জে সি মুখোপাধ্যায় ট্রফির কালীঘাট বনাম স্পোর্টিং ইউনিয়ন ম্যাচকে ঘিরে অভুতপূর্ব সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল সিএবি। ম্যাচ পুরো খেলা হল না। স্পোর্টিং শিবির থেকে অভিযোগ উঠল কালীঘাট আম্পায়ারের উপর ‘প্রভাব’ খাটিয়ে ম্যাচ বন্ধ করায় অবাঞ্ছিত উদ্যোগ নিয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে সিএবি শুক্রবারই জানিয়ে দিল ম্যাচ জিতেছে স্পোর্টিং ইউনিয়ন। কালীঘাট নয়।
ঘটনার সূত্রপাত, এ দিন সকালে। দেশবন্ধু পার্কে জে সি কোয়ার্টার ফাইনালে। যেখানে মুখোমুখি হয়েছিল কালীঘাট এবং স্পোর্টিং ইউনিয়ন। অভিযোগ উঠছে, ম্যাচ সাত ওভার গড়াতে না গড়াতেই কালীঘাট ক্রিকেটাররা গিয়ে আম্পায়ারকে জানিয়ে দেন, পিচ খেলার অযোগ্য। বল দুমদাম লাফাচ্ছে। যে কোনও মুহূর্তে চোট লাগার সম্ভাবনা। ওই সময় ম্যাচ পড়েছিল সবে অষ্টম ওভারে। কালীঘাট ১৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে। আম্পায়ররাও তখন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন যে এমন খারাপ পিচে খেলা হবে না। ম্যাচ পরিত্যক্ত।
যা নিয়ে তুমুল বিতর্ক বেঁধে যায়। স্পোর্টিং শিবির থেকে বলা হতে থাকে, আম্পায়ারের উপর জোর করে প্রভাব খাটিয়ে ম্যাচ বন্ধ করা হয়েছে। তুলে আনা হয় ময়দানের বড় ক্লাব বনাম ছোট ক্লাব দ্বন্দ্ব। অবস্থা সামাল দিতে বিকেলে তড়িঘড়ি বৈঠক ডাকেন সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া। যেখানে ম্যাচের দুই আম্পায়ার ছাড়াও ছিলেন টুর্নামেন্ট কমিটির সদস্যরা। আম্পায়ারদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, যদি পিচ খেলার অযোগ্য বলেই মনে হয়ে থাকে, তা হলে ম্যাচ শুরু করা হল কেন? আর কয়েকটা বল লাফাতে দেখেই কী ভাবে ধরে নেওয়া হল যে পিচ ‘আন্ডারপ্রিপেয়ার্ড’? মৌখিক উত্তর সন্তোষজনক মনে না হওয়ায় লিখিত কৈফিয়ত দিতে বলা হয় দুই আম্পায়ার আনন্দ দাস এবং প্রশান্ত ঘোষকে। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। বৈঠকে স্পোর্টিং কর্তাদের সঙ্গেও তর্কাতর্কি লেগে যায় আম্পায়ারদের। ডেকে পাঠানো হয় পিচ প্রস্তুতকারক প্রবীর মুখোপাধ্যায়কেও। তিনি জানান, পিচ যখন আম্পায়ারকে দেওয়া হয় তখন সেটা ঠিকই ছিল। তা ছাড়া ১৪টি ম্যাচ হয়েছে এই পিচে।
এর পরই ঠিক হয়, ম্যাচ দিয়ে দেওয়া হবে স্পোর্টিংকে। স্পোর্টিংয়ের সায় ছিল না বলে রিপ্লে সম্ভব ছিল না। সিএবির যুগ্ম-সচিব সুজন মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, “ম্যাচ স্পোর্টিংকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।” ম্যাচের দুই আম্পায়ারও কড়া শাস্তির মুখে পড়তে চলেছেন। কিন্তু এমন নজিরবিহীন সিদ্ধান্তের পরও যে বিতর্ক পুরো মিটেছে এমন নয়। কালীঘাট থেকে ক্ষোভের বিস্ফোরণ রাতেও চলেছে। সচিব বাবলু কোলে যেমন বললেন, “এই প্রথম দেখলাম কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে সিএবি ক্লাবকে জানাচ্ছে। একটা সিদ্ধান্ত নিতে গেলে দুই ক্যাপ্টেন, কোচের তো থাকা দরকার। সেটা হল কোথায়? আর কখনও শুনিনি একটা পরিত্যক্ত ম্যাচ কাউকে জিতিয়ে দেওয়া যায়।” কালীঘাট শিবির থেকে বলা হচ্ছে, শ্রীবৎস গোস্বামীর হাতে বল আছড়ে পড়েছে। একজন কোনও রকমে নিজের মাথা বাঁচিয়েছেন। টি-টোয়েন্টির পিচই এটা নয়। যা শুনে রাতেও পাল্টা খোঁচা দিচ্ছে স্পোর্টিং শিবির। কোচ মুকুল দাস যেমন বলেই দিলেন, “পিচ যদি এতই খারাপ হবে তা হলে মনোজ তিওয়ারি টস জিতে ব্যাটিং নিল কেন? আমাদেরও তো পাঠাতে পারত!” |