বিমান তৈরি। যাত্রীরাও তৈরি। কিন্তু বিমানটিকে পিছন দিকে টানতে গিয়ে দেখা গেল, প্রয়োজনীয় ‘টো-বার’ নেই। আটকে গেল বিমান। শুধু ওই টো-বারের অভাবে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আটকে থাকলেন ১৫৯ জন যাত্রী। কলকাতা বিমানবন্দরের দুরবস্থার ছবি প্রকট হয়ে গেল আরও এক বার।
‘টো-বার’ কী? দেখতে লম্বা লোহার বিমের মতো। পার্কিং বে থেকে টো-বারের সাহায্যে বিমানকে পিছন দিকে খানিকটা টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরেই ওড়ার জন্য বিমান মুখ ঘুরিয়ে গড়াতে গড়াতে চলে যায় রানওয়ের দিকে। নির্দিষ্ট বিমানের জন্য নির্দিষ্ট টো-বার প্রয়োজন। তবেই বিমানের পিছনে তা লাগানো সম্ভব। টো-বারের অন্য প্রান্ত ট্রাক্টরে লাগিয়ে বিমানকে পিছনের দিকে টেনে নিয়ে যেতে হয়।
শুক্রবার সকালে সেই টো-বারের অভাবে এয়ারবাস-৩৪০ বিমান নিয়ে কলকাতায় এসে সমস্যায় পড়েন তাই বিমান সংস্থার পাইলট। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ১৫৯ জন যাত্রীকেও আটকে থাকতে হয়। কারণ কলকাতা বিমানবন্দরে ওই বিমানের উপযুক্ত টো-বার ছিল না। কেন ছিল না? বিমানবন্দরের অধিকর্তা বি পি শর্মা বলেন, “এয়ারবাস-৩৪০ বিমানেরও রকমফের রয়েছে। তাই সংস্থার যে-বিমান এ দিন সকালে কলকাতায় আসে, সেটি ৫০০ সিরিজের এয়ারবাস-৩৪০। তাই বিমান কলকাতায় এলে সিঁড়ি, টো-বার এবং অন্যান্য উপকরণ সরবরাহ করার কথা এয়ার ইন্ডিয়ার। কিন্তু তাদের কাছে ৪০০ সিরিজ পর্যন্ত বিমানের টো-বার রয়েছে। সেই কারণেই এ দিন বিমানটি আটকে পড়ে।” এত বড় বিমান সাধারণত কলকাতায় নামে না বলেই তার উপকরণ বিমান সংস্থার কাছে ছিল না বলে জানান শর্মা। এয়ার ইন্ডিয়া অবশ্য টো-বারের অভাবের প্রসঙ্গ এড়িয়ে জানিয়েছে, দিল্লির আবহাওয়া খারাপ বলেই বিমানটি রাত পর্যন্ত কলকাতায় আটকে ছিল।
বিমানটি ব্যাঙ্কক থেকে দিল্লি যাচ্ছিল। কিন্তু সকাল থেকেই কুয়াশার দাপট চলছিল দিল্লিতে। তাই বিমানটি সেখানে নামতে না-পেরে কলকাতায় চলে আসে। যাত্রীদের নামিয়ে আনা হয়। কিছু পরে দিল্লির আকাশ পরিষ্কার হতেই যাত্রীদের আবার তুলে দেওয়া হয় বিমানে। তার পরেই বিপত্তি। বিমানের দরজা বন্ধ করে দেওয়ার পরে পিছন দিকে টানতে গিয়ে দেখা গেল, নির্দিষ্ট মানের টো-বার নেই। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, রাতেই ব্যাঙ্কক থেকে বিমানে চাপিয়ে টো-বার নিয়ে এসেছে তাই সংস্থা। সেই টো-বার দিয়ে বিমান টেনে নিয়ে যাওয়ার পরে বিমানটি ওড়ে। তত ক্ষণ যাত্রীদের রাখা হয়েছিল কলকাতার হোটেলে। |