লোকপালকে সংখ্যার অভাবে সাংবিধানিক মর্যাদা দিতে গত কাল ব্যর্থ হয়েছে মনমোহন সরকার। আজ আরও একটি সংবিধান সংশোধন বিল পাশ করাতে গিয়েও কার্যত পিছু হটল কেন্দ্র।
সংবিধানের ১১৪তম সংশোধন বিলটি এনে হাইকোর্টের বিচারপতিদের অবসরের বয়স ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ বছর করার প্রস্তাব ছিল। কিন্তু বিরোধী শিবির থেকে শুরু করে শরিক তৃণমূল যে ভাবে এই প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে, তাতে বিল পাশ করানো থেকে আজ অন্তত বিরতই থেকেছে সরকার। আগামিকালও এই সংবিধান সংশোধন বিল পাশ হওয়ার সম্ভাবনা এক প্রকার নেই বলেই সরকারি সূত্রে খবর।
বিচারকদের দায়বদ্ধতা বিলের সঙ্গেই সংবিধানের ১১৪তম সংশোধন বিল আজ লোকসভায় পাশ করাতে সচেষ্ট হয়েছিল সরকার। কিন্তু সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আলোচনা গড়ানোর পর দৃশ্যতই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, বিল পাশ করানোর জন্য সংসদে সরকারের পক্ষে যথেষ্ট সংখ্যক সাংসদ নেই। তা ছাড়া ভোটাভুটিতে শেষ পর্যন্ত তাঁরা কী অবস্থান নেবেন, তা স্পষ্ট না করলেও আলোচনায় অংশ নিয়ে লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিলটি নিয়ে আপত্তি করেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, হাইকোর্টের বিচারপতিদের অবসরের মেয়াদ ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ বছর করার কোনও যৌক্তিকতা নেই। এই অবস্থায় ভোটাভুটি পর্ব এগিয়ে আসতেই, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদ অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির মধ্যে সংখ্যালঘুদের সংরক্ষণের প্রসঙ্গে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিবৃতি দেন। স্বাভাবিক ভাবেই সংখ্যালঘু সংরক্ষণের প্রশ্নে বিজেপি সদস্যরা আপত্তি করে সরব হন। সেই হট্টগোলের কারণে লোকসভা মুলতবি করে দেওয়া হয়।
বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, সংবিধান সংশোধন বিল পাশ করানো সম্ভব নয় বুঝেই আলোচনার মাঝে হঠাৎ সংখ্যালঘু সংরক্ষণ নিয়ে বিবৃতি পেশ করা হল সংসদে। যাতে বিরোধীরা আপত্তি করলে সেই অজুহাতে সংসদ মুলতুবি করা যেতে পারে। প্রকৃতপক্ষে সংখ্যার জোর নেই বুঝেই আরও একটি অস্বস্তি এড়াতে চাইল সরকার। যদিও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী পবন বনশল দাবি করেছেন, কাল লোকসভায় বিল দু’টি পাশ করাতে যথারীতি সচেষ্ট হবে সরকার। কিন্তু সরকারের শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, বিচারকদের দায়বদ্ধতা বিলটি কাল লোকসভায় পাশ হলেও সংবিধান সংশোধন বিল পাশের সম্ভাবনা কম। কারণ সরকারের পক্ষে প্রয়োজনীয় সংখ্যা নেই। |