অযত্নে বেহাল বারদুয়ারি পার্ক
শিশুদের খেলাধুলার দোলনা, ঘূর্ণি-সহ সমস্ত উপকরণই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া পর্য়টকদের মনোরঞ্জনের জন্য পার্কে রঙবেরংয়ের নানা পাখি, আলোকিত ফোয়ারা, রঙিন মাছের অ্যাকোরিয়াম থেকে শুরু করে ছিল বোটিংয়ের ব্যবস্থাও। এখন আর সেসবের দেখা মেলে না। নৌকা খারাপ। বন্ধ হয়ে গিয়েছে ফোয়ারাও। থাকার মধ্যে রয়েছে ১৮টি হরিণ। খাবারের অভাবে ধুঁকছে তারাও। চারপাশ ঢেকেছে আগাছার জঙ্গলে। অযত্নে আর অবহেলায় এভাবেই বেহাল হয়ে পড়েছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের বারদুয়ারি চিলড্রেন্স কাম ডিয়ার পার্ক। পার্কে রয়েছে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থাও। হতশ্রী ওই পার্কে আর পর্যটকের দেখা মেলে না। ফলে খালি পড়ে থাকে অতিথি আবাস। চাঁচল মহকুমার একমাত্র বিনোদন কেন্দ্রটির বেহাল দশায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের বিডিও ঋতম ঝাঁ অবশ্য পার্কের রক্ষনাবেক্ষণ-সহ হরিণদের খাদ্যাভাব নিয়ে সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “পার্কটিকে ফের সুন্দর করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এনআরইজিএস প্রকল্পের টাকায় তা করা হবে।” পাশাপাশি বিডিও বলেন, “পার্ক চালু হওয়ার সময় ৬টি হরিনের জন্য যেটুকু খাদ্য বরাদ্দ ছিল তারপর আর তা বাড়েনি। ফলে তাদের খাদ্যের সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই পার্ক থেকে কয়েকটি হরিণ অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভাবছি।
অনাদরে রুগ্ণ এরাও। ছবি তুলেছেন বাপি মজুমদার।
বন দফতরের কাছে আবেদন জানাব।” হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লক চত্বরের মধ্যেই ১০ বছর আগে ওই পার্ক গড়ে তোলা হয়। ২০ বিঘার জঙ্গল কেটে সাফ করে মনোরম ওই পার্ক গড়ে তোলেন তৎকালীন বিডিও অশোক মোদক। পার্কের পরিচর্যা থেকে রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্ব পঞ্চায়েত সমিতির। দুটি জলাশয়কে সুদৃশ্য করে গড়ে তুলে চালু করা হয় বোটিংয়ের ব্যবস্থাও। মহকুমা এলাকার একমাত্র ওই পার্কে শুধু পর্যটকরাই নন, শীতে বনভোজনেরও হিড়িক পড়ে যেত। বনভোজনের জন্য নির্দিষ্ট ছিল ৫০০ টাকা। এ ছাড়া জন প্রতি প্রবেশমূল্য ছিল ২ টাকা। মাথা পিছু বোটিং করা যেত ৫ টাকায়। তাতে বেশ ভালো উপার্জনও হত পঞ্চায়েত সমিতির। ৬টি হরিণ নিয়ে পার্ক চালু হলেও তা পরে ১৮টিতে বেড়ে দাঁড়ায়। পরিচর্যা আর দেখভালের অভাবে কয়েক বছরেই ওই চিলড্রেন্স কাম ডিয়ার পার্কটি বেহাল হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসন, পঞ্চায়েত সমিতি ও বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দু’বছরে পার্কটি ক্রমশ বেহাল হয়ে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে শিশু উদ্যানের দোলনা, ঘূর্ণি। সুদৃশ্য অ্যাকোরিয়ামের মাছ মরে গিয়েছে। উধাও রঙবেরংয়ের হরেক পাখি। বাদর আর খরগোশ থাকলেও তাদের বাসস্থানের অবস্থা সঙ্গীন। পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা যায়, চাল, ভুট্টা, ছোলা, পাতা খেতে দেওয়া হয় হরিণদের। ৬টি হরিণের বরাদ্দ ভাগ করে খেতে দিতে হয় ১৮টি হরিণকে। বাকিটা লতাপাতা দিয়ে সামাল দেওয়ার চেষ্টা হয়। তাতেই হরিণগুলি ধুঁকছে বলে অভিযোগ। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, “রক্ষণাবেক্ষণ-সহ সবই পঞ্চায়েত সমিতিকে করতে হয়। অর্থাভাবে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। দেখছি কী ভাবে সমস্যা মেটানো যায়।” পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি শেখ খলিল বলেন, “দর্শকদের টাকায় ওই পার্কের রক্ষনাবেক্ষণ চলত। আসলে সদিচ্ছা আর উদ্যোগের অভাবেই তা ধ্বংসের পথ ধরেছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.