নানা অনুষ্ঠান রয়েছে।
|
• সিউড়ির ‘থিয়েটার অভিযান’ নাট্যসংস্থার ৪৩ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে গত ২৮ ডিসেম্বর স্থানীয় রবীন্দ্রসদনে ৩টি ছোট নাটক মঞ্চস্থ হয়। ওই দিন সংস্থার প্রয়াত ৪ জন বিশিষ্ট মানুষের নামে ৪ সংস্কৃতি কর্মীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
• জেলার সর্বাধিক প্রচারিত সিউড়ি থেকে প্রকাশিত সংবাদ সাপ্তাহিক ‘নয়া প্রজন্ম’ ২০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান করছে রবিবার থেকে সবুজের অভিযান প্রাঙ্গনে। জেলার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশিষ্ট ২১ জনকে সংবর্ধনাও জানানো হবে।
• গত ২২ ডিসেম্বর স্থানীয় রক্তকরবী পুরমঞ্চে রামপুরহাটের ‘নুপূর-বন্দনা’ সাংস্কৃতিক সংস্থার সমবেত তবলা লহরা ও গীটার বাদন অনুষ্ঠান দর্শকদের মন জয় করে। |