সিপিএম থেকে রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান হওয়ার প্রথার ‘পরিবর্তন’ চান সিপিআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এ বি বর্ধন। বুধবার শিলিগুড়িতে দলের রাজ্য সম্মেলনের শেষ দিনে বর্ধন বলেন, “এক দল থেকেই সব সময় বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান হতে হবে, এমন ধারণা বদলাতে হবে। বামফ্রন্টে সব শরিক সমান, এ কথা মুখে বলছি। কাজেও সব সময় করতে হবে।” সিপিআইয়ের রাজ্য সম্মেলনের দলিলেও এ কথা উল্লেখ করা হয়েছে। |
রাজ্যে ক্ষমতা হারিয়ে সিপিএম এখন ‘দুর্বল’। এই পরিস্থিতিতে সিপিআইয়ের দাবিতে অন্য শরিকদেরও সামিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্ধনের মন্তব্য সম্পর্কে কলকাতায় সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মদন ঘোষ বলেন, “বামফ্রন্টের চেয়ারম্যানের বিষয়টি ফ্রন্টের বৈঠকেই ঠিক হয়। সেখানেই ওঁর বক্তব্য নিয়ে কথা হবে।” বামফ্রন্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়াতেই যে তাঁদের এই দাবি তোলা ‘সহজ’ হয়েছে, বর্ধনের কথায় তা স্পষ্ট। তিনি বলেন, “ক্ষমতায় থাকা বামফ্রন্ট আর বিরোধী বামফ্রন্টের মধ্যে পার্থক্য অনেক। আমাদের দায়িত্বশীল বিরোধী হতে হবে। তাই আচরণের পরিবর্তন প্রয়োজন। অনেকের আচরণ কিছুটা পাল্টেছে। তবে আরও দরকার। সব ক্ষেত্রে সবর্সম্মত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।” ১৯৭৭ সাল থেকেই রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান পদটি সিপিএমের হাতেই রয়েছে। সিপিআইয়ের সম্মেলনের খসড়া প্রতিবেদনে সিপিএমের ‘দাদাগিরি’র সমালোচনা করা হয়েছে। সম্মেলনেও সিপিএমের ‘খবরদারি’ বন্ধের দাবি তোলেন প্রতিনিধিরা। শুধু বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান পদ নয়, বামফ্রন্টের দফতরও আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থেকে সরানোর দাবিও তাঁরা সমর্থন করেন। সম্মেলন শেষে মঞ্জুকুমার মজুমদার পঞ্চম বারের জন্য সর্বসম্মতি ক্রমে রাজ্য সম্পাদক মনোনীত হন। পরে মঞ্জুবাবু বলেন, “১০৩ জনের কমিটি তৈরি হয়েছে। আমাদের একটি প্রতিনিধি দল দ্রুত দার্জিলিঙে যাবে। সেখানে পরিস্থিতি দেখে দলকে রিপোর্ট দেবে।”
ফ্রন্ট আমলে বিরোধীদের বিভিন্ন অভিযোগ অনুযায়ী পেশিশক্তি, একদলীয় শাসনের চেষ্টা হয়েছে বর্ধন স্বীকার করেন। তিনি বলেন, “ভুলত্রুটি তো হয়েছেই। তার মাশুলও দিতে হয়েছে। তৃণমূলও একই ভুল করছে। শিক্ষা থেকে পঞ্চায়েত সর্বত্র নিজেদের দলীয় শাসন কায়েম করার চেষ্টা হচ্ছে।” সম্মেলনে সিপিআই-সিপিএমের সংযুক্তিকরণের দাবি ফের তুলেছেন বর্ধন। |