বারাসতগামী ট্রেনটি দাঁড়িয়েছিল বসিরহাট স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। পাশের লাইনে হাসনাবাদগামী একটি ট্রেন চলে এসেছে। হঠাৎ ‘গেল গেল’ রব। সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি পড়া এক বৃদ্ধ ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেনের গেট থেকে পড়ে জ্ঞান হারান। খবর পেয়ে স্টেশন মাস্টার রেল পুলিশকে ডাকেন। বৃদ্ধকে নিয়ে যাওয়া হয় বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে। মঙ্গলবার থেকে সেখানেই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা কষছেন অজ্ঞাতপরিচয় ওই বৃদ্ধ। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, পড়ে গিয়ে সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়েছে বৃদ্ধের। তাঁকে বাঁচাতে হলে নিয়ে যাওয়া দরকার কলকাতার হাসপাতালে। এখনও জ্ঞান ফেরেনি ওই ব্যক্তির। এ দিকে, পরিবারেরও কোনও খোঁজ নেই। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও পড়েছেন মুশকিলে। পুলিশ ও রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৮টা নাগাদ ঘটে ঘটনাটি। দু’টি প্ল্যাটফর্মই তখন ভিড়ে ঠাসা। সেখানেই দাঁড়িয়েছিলেন শ্যামবর্ণের লম্বা, শীর্ণকায় চেহারার ওই বৃদ্ধ। তাঁর পকেটে বসিরহাট থেকে বারাসত স্টেশনের একটি টিকিট পাওয়া গিয়েছে। সঙ্গে ৯০ টাকা। বারাসতের দিকে ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। উঠেও পড়েন। গেটের কাছে দাঁড়িয়েছিলেন। ট্রেন সবে মাত্র এগিয়েছে। হঠাৎই পড়ে যান ওই বৃদ্ধ।
স্টেশন মাস্টার দীপক হালদার বলেন, “ট্রেন দু’টি চলে যাওয়ার পরে দেখা যায়, প্ল্যাটফর্মের উপরে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন এক জন। যাত্রীদের বিশেষ কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। রেলপুলিশ এসে ওই ব্যক্তিকে নিয়ে যায় হাসপাতালে। ওঁর বাড়ির লোককে খুঁজে পাওয়া এই মুহূর্তে খুব দরকার।” স্টেশন মাস্টারের কথায়, “উনি যদি প্রাণে বাঁচেন, তা হলে মনে হবে, সকলে মিলে সত্যি কিছু একটা করেছি।” দীপকবাবুর দেওয়া টাকাতেই বৃদ্ধের ওষুধপত্র কেনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্টেশনের কর্মী দেবাশিস হালদার। হাসপাতালের সুপার রঞ্জিত দাস বলেন, “কলকাতায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য ওঁর ঠিকানা পাওয়াটা খুবই দরকার।” |