সাঁইথিয়ায় মৃত্যু জখম স্কুল ছাত্রের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সাঁইথিয়া |
তেলের ট্যাঙ্কারের টায়ার ফেটে জখম হওয়া বালকের মৃত্যু হল কলকাতার একটি হাসপাতালে। মঙ্গলবার বিকেলে সাঁইথিয়া শহরের বোলষণ্ডা কলোনিতে লাভপুর যাওয়ার রাস্তায় ওই ঘটনায় জখম হয়েছিল সুব্রত বসাক নামে ৯ বছরের ওই বালক। তাকে প্রথমে সাঁইথিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরে সেখান থেকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে, বর্ধমান মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বুধবার ভোর ৪টে নাগাদ তাকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। ৮টা নাগাদ তার মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষতিপূরণ ও রাস্তা সংস্কারের দাবিতে দিন বাড়িটি আটকে রেখে বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে অনেক রাত পর্যন্ত সাঁইথিয়া-লাভপুর রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুব্রত তার বন্ধুর সঙ্গে ওই দিন রাস্তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় তেলের ট্যাঙ্কারটির টায়ার ফাটে। হাওয়া ও রাস্তার পাথর ছিটকে বালকটি জখম হয়েছিল সুব্রত। স্থানীয় বাসিন্দা বাপিপ্রসাদ রায়, অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায়, গোবিন্দ সাহারা জানান, এমনিতে রাস্তা খানাখন্দে ভর্তি। দীর্ঘদিন ধরে ওই রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন। মাস ন’য়েক আগে সংশ্লিষ্ট দফতরের পক্ষ থেকে রাস্তা সংস্কারের কাজও শুরু হয়েছিল। তাঁদের দাবি, “রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ার পরেই বিপদ আরও বেড়েছে। খানাখন্দে ভর্তি রাস্তা সংস্কারের জন্য সাঁইথিয়া পালির মোড় থেকে প্রায় পুরো রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি হয়। কিছু জায়গায় কাজ হয়েছে। কিন্তু পালিরমোড় থেকে বোলষণ্ডা পর্যন্ত প্রায় দেড়-দু’কিলোমিটার রাস্তায় কোনও কাজ হয়নি। যার ফলে মঙ্গলবার এতবড় দুর্ঘটনা ঘটল।” তাঁদের হুমকি, দু’চার দিনের মধ্যে কাজ শুরু না করলে তাঁরা লাগাতার অবরোধের পথে যাবেন। রাস্তাটি পূর্ত দফতরের (জাতীয় সড়ক) আওতাধীন। ওই দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার জাহ্নবি কোনার বলেন, “ওই রাস্তার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। বর্ষা এবং আরও কিছু কারণে এত দিন কাজ করা যায়নি।”
সুব্রতর মৃত্যুর ঘটনায় বাড়ি ও পাড়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ছেলের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই বাবা স্বপন বসাক ও মা মঞ্জুরানিদেবী। পড়শি আনন্দ বসাক বলেন, “স্বপনবাবুর বড় ছেলে সুজন স্থানীয় পাহাড়িবাবা স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে। ছোট ছেলে সুব্রত বোলষণ্ডা প্রাথমিক স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। মঙ্গলবার সহপাঠী গোরাচাঁদ শীলের সঙ্গে সুব্রত মেলায় যাচ্ছিল। আমরা সুব্রতকে বাঁচাতে পারলাম না।” |