তারাপীঠে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ
দ্বারকা থেকে উদ্ধার দুই মহিলার দেহ
তারাপীঠ শ্মশান সংলগ্ন দ্বারকা নদ থেকে দুই অজ্ঞাতপরিচয় মহিলার দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার নিশাত পরভেজ বলেন, “বুধবার দেহ দু’টি উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি, ওই দুই মহিলাকে অন্য কোথাও খুন করে এখানে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এই খুনের সঙ্গে কে বা কারা জড়িত এবং কী কারণে এই জোড়া খুন তা এখনও পরিষ্কার নয়। তদন্ত চলছে।”
এই নিয়ে তিন মাসে তারাপীঠে তিনটি খুনের ঘটনা ঘটল। উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর মাসে তারাপীঠে একটি লজের বাথরুমে অজ্ঞাতপরিচয় এক মহিলার গলাকাটা দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। কে কেন এবং কী কারণে ওই মহিলাকে খুন করেছে তার কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। নভেম্বর মাসে সন্ধ্যায় দ্বারকা সেতুতে কৃষ্ণনগরের এক যুবককে গুলি করে খুন করা হয়েছিল। তবে ওই ঘটনার কিনারা করতে পেরেছে পুলিশ।
একের পর এক খুনের ঘটনায় নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন এলাকার বাসিন্দারা। বাসিন্দা রামপ্রসাদ রায়, রঞ্জিত মণ্ডলদের ক্ষোভ, “তারাপীঠে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। পুলিশের নজরদারিরও অভাব আছে। এর জন্য দুষ্কৃতীরা অপরাধমূলক কাজকর্ম করতে সুযোগ পায়।” তার ১১টার পরে রাস্তাঘাট অন্ধকার হয়ে যায় বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
এখান থেকেই উদ্ধার হয় দেহ দু’টি। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’জনের বয়স ৪৫-৫৫ এর মধ্যে হবে। এক জনের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। অন্য জনের পেটের দু’জায়গায় অস্ত্রের কোপ রয়েছে। খবর পেয়ে এ দিন ঘটনাস্থলে যান রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বিশ্বজিৎ ঘোষ, মাড়গ্রাম থানার পুলিশ আধিকারিক-সহ তারাপীঠ পুলিশ ফাঁড়ির কর্মীরা। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, শ্মশান থেকে দ্বারকা নদে নামার জন্য নতুন একটি ঘাট হয়েছে। ওই ঘাটের কাছে দু’টি দেহ ভেসেছিল। পুলিশ অবশ্য সেখানে কোনও রক্তের চিহ্ন পায়নি।
তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “শ্মশান এলাকায় পুলিশি নজরদারির অভাব রয়েছে। তারাপীঠে একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটে চলেছে। বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ ফাঁড়ির বদলে তারাপীঠ থানা করার দাবি জানিয়ে আসছেন। থানা হলে পুলিশ কর্মীর সংখ্যা বাড়িয়ে নজরদারি আরও বাড়ানো যাবে।” একই অভিযোগ তারাপীঠ লজ ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সম্পাদক সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর অভিযোগ, “তারাপীঠে কোনও খুন হলে পুলিশ লজ ব্যবসায়ীদের প্রতি দোষারোপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ জারি করে। অথচ তারাপীঠে দ্বারকা সেতুর উপরে, শ্মশানে খুন হচ্ছে। সেদিকে পুলিশ প্রশাসনের নজর নেই।” তাঁর আশঙ্কা, “এই সব ঘটনা ঘটতে থাকলে তারাপীঠে পর্যটকেরা আসতে চাইবেন না।”
তারাপীঠ পুলিশ ফাঁড়িতে বর্তমানে ১৬ জন কর্মী আছে। তাঁদের মধ্যে তিন আধিকারিক আছেন। শান্তিনিকেতনে পৌষমেলার জন্য ৯ জন পুলিশকর্মী সেখানে ডিউটিতে রয়েছেন। তারাপীঠ পুলিশ ফাঁড়ির মধ্যে ৩৬টি গ্রাম রয়েছে। এ ছাড়া, ছোটবড় ৪০০টির বেশি লজ রয়েছে। সেই সঙ্গে পৌষ মাসের তারাপীঠে দর্শনার্থীদের ভিড় রয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার অবশ্য বলেন, “তারাপীঠে আগে দু’জন এসআই ছিল। পুলিশকর্মীও কম ছিল। সম্প্রতি ওখানে এক জন এএসআই নিয়োগ করা-সহ পুলিশ কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। তারাপীঠের এলাকা এবং গুরুত্ব বুঝে পুলিশ ফাঁড়িকে থানা করার প্রস্তাব অনেক আগে পাঠানো হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.