আজ, শনিবার থেকে তিস্তা ব্যারেজ থেকে করলা নদীতে জল ছাড়া শুরু হবে। বিষকাণ্ডের পরে করলা নদীর জল পরিশোধনের জন্যই তিস্তা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত। রাজগঞ্জের মান্তাদরি এলাকার তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানেলের ২ নম্বর শাখা খাল থেকে ফিডার ক্যানেলের মাধ্যমে ব্যারেজের করলা নদীতে ফেলা হবে। শনিবার ও রবিবার দুদিনে মোট ৩৬০ কিউসেক করলা নদীতে ছাড়া হবে। করলায় জল ছাড়া হবে বলে আগাম সর্তকতা হিসেবে শহর জুড়ে ঘোষণা শুরু করেছে জলপাইগুড়ি পুরসভা। করলা নদী লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদেরও সর্তক করে দেওয়া হয়েছে। তিস্তা সেচ প্রকল্পের অধীক্ষক বাস্তুকার গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দু’দিন জল ছাড়ার পরে যদি প্রয়োজন হয় তবে আরও একদিন বাড়ানো হবে।” গত ২৮ নভেম্বর সকাল থেকে করলা নদীতে প্রচুর মৃত মাছ ভেসে ওঠে। পরবর্তীতে পরীক্ষায় জানা যায়, নিষিদ্ধ কীটনাশক এন্ডোসালফান প্রচুর পরিমাণে নদীর জলে মিশে যাওয়ার কারণেই মাছের মড়কের ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি করলায় বিষকাণ্ডের পরেই জলপাইগুড়িতে বৈঠক করে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিস্তা ব্যারেজ থেকে করলায় যাতে জল ছাড়া হয় তার জন্য উদ্যোগী হন। বৈঠক থেকেই মন্ত্রী রাজ্যের মুখ্যসচিব, সেচ দফতরের প্রধান সচিবের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে তিস্তা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত পাকা করে ফেলেন। আজ শনিবার জল ছাড়ার শুরুর দিনেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জলপাইগুড়ির সার্কিট হাউসে করলা নদী নিয়ে বৈঠক করবেন। বৈঠকে বিষকাণ্ডের পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বর্ষার তিন মাস বাদে বছরের বাকি সময়ে করলা নদীতে জলের খুবই প্রবাহ কম থাকে। জলের প্রবাহ না থাকার জন্যই গত নভেম্বর করলায় বেশি পরিমানে কীটনাশক মিশে গেলেও বিষাক্ত কীটনাশক নদীর জলে দ্রবীভূত হতে পারেনি। উল্টে জলপাইগুড়ি শহরের বুক চিরে ১০ কিলোমিটার এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া করলা নদীর সমস্ত অংশের জলই বিষাক্ত হয়ে যায়। তিস্তা ব্যারেজ থেকে অতিরিক্ত জল করলায় ফেললে নদীতে জলের প্রবাহ তৈরি হবে হবে এবং শুকিয়ে যাওয়া মোহনার অংশেও প্রবাহ তৈরি হয় নদীর জল তিস্তায় মিশে যেতে পারবে। এই প্রক্রিয়া নদীর জলে বিষ দ্রবীভূত হয়ে জল পরিশোধিত হবে বলে বিষেশজ্ঞরা মনে করছেন। বিষকাণ্ডের পরেও কয়েক দিন তিস্তা নদী থেকে পাম্পসেটের মাধ্যমে জল তুলে করলা নদীতে ফেলা হয়। তবে ব্যারেজ থেকে সরাসরি জল ছাড়লে তার প্রভাব আরও ভালো হবে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। |