রুটি-সব্জি খেয়েই জেলে দিন গুজরান আমরি-অভিযুক্তদের
মেনু বলতে, শুকনো রুটি আর সব্জি। আর কিছু নয়! জেলের বিচারাধীন বন্দিদের সেলে সম্ভবত এই খেয়েই বর্ষবরণের রাতটুকু কাটবে আমরি-কাণ্ডের অভিযুক্তদের। গত এক সপ্তাহ ধরেই যাঁদের ঠিকানা, আলিপুর সেন্ট্রাল জেল। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, আলিপুর জেলের তিন নম্বর সেলের দোতলায় চারটে ঘর।
আমরি-কাণ্ডের অভিযুক্তদের মধ্যে শ্রাবণকুমার তোদি, রাধেশ্যাম গোয়েন্কা, প্রশান্ত গোয়েন্কা, মনীশ গোয়েন্কা, দয়ানন্দ অগ্রবাল ও রবি তোদি গত ২৩ ডিসেম্বর থেকেই আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে রয়েছেন। রাধেশ্যাম অগ্রবাল এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আরও দু’জন অভিযুক্ত সত্যব্রত উপাধ্যায় ও সঞ্জীব পালকে আদালতের নির্দেশের পরে ওই জেলে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা এসেছেন ২৬ ডিসেম্বর।
আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের ফটক পেরিয়ে ভিতরে ঢুকতেই বাঁ দিকে পরপর ‘সেল’। সেখানেই তিন নম্বর সেলের দু’তলায় এখন আমরি-কাণ্ডের বন্দিদের অবস্থান। মেঝেয় কম্বল বিছিয়ে শুতে হচ্ছে। এই শীতে গায়ে দেওয়ার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে আরও দু’টি করে কম্বল। মাঝে দু’দিন খুব ঠান্ডা পড়েছিল। সুতরাং শীতে ভালই ভুগতে হয়েছে। শ্রাবণকুমার, রাধেশ্যাম, দয়ানন্দ এবং সত্যব্রত উপাধ্যায়ের বয়স ষাটেরও বেশি। কারা দফতরের ডিআইজি (নিরাপত্তা এবং ওয়েলফেয়ার) হরিহর মণ্ডল জানান, বয়সের কথা বিবেচনা করেই ওই তিন বন্দির জন্য বাড়তি কম্বল বরাদ্দ করতে জেল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। বৃদ্ধ বন্দিদের অতিরিক্ত কম্বল দেওয়ার নিয়মও রয়েছে। সকালে সেলের ঝুল বারান্দায় দাঁড়িয়ে অভিযুক্তদের নিয়মিত রোদ পোয়াতে দেখা যাচ্ছে বলে জেলের এক অফিসার জানান। তবে জেলের হেঁসেলের ট্যালটেলে ডাল, সাদামাটা তরকারি-ভাত আমরি হাসপাতালের প্রবীণ ডিরেক্টর মুখে তুলতে পারছেন না মোটেই। জেল সূত্রের খবর, আলিপুর জেলের ক্যান্টিন থেকে কচুরি-তরকারি বা যা হোক ভাজাভুজি আনিয়ে নিচ্ছেন শ্রাবণকুমার। রাতে অবশ্য জেলের শুকনো রুটি-তরকারিই ভরসা। জেলের এক কর্তা বলেন, “জেলের রুটি কষ্ট করেই খাচ্ছেন ওঁরা। এমনিতে বন্দিদের জন্য বরাদ্দ ছ’টা করে রুটি। আমরি-অভিযুক্তেরা দু’টোর বেশি রুটি খাচ্ছেনই না প্রায়।” রাজ্যের কারামন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী অবশ্য বলেছেন, “আর পাঁচ জন বন্দিদের থেকে পৃথক ব্যবস্থা কারও জন্যই করা যাবে না। আদালতের নির্দেশ মানতে আমরা বাধ্য।” তবে বন্দিদের পরিচালিত ক্যান্টিনের খাবার কেউ পয়সা খরচ করে কিনে খেলে আপত্তির কিছু নেই বলে জানিয়েছেন কারামন্ত্রী। বছরের শেষ দিন ও নতুন বছরের প্রথম দিনটিতে অবশ্য আলিপুর জেলের ক্যান্টিনে বন্দিদের জন্য খাদ্য-উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। কেউ সাধ্য মতো যা খুশি কিনে খেতেই পারেন। বন্দিদের মধ্যে বিশেষ উৎসাহ, বিরিয়ানি রান্না হচ্ছে বলে। তবে আমরি-কাণ্ডের অভিযুক্তেরা প্রধানত শাকাহারী। তাই তাঁদের জন্য এটা তেমন ‘সুখবর’ নয়। তবে জেল সুপার চিত্তরঞ্জন ঘড়াইয়ের কথায়, “অভিযুক্তেরা জেলের নিয়মকানুনের সঙ্গে মানিয়ে চলারই চেষ্টা করছেন। ওঁদের ব্যবহার খুবই ভদ্র। এখনও পর্যন্ত ওঁদের নিয়ে কোনও সমস্যা নেই।” জেল সূত্রের খবর, নিয়ম মেনেই সপ্তাহে এক দিন অভিযুক্তদের বাড়ির লোকেরা আসছেন। তাঁরা ক্যান্টিনের খরচের টাকাটা জেল তহবিলে জমা দিয়ে যাচ্ছেন। শীতের পোশাক, শুকনো খাবারও নিয়ে আসছেন ওঁরা। বন্দিদের হাতে সে সব পৌঁছে দেওয়ায় আপত্তি নেই জেল কর্তৃপক্ষের।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.