বড়দিনের কেকের সঙ্গে জমে ওঠা সাহেবিয়ানা ধরে রাখা যাক না বছর শেষের দিনটা জুড়েই।
হুট করে পার্ক স্ট্রিট চত্বরে চলে গিয়ে বিলিতি প্রাতরাশের জন্য এটাই তো সবচেয়ে ভাল সময়। যাওয়া যায় কোনও এক বড়সড় কফি চেনেও। নানা স্বাদের কেক, কুকিজ, পাঁউরুটি, ব্রাউনি আর কলকাতার অল্পসল্প শীতে সক্কাল-সক্কাল জিভের সঙ্গে মনও হয়ে উঠতে পারে পাক্কা ইউরোপীয়।
কলকাতা শহরে শীত এখনও সযত্নে উপভোগ করার মতোই ক্ষণিকের অতিথি। তাপমাত্রাটা দু-এক দিন বিলেতের সঙ্গে পাল্লা দিলেও, বছর শেষে শীত এ বার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তবু যা কিছু বিলিতি, সবই যেন চেখে দেখার মেজাজ কয়েকটা দিনের জন্যই জাঁকিয়ে বসেছে শহরটায়। বিলিতি পোশাকে পায়ে হেঁটে রোদ পোয়াতে বেরিয়ে চেনা শহরটাকে আবারও ঘুরে দেখার সময়ে সঙ্গে চাই বিলিতি টুকিটাকি। তার জন্য এ বছরের কেক-বাজারে নতুন সংযোজন ‘উইঙ্কিজ লেয়ার কেক’। ডাচ ওয়েফারের ভাঁজে ভাঁজে চকোলেট বা অরেঞ্জ ক্যারামেলে শীতের সকাল হয়ে উঠতে পারে আরও খানিকটা সুস্বাদু। আর যদি পছন্দ হয় সাহেবি ও বাঙালিয়ানার ফিউশন, বেছে নেওয়া যায় ‘সুইসইয়াম কনসেপ্ট ফুড’। সেখানকার নলেন গুড়ের ম্যুস কেক, পেস্ট্রি, কুকিজেও জমতে পারে শীত-সকালের আড্ডা।
গল্পের বইয়ে পড়া কায়দার ‘লাঞ্চ’ই বা বাদ যায় কেন তবে!
শীত উদ্যাপনের দুপুরে এজেসি বসু রোডের মোকা-এ চেখে দেখা যায় চেরি রোস্টেড চিকেন বা বুরবোঁ হানি গ্লেজড্ চিকেন। সব শেষে জমকালো আইসিং দেওয়া প্লাম পুডিংয়ে আরও জমিয়ে তোলা যায় মরসুমি আমেজটা।
পশ্চিমি দেশগুলোয় এটা হাঁস আর টার্কির মরসুমও বটে। রোস্টেড টার্কি আর ওয়াইন-শ্যম্পেনে তাই সন্ধ্যা বা দুপুরে কোনও এক রেস্তোরাঁয় বসানো যায় শীতের আড্ডা। স্টার হোটেলের পাশাপাশি সেই স্বাদ নিতে চলে যাওয়া যায় সল্টলেকের জিলহান কিংবা কাফিলাতেও। |
তবে বর্ষবরণের হুল্লোড়ে এখনও পুরোপুরি সাহেবিয়ানা পছন্দ করে না কলকাতা। স্টার হোটেল থেকে বিভিন্ন ফুড চেন, সব জায়গাতেই তাই বছরের শেষ দিনটার বিশেষ আয়োজনে সাহেবিয়ানার ভাঁজে থাকছে দেশজ স্বাদের ছোঁয়াও।
হোটেল হিন্দুস্থান ইন্টারন্যাশনাল-এ বর্ষবরণের আয়োজনেও তাই জার্মানি, ইতালির মতো বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশের রেসিপির পাশাপাশি জায়গা করে নিচ্ছে লখনউয়ের নবাবি খানা। আবহেও থাকবে সেই মিশেল। আন্তর্জাতিক গান-বাজনার সঙ্গে মিলবে গজলের সুর। সেক্টর ফাইভের ইন্ডিস্মার্ট হোটেলেও যেমন টার্টার সসের সঙ্গে থাকছে মাছভাজা, প্লাম পুডিং ইন ব্র্যান্ডি সসের পাশেই থাকছে চিকেন রেশমি কাবাব আর নলেন গুড়ের সন্দেশ। নবাবি, পাঞ্জাবি, বাঙালি, বিলিতি রেসিপির মধ্যে থেকে বেছে নেওয়া যাবে পছন্দের স্বাদটা।
তাজ বেঙ্গল-এর বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় আবার মিলতে পারে মধ্য-প্রাচ্যের আমেজ। বছর শেষের রাতটায় মোরোক্কো, টার্কি, লেবাননের তুলনায় কম পরিচিত রেসিপি চেখে দেখার সুযোগ মিলবে সেখানে। সঙ্গে থাকবে দেশ-বিদেশের নানা স্বাদের ডেজার্ট। একটু অন্য পথে হাঁটতে চাইলে বেছে নেওয়া যায় কোনও রেস্তোরাঁর ছাদে বসে লাইভ গ্রিল, সি-ফুড বার্বেকিউ অথবা পুল পার্টিও। আর নতুন বছরকে যদি বরণ করতে হয় চেনা চিনা ছন্দে, সে ব্যবস্থা সব সময়েই আছে এ শহরে। মেনল্যান্ড চায়না-র সব ক’টি শাখায় বছর শেষের দিনটায় থাকছে বিশেষ আয়োজন। চিনা আবহে চিকেন সুইমাই, স্কুইডস্ ইন অলিভ বাটার সস্, ল্যাম্ব বল ইন পেপার গারলিক, কাংপাও চিকেন, রকমারি স্বাদের ডাম্পলিংয়ের পরে দারসান, ফ্রুট কাস্টার্ড, ম্যুস আর প্লাম কেকে বিদায় জানানো যাবে বছরটাকে। |