অনুচ্চারে এমসিজি-তে কাটিয়ে গেলেন এক ঘণ্টা
নিজভূমে কার্যত আত্মগোপনকারী গুরু গ্রেগ
থা ছিল সিরিজ শুরুর আগে ভারতকে জব্দ করা নিয়ে বিশেষ ক্লাস নেবেন।
নেননি।
ধারণা করা হয়েছিল যাঁর লেখা এত পছন্দ করতেন, বুধবার সন্ধেবেলা সেই পিটার রোবাকের স্মৃতিরক্ষার্থে ভিড়ে উপচে পড়া অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে থাকবেন।
ছিলেন না।
ভাবা হয়েছিল এমসিজি-তে যদি আধ ঘণ্টার জন্যও আসেন, মিডিয়া বক্সের আশপাশ, অন্তত চ্যানেল নাইনের ঘরটায় দেখা করে যাবেন।
যাননি।
জানা ছিল মাঠে এলে মাইকেল ক্লার্কের সঙ্গে দেখা না করুন, অস্ট্রেলীয় কোচ মিকি আর্থারের কাছে নিশ্চয়ই যাবেন। আর্থার এত গুণমুগ্ধ বলেই না চেয়েছিলেন সিরিজ শুরুর আগে টিমকে তাঁর সঙ্গে বসাতে!
এলাকা মাড়াননি।
গ্রেগরি স্টিভন চ্যাপেল অবশেষে দ্বিতীয় দিন খানিকক্ষণের জন্য এমসিজি-তে টেস্ট দেখতে এসেছিলেন। কিন্তু সে প্রায় না আসারই মতো। এত আড়ালে আড়ালে ছিলেন। তাঁর মেলবোর্নের নতুন আস্তানা নাকি মাঠের খুব কাছাকাছি। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে এসেছিলেন। আবার হেঁটেই ফিরে গেলেন জনতার মধ্যে মিশে। টুপিটা টেনে দিয়ে।
বারবার অনুরোধ করেও তাঁকে অস্ট্রেলীয় ড্রেসিংরুমের আশেপাশে নিয়ে যাওয়া যায়নি। এখনও তিনি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া-র ন্যাশনাল ট্যালেন্ট ম্যানেজার। কিন্তু বোর্ড কর্তাদের কাছাকাছি যাননি। ক্রিকেট ভিক্টোরিয়া-র বক্সে খানিকক্ষণ বসেছিলেন। তারপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় গ্যালারিতে। ভারতীয় সমর্থকদের নিয়ে তৈরি গোষ্ঠী স্বামী আর্মি-র কিছু সদস্যের কাছে। এদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করে গ্রেগ মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান। সেই সময়টা যখন সচিন তুমুল মেজাজে ব্যাট করছেন। শেষ বেলায় সচিনের বোল্ড হওয়া তাই দেখেননি।
বরঞ্চ গ্রেগ যাওয়ার আগে বলে যান, “রাহুলকে বলে দিও ভারত সাড়ে পাঁচশো করবে বুধবার আর টেস্টটা জিতবে।” যাঁকে বলেছিলেন তিনি যখন দিনের খেলা শেষে বলতে যান, রাহুল পাল্টা বলে পাঠান, গ্রেগকে বলে দেবেন, “ও উইকেটটা ঠিকমতো বোঝেনি। যত সহজ ভাবছে তত নয়। সারাক্ষণ বল কিছু না কিছু করছে।” তৃতীয় দিন দেখা গেল রাহুলের পর্যবেক্ষণ অভ্রান্ত ছিল! এটা পাঁচশো-র উইকেট নয়।
এমনিতে গ্রেগ হলেন জাতীয় দলের ট্যালেন্ট ম্যানেজার। দেশের জুনিয়র-সিনিয়রের মধ্যে সমতা রক্ষার দায়িত্বের পুরোটাই তাঁর। বৃহস্পতিবার এত গুরুত্বপূর্ণ দিনে টেস্ট দেখতে তো তাঁর মাঠে আসা উচিত। বিশেষ করে যেখানে শন মার্শ-কাওয়ান বা প্যাটিনসনের মতো কমবয়সিরা দলে আছেন।
কিন্তু মনে হচ্ছে না আসবেন বলে। বন্ধুদের আভাস দিয়েছেন চার দিক যতক্ষণ না ঠান্ডা হচ্ছে, তিনি আড়ালে থাকতে চান। যাতে নতুন করে কেউ বিতর্কে না জড়িয়ে দেয়। পিটার রোবাক নিয়ে বুধবার রাতের অনুষ্ঠানেও তাই গরহাজির থাকলেন। পাছে এখানে থাকা ভারতীয় মিডিয়া কিছু উস্কে-টুস্কে দেয়। পাছে অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়া জিজ্ঞেস করে; আপনি কেন মাইকেল ক্লার্কের টিমের সঙ্গে বৈঠক করলেন না!
এই বৈঠকের খবর তাঁর সম্মতি না নিয়ে আগাম মিডিয়ায় ফাঁস করে দেওয়ায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া-র ওপর প্রচণ্ড চটে রয়েছেন চ্যাপেল। জনান্তিকে বন্ধুদের বলেছেন, “আমি বোর্ডের কর্মী হতে পারি কিন্তু আমার তো একটা নিজস্ব অবস্থানও রয়েছে গ্রেগ চ্যাপেল হিসেবে। আমাকে না জিজ্ঞেস করে কিনা প্রেসে রিলিজ করে দিল! আর তার ওপর ভিত্তি করে সৌরভ এমন আক্রমণাত্মক বিবৃতি দিয়ে ফেলল!”
মাসখানেক আগে প্রকাশিত আত্মজীবনী ‘ফিয়ার্স ফোকাস’ নিয়ে যেমন বিতর্ক তৈরি হয়েছে তাতেও গুরু গ্রেগ ভয়ঙ্কর অখুশি। প্রকাশককে বলেছেন, “গোটা বইতে সচিন সম্পর্কে এত ভাল ভাল কথা বললাম। শুধু একটা জায়গায় লিখেছি ওর নিজের মধ্যে নিজের ক্রিকেট সম্পর্কে সংশয় তৈরি হয়েছিল। সেটাকেই ইস্যু করে দিল। এই ন্যক্কারজনক সাংবাদিকতা তো ভারত থেকে হয়নি। অস্ট্রেলিয়ারই কোনও সাংবাদিক করেছে এখান থেকে। কারা এ সব নিকৃষ্ট কাজ করছে আপনারা খোঁজ নিন। আমার এর মধ্যে থাকার আর কোনও স্পৃহা নেই।” ঘনিষ্ঠরা বারবারই তাঁকে বোঝাচ্ছেন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের এমন মহাগুরুত্বপূর্ণ দিনে চতুর্থ দিন তাঁর সরেজমিন মাঠে বসে অবশ্যই খেলা দেখা উচিত। গ্রেগ অনিচ্ছার কথা জানিয়েছেন। কার্যত যেন নিজভূমে পরবাসী হয়ে তিনি সাময়িক আত্মগোপনে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.