ক’দিন আগেও পুলিশের চোখে এঁরা ছিলেন রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁরাই এখন আইনের রক্ষক। অসম পুলিশবাহিনীতে নেওয়া হল ২৩৫ জন প্রাক্তন ডিমাসা জঙ্গিকে। ১২০ জন দিলীপ নুনিসার অনুগামী, বাকিরা জুয়েল গার্লোসা গোষ্ঠীর। দুই ডিমাসা জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনার পর ডিমা হাসাও টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল যখন শুধু সময়ের অপেক্ষায়, তখন এই নিযুক্তিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে
ওয়াকিবহাল মহল।
রাজ্য পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্তা অবশ্য দাবি করেন, টেরিটোরিয়াল কাউন্সিলের সঙ্গে প্রাক্তন জঙ্গিদের পুলিশে এই চাকরি দেওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। তবে ব্যাপারটা শান্তি আলোচনারই অঙ্গ। গত বছর জঙ্গি সমস্যা সমাধানে সরকারের আন্তরিকতা বোঝানোর জন্য সংঘর্ষবিরতি মেনে চলা ডিমাসা জঙ্গিদের পুলিশে চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। এর পরই বিজ্ঞাপন বেরোয়। সে অনুসারে ইন্টারভিউ, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২৩৫ জন বাছাই হন। এর মধ্য দিয়ে সরকার অস্ত্র সমর্পণকারী ডিমাসা জঙ্গিদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করল বলেই ওই কর্তার দাবি।
ওই পুলিশকর্তা জানান, সদ্যনিযুক্তদের শুরুতে প্রশিক্ষণে পাঠানো হবে। প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর স্থির হবে, কে কোথায় চাকরি করবেন। দুই গোষ্ঠীর নেতারাই অবশ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে খুশি। সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ডিমাসা জনগোষ্ঠীর সাধারণ মানুষও। তাঁদের কাছে সবচেয়ে বেশি আনন্দের বিষয় হল, স্বাধীনতার পর এতজন ডিমাসা যুবককে একসঙ্গে কথনও নিয়োগ করা হয়নি পুলিশ বাহিনীতে।
জুয়েল গোষ্ঠী কাল নিযুক্তিপ্রাপ্তদের আনুষ্ঠানিক বিদায় সংবর্ধনা জানায়। সংগঠনের চেয়ারম্যান জুয়েল গার্লোসা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি ডিমাসাদের জন্য একটি পৃথক ব্যাটেলিয়ন স্থাপনের দাবি জানান। এই দাবি অবশ্য দিলীপ নুনিসাও অনেক দিন থেকে করে আসছেন। এর আগে বড়ো লিবারেশন টাইগার স্বাভাবিক জনজীবনে ফিরে এলে তাদের বহু ক্যাডারকে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীতে নিযুক্ত করা হয়েছিল।
অন্য দিকে টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিশেষ কোনও বিভেদ নেই। জুয়েল-নিরঞ্জনরা ডিমা হাসাওয়ের বর্তমান সীমাকেই প্রস্তাবিত কাউন্সিলের পরিধি বলে মেনে নিয়েছেন। নুনিসাদের দাবি, কাছাড় ও নগাঁওয়ের অংশবিশেষ এবং নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরকে ডিমা হাসাওয়ে যোগ করে কাউন্সিল গঠন করতে হবে। |