তৃণমূলের সঙ্গে যুব-র সংঘর্ষ
দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকট সাঁতুড়িতে
তৃণমূলের সঙ্গে যুব তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় তেতে উঠেছে সাঁতুড়ির মধুকুন্ডা এলাকা। সোমবার সন্ধ্যার ঘটনা। অভিযোগ, যুব তৃণমূলের কিছু কর্মীর হাতে মার খেয়েছেন সাঁতুড়ি ব্লক তৃণমূল সভাপতি রামপ্রসাদ চক্রবর্তী, ব্লক নেতা কালীদাস সরকার-সহ দলীয় চার-পাঁচ কর্মী। তৃণমূলের কর্মীরাই তাঁদের সদস্যদের মারধর করেছেন বলে পাল্টা অভিযোগ যুব তৃণমূল নেতৃত্বের।
দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে সাঁতুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ সৌমেন ভট্টাচার্য নামে স্থানীয় এক যুব তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতারও করেছে। পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো জানিয়েছেন, দলীয় স্তরে তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দু’পক্ষের ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হয়েছে দাবি করেও তাঁর মন্তব্য, “ঘটনা যাই হোক না কেন, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ বরদাস্ত করা হবে না।”
সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ মধুকুন্ডার একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় ‘স্টিল মেল্টিং শপ’-এ বিস্ফোরণের জেরে ছয় কর্মীর আহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-যুব তৃণমূল সংঘর্ষের সূত্রপাত। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কারখানায় গিয়েছিলেন দু’তরফের কর্মী-সমর্থকেরা। সেই সময় দু’পক্ষে বিবাদ বাধে। তবে পুলিশের হস্তক্ষেপে বিবাদ বেশিদূর গড়ায়নি। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই কারখানায় শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্ব দেওয়াকে ঘিরে নিয়ে তৃণমূল ও যুব তৃণমূলের একাংশের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরেই বিবাদ রয়েছে। এলাকার স্পঞ্জ আয়রন কারখানাগুলিতে দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র দায়িত্বে রয়েছেন ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি বাপ্পা মুখোপাধ্যায়। একই ব্যক্তিকে দু’টি সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়ায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ প্রথম থেকেই ক্ষুব্ধ।
দলীয় কোন্দলের জেরেই চলতি বছর জুলাইয়ে এই কারখানাটি টানা অনেক দিন বন্ধ ছিল। সেই সময়ও পরিস্থিতি সামলাতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। ব্লক তৃণমূল সভাপতি রামপ্রসাদবাবুর অভিযোগ, “দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কিছু কর্মীকে নিয়ে সেখানে যাই। তখন বিনা প্ররোচনায় বাপ্পার নেতৃত্বে যুব তৃণমূলের কিছু লোক আমাদের মারধর করে।” বাপ্পাবাবুর পাল্টা অভিযোগ, “দুর্ঘটনার পরে আমরা যখন আহতদের হাসপাতালে পাঠাতে অন্য কর্মীদের সাহায্য করছিলাম, তখন আচমকাই ব্লক তৃণমূল সভাপতির নেতৃত্বে কিছু লোক আমাদের উপরে হামলা চালায়।”
সংঘর্ষের খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন এসডিপিও (রঘুনাথপুর) দ্যুতিমান ভট্টাচার্য। পুলিশের উপস্থিতি যুযুধান দু’পক্ষ সংযত হলেও তার মধ্যেই চন্দন মুখোপাধ্যায় নামে এক যুব তৃণমূল কর্মীর মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এই কাজ তৃণমূলের লোকজনের বলে দাবি যুব তৃণমূলের।
পুলিশ সূত্রের খবর, ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি-সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন রামপ্রসাদবাবু। অন্য দিকে, যুব সভাপতি রামপ্রসাদবাবু-সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এসডিপিও বলেন, “তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ ঘটেছে। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছনোয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনাস্থল থেকেই এক জনকে ধরা হয়েছে। দু’পক্ষেরই দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে।”
সোমবারের ওই ঘটনার পরে এ দিন এলাকায় যান রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি। তাঁর উপস্থিতিতেই যুব তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার ও সংগঠন থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান রামপ্রসাদবাবু। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এ ভাবে প্রকাশে এসে যাওয়ায় যথেষ্ট বিব্রত তৃণমূল নেতৃত্ব। পূর্ণচন্দ্রবাবু বলেন, “পুরো ঘটনার রিপোর্ট দেওয়া হবে জেলা সভাপতিকে। পুলিশ তদন্ত করছে। পুলিশের কাজে কেউ হস্তক্ষেপ করবে না।” রিপোর্ট পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে দলগত ভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.