|
|
|
|
সম্পাদক সমীপেষু... |
জ্বলন্ত সিগারেট থেকেই কি? |
আমরি হাসপাতালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে যে, ছুড়ে ফেলা জ্বলন্ত সিগারেটের টুকরো থেকে বেসমেন্টে রাখা তুলোর স্তূপে আগুন লাগে (১৯-১২-২০১১)। ইতিমধ্যে অন্যান্য তদন্তে জানা গিয়েছে যে, আমরি (ঢাকুরিয়া) হাসপাতালে বেশ কিছু বিধিভঙ্গ ঘটেছিল। এর সঙ্গে আরও একটা ধারা যুক্ত হতে পারে। ভারত সরকারের সিগারেটস অ্যান্ড আদার টোব্যাকো প্রোডাক্টস অ্যাক্ট (সি ও টি পি এ) ২০০৩-এ বলা আছে, জনসমাগমের স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ (আ বা প ২৭-২)। এর মধ্যে পাবলিক অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, সরকারি ও বেসরকারি কর্মস্থল ইত্যাদি আছে। এই আইনে বলা আছে, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে এ কথা জানিয়ে সুস্পষ্ট ভাবে প্রদর্শিত বোর্ড লাগাতে হবে এবং বিধিভঙ্গকারীদের জরিমানা করতে হবে। বেশ কয়েক বারই এই পাবলিক নোটিস গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারিত হয়েছে। |
 |
আমরা কমবেশি সকলেই জানি, ধূমপান ক্যানসার-সহ কত ধরনের অসুখ ডেকে আনে। কিন্তু অনেকেই অবহিত নন যে, অসতর্ক ভাবে ফেলা জ্বলন্ত সিগারেটের টুকরো কতটা বিপজ্জনক হতে পারে। চূড়ান্ত উদাহরণ হল, ১৯৮৭ সালে চিনে ঘটা বিশ্বের সবথেকে বিধ্বংসী দাবানল। যাতে ৩০০ জন মানুষ মারা যান। ৫০০০ জন আশ্রয়হীন হন। ১৩ লক্ষ হেক্টর বনাঞ্চল ধ্বংস হয়। যার ক্ষতি বিশাল (তথ্যসূত্র: বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা W H O-র ওয়েবসাইট)। বিশ্বখ্যাত ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্যানসার কন্ট্রোল (U I C C) ও আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির যুগ্ম ভাবে প্রকাশিত টোব্যাকো অ্যাটলাস-এ (পৃষ্ঠা ৪৩, ২০০৬) বলা হয়েছে যে, ২০০০ সালে বিশ্বে সমস্ত অগ্নিকাণ্ডজনিত মৃৃত্যুর ১০ শতাংশই এই কারণে হয়েছিল। মোট ৩ লক্ষ মানুষ ধূমপানজনিত অগ্নিকাণ্ডে মারা যান এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ২৭০ কোটি আমেরিকান ডলার। এ-ও দেখা গিয়েছিল, খোদ আমেরিকায় ২০০২ সালে ১৪,৪৫০টি বাড়িতে এই জাতীয় অগ্নিকাণ্ড ঘটে, যার জন্য ৫২০ জন মারা যান। ১৩৩০ জন আহত হন এবং আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৭ কোটি ১০ লক্ষ ডলার।
এই সব ঘটনা পড়েও কি আমরা শিক্ষা নেব না! এর পরেও যথেচ্ছ ধূমপান আর যেখানে-সেখানে জ্বলন্ত সিগারেট ছুড়ে ফেলার প্রবণতা চলতেই থাকবে! আইন কি খাতায়-কলমেই থাকবে? তা কি এখানে বাস্তবে কোনও দিনই চালু করা যাবে না?
ড. উৎপল সান্যাল। সাউথ সিঁথি, কলকাতা-৩০
|
আত্মসমর্পণ |
আমরি কর্তাদের আত্মসমর্পণ প্রসঙ্গে (১১-১২) খবরে দেখলাম, অমর্ত্য মুখোপাধ্যায় লিখেছেন ...‘আত্মসমর্পণ করতে এসেছিলেন দামি পোশাক পরে, বিদেশি গাড়ি চড়ে...’।
আমরি দুর্ঘটনা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও উদাসীনতার ফসল এবং খুবই বেদনাদায়ক। বিচার বিভাগ এবং পুলিশ ব্যাপারটা দেখছে। আমরি কর্তারাও রীতি মেনে আত্মসমর্পণ করেছেন। সে তাঁরা দামি পোশাকে বিদেশি গাড়িতেই যান অথবা ছেঁড়া গেঞ্জি, হাফ প্যান্ট পরে অটোতেই যান।
কিছু জিনিস মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত, অন্যের এক্তিয়ারে পড়ে না। যদি অমুকবাবুর বাড়িতে দুর্ঘটনা হয় এবং পড়শি তমুকবাবু চোখ টেরিয়ে বলেন যে, দুর্ঘটনা ঘটেছে অমুকবাবুর চক্রান্তেতা হলে কি অমুকবাবু খালি
গায়ে হামাগুড়ি দিয়ে থানায় আত্মসমর্পণ করতে যাবেন?
পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা-৭৪
|
অপকর্মে সহযোগিতা |
আমি একজন সাধারণ নাগরিক। আমি আপনার পত্রিকার মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নিম্নোক্ত বিষয়ে কয়েকটি অভিযোগ করছি। সমাজ ব্যবস্থায় অনেক অপরাধমূলক কাজ চোখে দেখেও অনেক সময় প্রতিবাদ করা যায় না। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে যখন অন্যায় ও বেআইনি কাজ চোখে দেখা যায় এবং অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে সেই অপরাধটাকে খাটো করে সঠিক কাজ বলে পুলিশ প্রশাসন অনুমোদন দেয়, তখন পুলিশ প্রশাসনকে ঘৃণা এবং ধিক্কার দেওয়া ছাড়া বোধহয় আর কিছু করার থাকে না।
ঘটনা এই যে, সমসেরগঞ্জ থানার অন্তর্গত লালপুর এলাকা থেকে লোহারপুর এলাকায় প্রতিদিন প্রায় ২৪ ঘণ্টা গঙ্গা-পাড়ের মাটি কেটে হাজার হাজার ‘শক্তিমান’ লরিতে ও ট্রাক্টরে বোঝাই করে সুতি থানার সাজুুর মোড়/ধলা/মহেশাইল এলাকায় রাতারাতি গজিয়ে ওঠা চিমনি ইটভাটাগুলিতে পাচার করা হয়। প্রশাসন খুব ভাল করেই জানে, কে বা কারা গঙ্গা-পাড়ের মাটি অবৈধ ভাবে খনন করে এবং কোথায় তা পাচার করে। দুই/তিন কিলোমিটার ব্যবধানে দুটো বি এল অ্যান্ড এল আর ও অফিস (সমসেরগঞ্জ এবং সুতি-২), আর আই অফিস, দুটো বি ডি ও অফিস (সমসেরগঞ্জ এবং সুতি-২)। ভূমি সংক্রান্ত প্রশাসনিক কর্তারা অবৈধ লেনদেনের বুনিয়াদে নামমাত্র রেভিনিউ আদায়ের অজুহাতে অবৈধ মাটি কাটার কাজটিকে খাটো করে দেখবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এলাকায় সকলে জ্ঞাত আছেন, এমনকী ভূমি সংক্রান্ত আধিকারিকগণ এবং লোকাল পুলিশ অফিসাররাও অবগত আছেন যে, গঙ্গা-পাড়ের অবৈধ মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে এলাকায় মাফিয়া রাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। এলাকার জনগণ অবৈধ ভাবে মাটি কাটার জন্য প্রশাসনিক স্তরে অনেক আবেদন-নিবেদন করেছেন। প্রতিবাদ হিসাবে মাটি-বোঝাই লরিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। এলাকায় শান্তি বিঘ্নিত হয়েছে। মাটি-বোঝাই লরির দাপটে সমসেরগঞ্জ থানার কাঁকুড়িয়া ও বাসুদেবপুর এলাকায় ট্রাফিক যানজটে ও দূষণের ফলে মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়ছেন। কিছু সময়ের জন্য সাধারণ মানুষের সান্ত্বনা হিসাবে অবৈধ মাটি কাটা বন্ধ থাকলেও প্রশাসনের দয়াতে পাচারকারীদের লেনদেনকে সম্মান জানানোর জন্য রাতের বেলায় মাটি কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আবার পুলিশ প্রশাসনের সিগনাল ঠিক থাকলে দিনের বেলায় যানজট তৈরি করে মাটি পাচার করতে কোনও দ্বিধাবোধ নেই। জেলার এবং মহকুমার প্রশাসনই সর্বময় প্রশাসনিক কর্তা। ফলে প্রশ্ন জাগে, এ রকম অন্যায় কাজে সহযোগিতা কার লজ্জা? নাগরিক সমাজের? না, পুলিশের? না, প্রশাসনের?
নির্মল সরকার। অরঙ্গাবাদ, মুর্শিদাবাদ |
|
|
 |
|
|