বয়স এক বছরেরও কম। অথচ, এর মধ্যেই ফাটল দেখা দিয়েছে উল্টোডাঙার ই এম বাইপাস-ভিআইপি রোড সংযোগকারী উড়ালপুলে।
উল্টোডাঙার হাডকো মোড়ের যানজট এড়িয়ে সরাসরি ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাসে পৌঁছনোর জন্য এই উড়ালপুল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাম সরকার। সেই মতো কেএমডিএ-র তত্ত্বাবধানে উড়ালপুলটি তৈরি হয়। নির্মাণের দায়িত্বে ছিল ‘ম্যাকিনটশ বার্ন’। কিন্তু এক বছর না-পেরোতেই সেই উড়ালপুলের তিনটি স্তম্ভে ফাটল দেখা দিয়েছে। নগরোন্নয়ন দফতরের এক অফিসার জানান, তৈরির এত কম সময়ের মধ্যে উড়ালপুলে ফাটল দেখা দেওয়া খুবই উদ্বেগের। কারণ, উড়ালপুলটি বন্ধ করে দেওয়া হলে উল্টোডাঙার যানজট আরও তীব্র হবে। বাইপাস এবং ভিআইপি রোডের মধ্যে দ্রুত যোগাযোগও বন্ধ হয়ে যাবে।
|
বুধবার পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “ওই উড়ালপুলে ফাটল নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।” এ দিন ওই উড়ালপুল নিয়ে টেকনিক্যাল রিপোর্টও চেয়ে পাঠিয়েছেন পুরমন্ত্রী। তবে, উড়ালপুল বন্ধ করে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি নগরোন্নয়ন দফতর। মহাকরণ সূত্রের খবর, টেকনিক্যাল রিপোর্ট পাওয়ার পরেই সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, ২০০৯ সালে উড়ালপুলের দু’-তিনটি জায়গায় নির্মাণগত কিছু ত্রুটি ধরা পড়ে। সেই সময়ে ইঞ্জিনিয়ারেরা তা চিহ্নিত করে ত্রুটি সংশোধনও করান। সরকারি নথিতে তার উল্লেখ রয়েছে। এখন ফের ওই জায়গাতেই ফাটল ধরেছে কি না, তা খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ফিরহাদের অভিযোগ, বাম সরকার তড়িঘড়ি উড়ালপুল উদ্বোধন করার জন্যই নির্মাণে গলদ থেকে গিয়েছে।
এ বিষয়ে প্রাক্তন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “প্রায় সাত মাস হল আমি মন্ত্রী নই। ওখানে কী কারণে, কী ঘটেছে, না জেনে বলা ঠিক হবে না। এটুকু বলছি যে, চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ারদের সবুজ সঙ্কেতের পরেই সেতুটি চালু হয়। কোনও ত্রুটি ছিল না। এখন কোনও প্রশ্ন থাকলে সিইও, চিফ ইঞ্জিনিয়ারদের জিজ্ঞাসা করা দরকার। ওঁরাই ভাল বলতে পারবেন।” ফিরহাদের নির্দেশে এ দিনই উড়ালপুলটি পরিদর্শন করেন ডিজি (ট্রাফিক ট্রান্সপোর্ট) অনুপ ঘোষ এবং কেএমডিএ-র প্রোজেক্ট ম্যানেজার এস সরকার। উড়ালপুলের নির্মাণকারী সংস্থা ম্যাকিনটশ বার্নের এক কর্তাও যান।
উল্টোডাঙার উড়ালপুলে ফাটল দেখা দেওয়ার প্রেক্ষিতে অন্য উড়ালপুলগুলির ‘নিরাপত্তা’ নিয়েও উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকার। কেএমডিএ-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিবেক ভরদ্বাজ জানিয়েছেন, আইআইটি-খড়্গপুর, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিবপুরের বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞদের দিয়ে কলকাতা শহরের সব ক’টি উড়ালপুল পরিদর্শন করানো হবে। |