অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি ফাঁস হয়ে যেতেই অভিযোগকারীদের একঘরে করার ফতোয়া। মেঘালয়ে এর আগে জংশা গ্রামে একঘরে করার চেষ্টা হয়েছিল প্রতিবাদকারিণী তিন খাসিকন্যার পরিবারকে। এ বার জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পে (এনরেগা) টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তোলায় ফের মেঘালয়ের দু‘টি পরিবারকে একঘরে করে দিল দরবার স্নং বা গ্রাম পঞ্চায়েত। স্থানটি হল, পূর্ব খাসি পাহাড়ের উমিনিউ মার ইয়ারবিনাউ।
পুর্ব খাসি পাহাড়ের পাইনুরলায় মহিলা নাগরিক সংগঠন (সিএসডব্লিউও) সম্প্রতি একটি এফআইআর দায়ের করে গ্রাম পরিষদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, পাইনুরলার বিডিও ও গ্রামীণ কর্মসংস্থান পরিষদের সচিব ইয়ারবিনিয়াও লেমন খোংলায়ার এনরেগার টাকা নয়ছয় করেছেন। এই ব্যক্তিই আবার ২০০৯ থেকে ২০১১ অবধি গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধানও ছিলেন। গ্রামের দুই বাসিন্দা কে মাওখেলিং ও আর খোংটিয়াং-এর তরফে এই অভিযোগটি তোলা হয়েছিল।
অভিযোগ, মাওখেলিং ২০০৯ থেকে ২০১১ অবধি মাত্র ৫২ দিন কাজ করেছিলেন। কিন্তু সরকারি খাতায় লেখা, তিনি ১৪০ দিন কাজ করেছেন। পুরো টাকাও তুলে নিয়েছেন। খোংটিয়াংয়ের ক্ষেত্রেও প্রায় একই ঘটনা। মাওখিলিং ও খোংটিয়াং এরপর তথ্য জানার অধিকার আইনে এনরেগার স্থানীয় হাজিরা ও ভাতার হিসাব দাবি করেন। সরকারি তথ্য হাতে এলে দেখা যায়, গ্রামীণ কর্মসংস্থান পরিষদের সচিব সেখানে মিথ্যা হিসাব দেখিয়ে প্রচুর টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এরপরেই দুই অভিযোগকারী, সিএসডব্লিউও এবং পুলিশের দ্বারস্থ হন। গ্রাম পরিষদ ও পঞ্চায়েত প্রধানের নামে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোয় দরবার স্নং কাল মাওখেলিং ও খোংটিয়াং-এর পরিবারকে একঘরে করার সিদ্ধান্ত নেয়। গত বছর সেপ্টেম্বরে একই ভাবে ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে টাকা নয়ছয় নিয়ে জংশা গ্রামের প্রধানের বিরুদ্ধে সরকারের কাছে নালিশ করায় একঘরে হয়েছিলেন ফাতিমা মিনসং, অ্যাকুইলিন সংচান ও মালিন্দা সুটিং নামে তিন খাসিকন্যা ও তাঁদের পরিবার। সে বার অবশ্য সংবাদমাধ্যমের চাপে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয় সরকার। শেষ পর্যন্ত জংশা গ্রামের তিন কন্যার উপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নিতে বাধ্য হয় পঞ্চায়েত। এ বার কী হয়, সেটাই দেখার। |