হাসপাতালে একের পর এক শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। তখন মালদহ মেডিক্যাল কলেজের তিন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কী ভাবে ছুটি নিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলেন, তা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা শ্যামাপদ বসাক। রবিবার তিনি জানান, ডিরেক্টর অব মেডিক্যাল এডুকেশন ওই ঘটনার তদন্ত করবেন।
গত শুক্রবার ও শনিবার ওই ৯টি শিশুর মৃত্যু হয় মালদহ সদর হাসপাতালে। ঘটনার সময়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, সদর হাসপাতালের সুপার এবং মালদহ মেডিক্যাল কলেজের ওই তিন শিশু বিশেষজ্ঞ জেলার বাইরে ছিলেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি জানার পরে শনিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা শ্যামাপদ বসাক জেলার সমস্ত স্বাস্থ্যকর্তা ও চিকিৎসকদের ছুটি বাতিল করে দ্রুত কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন। স্বাস্থ্য অধিকর্তার নির্দেশ পেয়ে রবিবার সকালে কেবলমাত্র সদর হাসপাতালের সুপার কাজে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু মালদহ মেডিক্যাল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপ্যাল, কলেজের তিন শিশু বিশেষজ্ঞ শিক্ষক এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কাজে যোগ না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা। পাশাপাশি মালদহ মেডিক্যাল কলেজের বেশিরভাগ শিক্ষক চিকিৎসকরা কাজ না করেই বেতন তুলছেন বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা।
স্বাস্থ্য অধিকর্তা শ্যামাপদ বসাক বলেন, “মালদহ সদর হাসপাতালে শিশু মারা যাচ্ছে অথচ জেলায় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, মেডিক্যাল কলেজের তিন শিশু বিশেষজ্ঞ নেই। এসএমএস পাঠিয়ে দ্রুত কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ পাঠানোর পরে কেবল সুপার কাজে যোগ দিয়েছেন। বাকিরা কেউ কাজে যোগ দেননি। মেডিক্যাল কলেজের বেশিরভাগ শিক্ষক চিকিৎসক মাসে ১-২ দিন কাজ করে পুরো মাসের বেতন তুলছেন। ডিরেক্টর অব মেডিক্যাল এডুকেশনকে তদন্ত করে ওই শিক্ষক চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলব।” কাজ না করা সত্ত্বেও ওই শিক্ষকদের ওয়ার্কিং স্টেটমেন্ট কী করে কলেজের অধ্যক্ষ দিচ্ছেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা।
এসএমএস পেয়েও শিক্ষকদের কাজে যোগ না দেওয়ার ব্যাপারে মালদহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, “ভাইস প্রিন্সিপাল রওনা দিয়ে দিয়েছেন। বাকি শিক্ষক চিকিৎসকদের খবর পাঠানো হয়েছে।” কাজ না করে বেতন তোলার ব্যাপারে অধ্যক্ষের বক্তব্য, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। সকলেই কাজ করছেন। ডিউটি ছিল না বলেই তাঁরা বাড়ি গিয়েছিলেন। সকলেই ফিরে আসছেন।”
সদর হাসপাতালের সুপার হিমাদ্রি আড়ি বলেন, “সাতদিনের ছুটি নিয়ে বাড়ি গিয়েছিলাম। গিয়েই অসুস্থ হয়ে পড়ি। কাল এসএমএস পাওয়ার পরেই আজ সকালে মালদহে পৌঁছে কাজে যোগ দিয়েছি। এসে দেখি আর কেউ আসেননি। আজ সকালে মেডিক্যাল কলেজের একজন শিক্ষক শিশু বিশেষজ্ঞকে শিশু বিভাগে দেখতে পেয়েছি। বাকিদের দেখা পাইনি।” সুপারের দাবি, মালদহ সদর হাসপাতালে শিশু মৃত্যুর হার জাতীয় হারের অধের্ক। এর মধ্যে মালদহ সদর হাসপাতালে দুর্বল পরিকাঠামো ও কম চিকিৎসক নিয়ে সাফল্য অনেক বেশি। |