হিমঘরে আলু রাখার সময়সীমা শেষ হচ্ছে আজ, শনিবার। কিন্তু বর্ধমান জেলার হিমঘরগুলিতে এখনও পড়ে রয়েছে প্রায় ২২ হাজার মেট্রিক টন আলু। অনেক চাষি ও ব্যবসায়ী এই আলু বের করে না নেওয়ায় তাঁরা বিপাকে পড়তে চলেছেন বলে জানিয়েছেন হিমঘর মালিকেরা।
সাধারণত হিমঘরে আলু মজুত রাখার মেয়াদ ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু তার পরে বিপুল পরিমাণ আলু হিমঘরগুলিতে জমে রয়েছে দেখে রাজ্য সরকার প্রথমে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত আলু রাখার নির্দশে দেয়। তার মধ্যেও হিমঘর থেকে আলু বের হওয়ার হার কম দেখে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই আলু হিমঘরে রাখতে ফের নির্দেশ দেয় সরকার। হিমঘর মালিকেরা জানান, বর্ধিত এই সময়ের জন্য শ্রমিকদের মজুরি প্রতি বস্তায় ১ টাকা ৭৫ পয়সা বাড়াতে হয়েছে। দিতে হয়েছে বর্ধিত বিদ্যুতের বিলও। কিন্তু এই বর্ধিত সময়ের বস্তা পিছু জন্য কত টাকা অতিরিক্ত ভাড়া মিলবে, তা এখনও তাঁদের জানা নেই বলে দাবি হিমঘর মালিকদের।
ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ড চেইন অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা নন্দন সেনগুপ্ত বলেন, “মাত্র ৬০-৭০ টাকায় এক বস্তা আলু বিক্রি হচ্ছে। যার মধ্যে মার্চ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ওই আলু হিমঘরে রাখার ভাড়াই ৫৪ টাকা। ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে যাঁরা বিভিন্ন হিমঘরে আলু রাখেন, তাঁরাও নিতে আসেননি। এ দিকে ১ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের জন্য বস্তা পিছু দু’টাকা ও পরে ৩১ ডিসেম্বরের জন্য বস্তা পিছু চার টাকা অতিরিক্ত ভাড়া হিমঘর মালিকদের দেওয়ার চেষ্টা হবে বলে জানিয়েছিল সরকার। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনও সরকারি নির্দেশনামা এখনও জারি করা হয়নি। কিন্তু ব্যাঙ্ক ঋণের বোঝা কী করে মালিকেরা বহন করবেন, তা নিয়ে কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি।”
বর্ধমান জেলা কৃষিজ বিপণন দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর প্রিয়দর্শী সেন জানান, হিমঘরে আলু রাখার মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্তই বহাল থাকবে। যে চাষিরা তার মধ্যে তুলবেন না, তাঁদের আলু হিমঘর মালিকেরা নিলাম ডেকে বিক্রি করতে পারেন। ৩১ ডিসেম্বরের পরে তাঁদের এই উপায়েই ভাড়ার টাকা আদায় করতে বলা হয়েছে।” হিমঘর মালিকদের অবশ্য দাবি, এলাকায় মাইকে করে হিমঘরে রাখা আলু ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তুলে নেওয়ার প্রচার চালালেও সাড়া মেলেনি। |