প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হাল ফেরানোর দাবিতে রাস্তা অবরোধ করলেন বাসিন্দারা। বুধবার দুপুরে পূর্বস্থলী ১ ব্লকের চাঁদপুর এলাকায় প্রায় দু’ঘণ্টা এসটিকেকে রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পরে পূর্বস্থলী ১ বিডিও এবং পূর্বস্থলী থানার আইসি গিয়ে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকার প্রায় দু’লক্ষ মানুষ শ্রীরামপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে নির্ভরশীল। এ ছাড়া কাছাকাছি হাসপাতাল বলতে প্রায় ত্রিশ কিলোমিটার দূরে কালনা মহকুমা হাসপাতাল এবং নবদ্বীপের প্রতাপনগর হাসপাতাল। এলাকার পানীয় জলে আর্সেনিকের মাত্রা বেশি। তাই এলাকার মানুষ আর্সেনিকোসিসের আশঙ্কায় থাকেন। চর্মরোগ হলেই যেতে হয় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে। অথচ পুরনো এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রেটিতে কোনও কিছুই ঠিক মতো মেলে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। বছরখানেক আগে এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘চাঁদপুর-শ্রীরামপুর গ্রামীণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা কমিটি’। এ দিন মূলত এই কমিটির নেতৃত্বেই রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। |
অবরোধকারীদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে বিএমওএইচের পদে নিয়োগ হয়নি। ফলে কাজকর্মে ব্যাহত হচ্ছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে নেই কম্পাউন্ডারও। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে নির্ভরশীল আশপাশের প্রচুর গ্রাম। রাতবিরেতে সরকারি এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী নিয়ে আসতে হয় অনেক বাসিন্দাকেই। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার জন্য জরুরি বিভাগে চিকিৎসকদের দেখা মেলে না। বহির্বিভাগে পরিষেবা মিললেও কোনওদিন কোনও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর তালিকা টাঙানো হয় না। সারা দিন হাসপাতাল চত্বর গবাদি পশুদের অবাধ বিচরণক্ষেত্র। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক্স-রে ব্যবস্থা থাকলেও এই পরিষেবা দেওয়ার জন্য কর্মীর দেখা মেলে না। ‘ইসিজি’ করার কর্মীও নেই। দন্ত বিভাগও বেহাল। হাসপাতালের নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্স থাকলেও সরকারি চালক নিযুক্ত না হওয়ায় তা পড়েই থাকে। অবরোধকারীদের দাবি, ত্রিশ শয্যার এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অপারেশন থিয়েটর অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বর সারা দিন নোংরা হয়ে থাকে। রোগীদের খাবারের মানও ভাল নয়।
স্থানীয় বাসিন্দা অসীমকুমার বাগ, শ্যামল দেবনাথদের অভিযোগ, “পরিষেবার নামে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছেলেখেলা হয়। সামান্য অসুখ সত্ত্বেও অনেক সময়েই অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করে দেওয়া হয়।” এ দিন অবরোধ চলাকালীন ঘটনাস্থলে পৌঁছন থানার আইসি এবং বিডিও। তাঁরা স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।
কালনার এসিএমওএইচ সুভাষচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি-দাওয়াগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” স্থানীয় বিধায়ক স্বপন দেবনাথ অবশ্য বলেন, “ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির পরিষেবা উন্নত করা হচ্ছে। সম্প্রতি দু’জন চিকিৎসক যোগ দিয়েছেন।” |