সাত মাস পর ধরা পড়ল ভুল। আর তাই তড়িঘড়ি সেই ভুল শুধরে নিয়ে সুতি-২ ব্লকের জগতাই-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পদে ফের নিযুক্ত হলেন কংগ্রেসের সাধনা সিংহ। পঞ্চায়েত আইনের সংশোধনের কথা ঠিক ভাবে না জানার কারণেই যে এই ঘটনা ঘটেছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন বিডিও সুকুমার বৈদ্য।
জগতাই-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩ সদস্যের মধ্যে কংগ্রেসের ৬ জন ও বামফ্রন্টের ৬ জন। ১ জন বিজেপির। ২০০৮ সালে বিজেপির সমর্থনে বোর্ড গড়ে কংগ্রেস। তফসিলি সংরক্ষিত পদে প্রধান হন কংগ্রেসের সাধনা সিংহ। উপ-প্রধান হন বিজেপির দীপক দাস। গত ১১ এপ্রিল সাধনাদেবীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে বামফ্রন্টের ৬ সদস্য। তাকে সমর্থন করেন বিজেপির উপ-প্রধান দীপক দাসও। তখন অপসারিত হন সাধনা দেবী। এরপরই দেখা যায় বিপত্তি। কেননা, প্রধান পদটি তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত এবং এই পঞ্চায়েতে পদটির একমাত্র দাবিদার সাধনাদেবীই।
নয়া প্রধান নির্বাচনে ২ জুন ফের সাধনাদেবীর নাম প্রস্তাব করে কংগ্রেস। কিন্তু বিডিও সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেন এই বলে যে, অপসারিত প্রধান পুনরায় একবছরের মধ্যে প্রার্থী হতে পারবেন না। ফলে সংরক্ষিত পদের একমাত্র সদস্য হয়েও প্রধান পদটি শূন্য থাকে। উপ-প্রধানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে কাজ চালাতে নির্দেশ দেন বিডিও। দীর্ঘ ৭ মাস ধরে সেই ভাবেই চলছে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম। হঠাৎই পঞ্চায়েতের আইনপত্র খতিয়ে দেখতে গিয়ে বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় এক কংগ্রেস নেতা ও পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি আলফাজুদ্দিন বিশ্বাসের। আলফাজুদ্দিন বলেন, “পূর্বেকার পঞ্চায়েত আইন প্রায় দেড় বছর আগে সংশোধন হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে অপসারিত হলেও প্রধান পদে পরবর্তীতে সেই ব্যক্তিরই আবার প্রার্থী হতে কোনও বাধা নেই। আর এই আইনের ব্যাখ্যায় বিডিও তাঁর ভুল বুঝতে পেরে শুক্রবারই সাধনা দেবীকে পুনরায় ওই পঞ্চায়েতের প্রধান পদে নিযুক্ত করেন।” বিডিও সুকুমার বৈদ্য বলেন,“পঞ্চায়েত প্রধান পদে অপসারিত কোন ব্যক্তি পরবর্তীতে এক বছর আর প্রার্থী হতে পারবেন না--আগে আইনে এটাই বলা ছিল। তাই সাধনাদেবীকে দ্বিতীয়বার প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হয় এবং প্রধান পদে তার নাম প্রস্তাবিত হলেও নাকচ হয়ে যায়। কিন্তু এ আইন যে সংশোধিত হয়েছে আমার তা জানা ছিল না। নতুন আইনে পুনর্বার প্রার্থী হতে কোনও বাধা নেই। তাছাড়া তফসিলি জাতির একমাত্র সদস্য তিনি। সে ক্ষেত্রে তার নাম প্রস্তাবিত হলে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রধান হবেন। এটা জানা ছিল না বলেই এই ভুল হয়েছিল। উপ-প্রধানকে বলা হয়েছে নয়া প্রধানকে পঞ্চায়েতের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে।’’
উপ-প্রধান দীপক দাস বলেন, “পঞ্চায়েতের সংশোধিত আইনে বিডিও নতুন প্রধান হিসেবে যাকেই নিয়োগ করবেন তাকে মানতে হবে। তবে লিখিত চিঠি এখনও হাতে আসেনি পঞ্চায়েতের।” |