খান্দরা কলেজে ছাত্র সংসদ গঠনের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।
অন্ডালের ওই কলেজে মনোনয়ন দাখিল ও জমা দেওয়ার দিন ছিল ৯ এবং ১০ ডিসেম্বর। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ২৩টি আসনের জন্য প্রায় আড়াইশো জন মনোনয়ন তুললেও জমা দেন শুধু টিএমসিপি-র ২৫ জন। তার পরে আবার দু’জন প্রত্যাহার করে নেন। শেষ পর্যন্ত কলেজের অধ্যক্ষ ২৩টি আসনে ২৩ জন প্রার্থীকে জয়ী বলে ঘোষণা করেন ১৪ ডিসেম্বর। এর পরেই ১৭ ডিসেম্বর এসএফআই দুর্গাপুর নিম্ন আদালতে মামলা করে। এসএফআই নেতা তথা কলেজের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সুব্রত সিদ্ধান্ত জানান, দুর্গাপুর নিম্ন আদালতকে তাঁরা জানিয়েছেন, মনোনয়ন দাখিলের আগেই তাঁদের ২৫ জন কর্মীর ‘অ্যাক্রিডিয়েশন কার্ড’ কেড়ে নেয় তৃণমূল সমর্থকেরা। তাঁরা ৯ তারিখের আগেই অন্ডাল থানায় এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। কোনও প্রতিকার না মেলায় বিডিও এবং মহকুমাশাসককে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানান। কোনও ফল না হওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা। এসএফআইয়ের এই আবেদনের ভিত্তিতে ১৭ ডিসেম্বরই দুর্গাপুর নিম্ন আদালত নির্বাচনে স্থগিতাদেশ জারি করে।
দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক আয়েষা রানি এ অবশ্য বলেন, “এসএফআইয়ের অভিযোগ জানার পরে পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলেছিলাম।” দুর্গাপুরের এডিসিপি শুভঙ্কর সিংহ সরকার বলেন, “পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এ দিকে, ১৯ ডিসেম্বর তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা পার্থ দেওয়াসি অধ্যক্ষকে লিখিত আবেদনে জানান, জয়ী বলে ঘোষণা করা সত্ত্বেও অধ্যক্ষ নির্বাচিত প্রার্থীদের সেই সংক্রান্ত শংসাপত্র দিচ্ছেন না। ছাত্র সংসদও গঠন করছেন না। অবিলম্বে অধ্যক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন তাঁরা। তার ভিত্তিতে অধ্যক্ষ সঞ্জীব হাজরা বিজয়ীদের নাম-সহ শংসাপত্র নোটিস বোর্ডে টাঙিয়ে দেন। কিন্তু অধ্যক্ষ সংসদ না গঠন করায় ২০ ডিসেম্বর টিএমসিপি-র তরফে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়। টিএমসিপি-র আইনজীবী পার্থ ঘোষ জানান, ২১ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি তপেন সেন অধ্যক্ষকে সংসদ গঠনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ জারি করেন। তারই ভিত্তিতে ২৪ ডিসেম্বর অধ্যক্ষ ছাত্র সংসদ গঠন করেছেন।
আইনজীবী পার্থবাবুর দাবি, “এসএফআই দুর্গাপুর নিম্ন আদালতে যে মামলা করেছিল, সেখানে সম্পূর্ণ তথ্য জানায়নি।” অন্য দিকে, এসএফআই নেতা সুব্রত সিদ্ধান্তের দাবি, হাইকোর্টে টিএমসিপি-র তরফে নিম্ন আদালতের রায় সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। তিনি বলেন, “আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালতে যাব।” খান্দরা কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, এসএফআইয়ের তরফে কোনও মনোনয়ন জমা পড়েনি। তাই মনোনয়ন জমা দেওয়া ২৩ জন প্রার্থীকেই জয়ী ঘোষণা করা হয়। নিম্ন আদালত স্থগিতাদেশ দেওয়ার আগেই এই ঘোষণা করা হয়েছিল। অধ্যক্ষ বলেন, “যা হয়েছে, তা আইন মেনেই করা হয়েছে।”
|