মাদক বিরোধী অভিযানে গ্রামবাসীরাই
র মাদক বিক্রি তো নয়ই, বরং এখন থেকে মাদক-বিরোধী অভিযানে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।
দুই মাদক-ব্যবসায়ীকে বেঁধে রেখে এমনই বিধান দিলেন এগরা-২ ব্লকের বাসুদেবপুর পঞ্চায়েত এলাকার শ্যামহরিবাড় গ্রামের মানুষ।
শুক্রবার সকালে মাদক-বিরোধী অভিযানে নেমে পুলিন দাস ও দেবদুলাল দাস নামে দুই মদ ব্যবসায়ীকে ধরেন গ্রামবাসীরা। হাত-পা বেঁধে দিনভর বাগুলি হাটে বসিয়ে রাখা হয় তাঁদের। বিকেলে স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যের উপস্থিতিতে তাঁদের নিয়ে সভা করেন গ্রামবাসীরা। সেখানে নিজেদের ভুল স্বীকার করেন ওই দুই ব্যবসায়ী। তাঁদের আর্থিক জরিমানা করার পাশাপাশি মাদক-বিরোধী অভিযানে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গ্রামবাসীদের বক্তব্য, “এ ব্যাপারে পুলিশ-প্রশাসন, আবগারি দফতর, সরকার কারও উপর আমাদের ভরসা নেই। তাই নিজেরাই পথে নেমেছি।”
মাদক ব্যবসায়ীকে বেধে বিধান। ছবি তুলেছেন কৌশিক মিশ্র।
গ্রামবাসীরা জানান, গত কয়েকদিন ধরে এলাকায় নানা ভাবে নেশাবিরোধী অভিযান চালানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন করা হয়েছে। মদ-গাঁজা ও অন্য নেশাদ্রব্যের ব্যবহার বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিভিন্ন জায়গায় গোপনে আবার অনেক সময় প্রকাশ্যেই চলছিল মাদক বিক্রি। তা বন্ধ করতেই এই উদ্যোগ। মহকুমাশাসক রত্নেশ্বর রায় বলেন, “বেআইনি ভাবে মাদক-ব্যবসা বন্ধে গ্রামবাসীরা উদ্যোগী হলে তা তো ভাল কথা। গ্রামবাসীরা সচেতন হলে প্রশাসনের কাজ সহজ হয়। কিন্তু বেআইনি কাজ বন্ধ করতে গিয়ে গ্রামবাসীরা যেন আইন নিজের হাতে না নিয়ে নেন, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। গোটা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
শ্যামহরিবাড় গ্রামে রয়েছে একটি হাইস্কুল, দু’টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশু শিক্ষাকেন্দ্র, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বাজার। মাঝেমধ্যে বসে হাট। আর সেই হাটকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে চলে চোলাই-গাঁজার ব্যবসা। শ্যামহরিবাড় ছাড়া আশপাশের মানিকপুর, চিরুলিয়া, খাগদা, বেতা গ্রাম থেকে ভিড় জমান যুবকেরা। স্থানীয় বাসিন্দা বিমাকর্মী সুজয় দাস, শিক্ষক প্রণব দাস, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য শোভা চৌধুরীরা বলেন, “ওই সময়ে এলাকায় রমরমিয়ে চলে মাদকের কারবার। বিঘ্নিত হয় এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা। দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যে এলাকার মহিলা ও ছাত্রীরা রাস্তায় বেরোতে ভয় পান। সম্প্রতি বিষমদ কাণ্ডে এত মানুষের মৃত্যুর পর গ্রামবাসীরাই সচেতনতা গড়তে নানা ভাবে চেষ্টা করতে থাকেন।”
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সুমিতা সাউ, স্থানীয় সত্যসেবক সংঘের সম্পাদক গুরুপদ দাস বলেন, “এলাকার মহিলাদের একাংশ আমাদের কাছে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই মতো এলাকায় প্রচার চালানো হয়। ছোট ছোট সভা করা হয়। ব্যবসায়ী, স্থানীয় বাসিন্দাদের এর ক্ষতিকর দিকগুলি সম্পর্কে বুঝিয়ে বলা হয়েছিল।” প্রচারে এগিয়ে আসেন ছাত্রছাত্রী, ব্যবসায়ী, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা, শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কিন্তু কিছুদিন নিয়ন্ত্রণে থাকার পর ফের গোপনে চোলাই-গাঁজা বিক্রি শুরু হয়। মাদকের ব্যবহার বন্ধ করতে গ্রামবাসীদের একাংশ গত কয়েকদিন ধরে এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের উপর নজর রেখেছিলেন। সে ভাবেই এ দিন নামে ওই দুই ব্যবসায়ীকে ধরে আটকে রাখে গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, “এলাকায় মাদক ব্যবসা বন্ধ করতে হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন হতে হবে। এ ব্যাপারে নিজেদের সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। এ জন্য পুলিশ-প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে থাকার প্রয়োজন নেই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.