চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার দাবিতে আন্দোলনে নামল রায়গঞ্জ ব্লক কংগ্রেস কমিটি। বুধবার দুপুর ২টা থেকে সংগঠনের কয়েকশো কর্মী সমর্থক রায়গঞ্জের মহারাজা মোড় এলাকায় অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। টানা দু’ঘন্টা আন্দোলন চলার পর প্রশাসনিক আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোক্তার আলি সর্দার বলেন, “রায়গঞ্জ ব্লকের ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে সম্প্রতি দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সরকারি উদ্যোগে চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার কাজ শুরু হয়েছে। বাকি ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যাতে দ্রুত ধান কেনার কাজ শুরু হয় সেই ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।” প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত নভেম্বর মাস থেকে রায়গঞ্জ ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ওই কাজ চলবে। ব্লকের কয়েক হাজার চাষি ধান চাষের ওপর নির্ভরশীল। এ বছর ব্লকের প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় দেড় লক্ষ কুইন্টাল আমন ধানের চাষ হয়েছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, ধান কাটা শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত রায়গঞ্জ ব্লকের বীরঘই ও বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ছাড়া বাকি ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সহায়ক দামে ধান কেনার কাজ শুরু হয়নি। চাষিরা ফড়েদের কাছে কুইন্টাল প্রতি ৮০০ টাকা দরে ধান বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এদিন কংগ্রেসের তরফে ব্লক প্রশাসনের কাছে সরকারি উদ্যোগে চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি কুইন্টাল প্রতি ১০৮০ টাকা দরে ধান কেনার দাবি জানানো হয়। ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ব্লক প্রশাসনের কাজকর্ম অচল করে দেওয়া হবে বলে এদিন দলের তরফে হুমকি দেওয়া হয়। ব্লক কংগ্রেস কমিটির সভাপতি লিয়াকত আলি বলেন, “বহু চাষি জমি বন্ধক দিয়ে ও চড়া সুদে মহাজন এবং বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ধান চাষে নেমেছিলেন। এ বছর বিগত বছরগুলির তুলনায় ধানের ফলন বেড়েছে। ধান ওঠার পর ঋণদাতারা তাগাদা শুরু করায় চাষিরা বিভিন্ন হাটে ফড়েদের কাছে কম দামে ধান বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ফড়েরা যে দাম দিচ্ছেন তাতে ঋণ শোধ করা তো দূরের কথা চাষের খরচটুকুও উঠছে না।” জেলা কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ বিশ্বাস বলেন, “ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সরকারি উদ্যোগে চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি ১০৮০ টাকা দরে ধান কেনার কাজ শুরু না হলে টানা আন্দোলনে নামা হবে।” |