|
|
|
|
ঝাড়গ্রাম-গিধনি রুট |
যাত্রী কম, বন্ধ বেশ কয়েকটি বাস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
যাত্রী হচ্ছে না, এই ‘যুক্তি’তে ঝাড়গ্রাম-গিধনি রুটের বেশ কয়েকটি বাস দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রেখেছেন বাস মালিকেরা। ফলে, সমস্যায় পড়ছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ। সমস্যা সমাধানের দাবিতে তাঁরা বেশ কয়েক বার ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু সুরাহা হয়নি। তবে জামবনির বিডিও লিখিত ভাবে সমস্যার কথা জানিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিবহণ আধিকারিককে। অন্য দিকে, বাস মালিকদের বক্তব্য, ওই রুটে ছোট গাড়ির ‘দাপট’ বেশি। ঘনঘন ট্রেকার চলে। বাসে যাত্রী হচ্ছে না। ওই রুটে বাস চালাতে গিয়ে ক্ষতির মুখ দেখতে হয়েছে। তাই ঝাড়গ্রাম-গিধনি রুটের বেশ কয়েকটি বাস বন্ধ রাখা হয়েছে। জেলা পরিবহণ আধিকারিক বিপুল বিশ্বাসের বক্তব্য, “সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। বাস মালিকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হয়েছে। পারমিট নেওয়া থাকলে সংশ্লিষ্ট রুটে বাস চালাতেই হবে।”
বেশ কয়েক বছর ধরে অশান্ত ছিল জঙ্গলমহল। খুন-নাশকতা লেগেই থাকত। যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরুর পরেও পরিস্থিতির তেমন হেরফের হয়নি। দীর্ঘ অশান্তির জেরে ওই সময়ে বেশ কয়েকটি বাসই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বিশেষ করে বিকেলের পর আর ‘মাওবাদী প্রভাবিত’ এলাকায় বাস চালানোর ঝুঁকি নিতেন না বাস-মালিকেরা। ফলে, জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষকে সমস্যায় পড়তে হত। কয়েক মাস হল পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। নাশকতার ঘটনা কমেছে। কিন্তু, তাও কেন পরিবহণ ব্যবস্থা আগের অবস্থায় ফিরছে না, এখন এই প্রশ্নই তুলেছেন সাধারণ মানুষ। যে সব রুটে দীর্ঘ দিন ধরে বেশ কয়েকটি বাস চলছে না, তার মধ্যে ঝাড়গ্রাম থেকে গিধনি অন্যতম। ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, এই রুটে চলত এমন ৭টি বাস দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ। এর মধ্যে রয়েছে গিধনি-হলদিয়া, গিধনি-কাঁটাখালি, গিধনি-রগড়া, চিচিড়া-ঝাড়গ্রাম ভায়া গিধনি, চিচিড়া-হলদিয়া ভায়া গিধনি, গিধনি-ধুমসাইয়ের বাস। পরিস্থিতি দেখে ক’দিন আগেই জেলা পরিবহণ আধিকারিককে লিখিত ভাবে সমস্যার কথা জানান জামবনির বিডিও দীপ ভাদুড়ি। বিডিও বলেন, “স্থানীয় মানুষ এলাকার পরিবহণ সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। তাই বিষয়টি পরিবহণ আধিকারিককে জানিয়েছি।” সন্ধের পর দুষ্কৃতীদের দাপটের জেরে ক’দিন আগে মেদিনীপুর-লালগড় রুটে বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে পুলিশ নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ায় ফের ওই রুটে বাস চলাচল শুরু হয়েছে।
তবে, ঝাড়গ্রাম-গিধনি রুটে সমস্যা অন্য। বাস মালিকদের বক্তব্য, গিধনি রুটে ছোট গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে। ঘনঘন ট্রেকার চলাচল করে। ফলে, যাত্রী পাওয়া যায় না। বাসে কমপক্ষে ৩০-৩৫ জন যাত্রী না-থাকলে বাস চালানোর খরচ ওঠে না। এখন আবার তেলের দাম বেড়েছে। শ্রমিকদের মজুরিও বেড়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি বলেন, “ওই রুটে ঘনঘন ট্রেকার চলে। যাতায়াতের জন্য স্থানীয় মানুষের একাংশ ট্রেকারেই ওঠেন। ক্ষতির মুখে পড়ে বাস চালাতে হয় বলেই বেশ কয়েক জন বাস-মালিক ওই রুটে বাস চালাতে চাইছেন না।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বাস ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি শিবু সরখেল বলেন, “বাস চালানোর ক্ষেত্রে এখন খরচ বেড়েছে। ক্ষতির মুখে পড়ে বাস-মালিকেরা আর কত দিন বাস চালাবেন? ওই রুটে ছোট গাড়িতেই বেশি মানুষ যাতায়াত করেন।” তবে, বাস মালিকদের আশ্বাস, প্রশাসন আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলে সেই উদ্যোগে তাঁদেরও সহযোগিতা থাকবে। |
|
|
|
|
|