আমাদের স্কুল

কাশ্বাড়া ইয়াসিন মণ্ডল শিক্ষানিকেতন

প্রতিষ্ঠা১৯৬৯।
ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা১২৮২।
মোট শিক্ষক-শিক্ষিকা২৪ জন।
পার্শ্বশিক্ষক ৩ জন। অশিক্ষক কর্মচারী ৪ জন।
২০১১ সালে মোট মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী১১২ জন।
উত্তীর্ণ ১০০ জন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ১১১ জন। উত্তীর্ণ ১০৫ জন।

রতন চট্টোপাধ্যায়
অতিরিক্ত সাইকেল শেড, আরও শৌচাগার দরকার স্কুলের জন্য
সময়টা ষাটের দশকের শেষ ভাগ। চুঁচুড়া ছাড়িয়ে পশ্চিমে পোলবা থানার কাশ্বাড়া, বিহারীপল্লি, মহেশ্বরবাটি, আমনান, বরুনানপাড়া, রামনগর, খামারপাড়া প্রভৃতি অঞ্চলের কেন্দ্রস্থলে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক অনগ্রসর তপসিলি আদিবাসী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত পরিবারের সন্তানদের পড়া চালিয়ে যাবার জন্য একটি পুর্ণাঙ্গ উচ্চ বিদ্যালয়ের চাহিদা ক্রমশ ঘনীভূত হতে থাকে। বিশেষত ছেলেরা দূরবর্তী বিদ্যালয়ে যেতে পারলেও এখানকার মেয়েরা প্রাথমিক পাঠ শেষ করে লেখাপড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছিল। অনেক চেষ্টার পর স্থানীয় মানুষের প্রচেষ্টায় ১৯৬৯ সালের ৫ নভেম্বর কাশ্বাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাড়িতে জনা কয়েক পড়ুয়া নিয়ে এই বিদ্যালয়ের পথ চলা শুরু। পড়ুয়া বাড়তে থাকলে প্রয়োজন হয় নিজস্ব ভবনের। জমি দিতে এগিয়ে আসেন কাশ্বাড়া গ্রামের এক নারী। নাম আয়েশা খাতুন। তাঁর দান করা তিন বিঘা জমিতে ১৯৭১ সালে গড়ে উঠল বিদ্যালয়ের স্থায়ী ঠিকানা। আয়েশা খাতুনের প্রয়াত পিতা ইয়াসিন মণ্ডলের স্মৃতি রক্ষার্থে বিদ্যালয়ের নামকরণ হয় কাশ্বাড়া ইয়াসিন মণ্ডল শিক্ষানিকেতন।
বিদ্যালয় গড়ার কাজটি মসৃণ ছিল না। প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক প্রয়াত নিমাইচাঁদ ভৌমিক ও এলাকার কিছু শিক্ষিত তরুণ সংগঠক শিক্ষক রূপে গ্রামে গ্রামে ঘুরে সাহায্য সংগ্রহ করেন। প্রকৃত গণ-উদ্যোগকে ভিত্তি করে স্থানীয় মানুষ বাঁশ, দরমা, টালি ইত্যাদি দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে বিদ্যালয় গড়েছেন। ২০০৬ সালে চালু হল রাজ্য বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সংসদ অনুমোদিত একগুচ্ছ বৃত্তিমূলক ও কারিগরি প্রশিক্ষণ। স্বল্পমেয়াদী এবং মাধ্যমিক উত্তীর্ণদের ক্ষেত্রে দুই বৎসরের উচ্চমাধ্যমিক সমতুল এই প্রশিক্ষণগুলি স্বনির্ভরতা ও স্বনিযুক্তি এবং উচ্চতর কারিগরি শিক্ষার আঙিনায় প্রবেশের ক্ষেত্রে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিদ্যালয়ের আর একটি অলঙ্কার হল একটি আদিবাসী আশ্রম ছাত্রাবাস ও একটি আদিবাসী ও তপসিলি ছাত্রাবাস। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের আর্থিক সহায়তায় গড়ে ওঠা দুঃস্থ ছাত্রছাত্রী কল্যাণ তহবিল থেকে পাঠ্যবই, পোশাক, পরীক্ষার ফি প্রদান করা হয়। মাধ্যমিক পরীক্ষার কেন্দ্র চলাকালীন স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতি পরীক্ষার্থী সহায়তা কেন্দ্র চালু করেন। এত কিছু সত্ত্বেও অভাব আছে অতিরিক্ত সাইকেল শেডের। আরও শৌচাগার দরকার। খেলার মাঠটির সংস্কার, ছাত্রাবাসের নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রয়োজন। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য নেই কোনও কমনরুম। চালু করা যায়নি পাঠ্যবিষয়রূপে সাধারণ বিভাগে কম্পিউটার।
আমার চোখে

সুদীপ মেটে
আমি পঞ্চম শ্রেণি থেকে এই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছি। স্কুলের পরিকাঠামো, শিক্ষাগ্রহণের উপযোগী পরিবেশ ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্তরিকতা আমাকে ভাল ফল করতে সাহায্য করেছে। বিদ্যালয়ের ইকো-ক্লাব আমাদের খুবই প্রিয়। বিভিন্ন রকম কাজ, যেমন বাগান পরিচর্যা, সেমিনার, মহাপুরুষদের জন্মদিন পালন ইত্যাদি কাজে আমরা উৎসাহের সঙ্গে যোগ দিই। বিদ্যালয়ে নিয়মিত খেলাধূলা হয়। তাৎক্ষণিক বক্তৃতা, গান, নাটক, যুব সংসদ-সহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আমাদের বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়, যা আমাদের শিক্ষার প্রেরণা জোগায়। এ সব বিষয়ে আমরা নানা জায়গায় পুরস্কৃতও হই। শিক্ষক-শিক্ষিকারা আমাদের নিজ সন্তানের মতোই স্নেহ করেন। সব বিষয়ে সঠিক ও সময়োপযোগী পরামর্শ দেন। আমরা যেমন বিদ্যালয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ, তেমনই আশা করব আগামী প্রজন্মের কাছে বিদ্যালয়টি একটি আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসাবে বিরাজ করবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.