সংস্কৃতি যেখানে যেমন

সমতট নাট্যমেলা উত্তরপাড়ায়
--নিজস্ব চিত্র।
দ্বাদশ বর্ষে জমজমাট ‘সমতট নাট্যমেলা’। সমতট নাট্যসংস্থা আয়োজিত দুই পর্বে এই মেলার শুরু ২১ ডিসেম্বর। প্রথম তিন দিন ‘বিকল্প থিয়েটারের মেলা’ নামে বাদল সরকারের ৬টি অঙ্গন-নাটক অনুষ্ঠিত হয় জয়কৃষ্ণ সাধারণ গ্রন্থাগারের মাঠে। বাদল সরকারের উপরে ‘পাখিরা’ নামে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। অন্য নাটকগুলি শুরু হয়েছে ২৪ ডিসেম্বর থেকে, উত্তরপাড়ার গণভবনে। ১০ দিনের এই নাট্যমেলায় কলকাতা ও শহরতলির বিভিন্ন নাট্যদলের নাটক দেখতে প্রতিদিনই মানুষের ঢল নামছে। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, টিকিট বিক্রির টাকার ৩০ শতাংশ দুঃস্থ ও অসুস্থ নাট্যকর্মীদের জন্য গঠিত ‘বঙ্গ-নাট্য সংহতি কল্যাণ তহবিল’-এ তুলে দেওয়া হবে।
সমতট ছাড়াও মেলায় যোগ দিয়েছে আখর, লোককৃষ্টি, প্রাচ্য, নান্দীকার, শূদ্রক, স্বপ্নসন্ধানী, সংস্তব, সায়ক ও রঙরূপের মতো নাটকের দল। গণভবনে শনিবার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় আখরের ‘জানে কলকাত্তা’ নাটক দিয়ে। গহরজানের জীবনী নিয়ে এই নাটকে আনন্দী বসু অভিনয় ও গানে মাতিয়ে দেন। বিভিন্ন দিনে অভিনয় করবেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত, রজতাভ দত্ত, দেবশঙ্কর হালদার, মেঘনাদ ভট্টাচার্য, দেবদূত ঘোষের মতো শিল্পীরা। প্রতি বছরের মতো ছোটদের জন্য নাট্যমেলায় বিশেষ দিন হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে ২৯ ডিসেম্বর। সেই দিনে অভিনীত হবে সমতট প্রযোজিত দু’টি নাটক ‘সাতমার পালোয়ান’ ও ‘ভবম নাপিত’। বিভিন্ন জেলায় ইতিমধ্যেই ‘সাতমার পালোয়ান’-এর ১৮টি শো হয়ে গিয়েছে। নাটকটি সাড়া ফেলেছে ছোটদের মধ্যে। বড়দেরও ছেলেবেলায় ফিরিয়ে দিয়েছে নাটকটি।

চন্দননগর বইমেলা
ছবি: তাপস ঘোষ।
বিপুল সমারোহে শুরু হয়েছে ‘চন্দননগর বইমেলা’। ইস্পাত সঙ্ঘের পরিচালনায় এবং চন্দননগর পুরসভার সহযোগিতায় কুঠির মাঠে গত ২৩ ডিসেম্বর এই মেলার উদ্বোধন করেন সাহিত্যিক দিব্যেন্দু পালিত। মেলা এ বার ১২ বছরে পড়ল। চলবে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত। আনন্দ, দেব সাহিত্য কুটির, দে’জ-সহ ৭০টিরও বেশি প্রকাশনার স্টল, লিটল ম্যাগাজিন প্যাভেলিয়ন, সাংস্কৃতিক মঞ্চ নিয়ে সেজে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ। স্মরণিকা ও থিম প্যাভেলিয়নে এ বারের থিম ‘কারা সাহিত্য’। ‘যে ধ্রুবতারা’ শীর্ষক ক্রমিক পুস্তিকায় এ বছরের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়েছে বিপ্লবী মাখনলাল ঘোষাল ও সুহাসিনী গঙ্গোপাধ্যায়কে। বইমেলার পাশাপাশি রয়েছে সঙ্গীত, নাটক, আবৃত্তি, সেমিনার। রয়েছে ‘পাঠকের মুখোমুখি’ অনুষ্ঠান। ‘কী বই ভাল লাগে’ জানতে চলছে সমীক্ষাও। শিক্ষার আলো সকলের কাছে পৌঁছে দিতে দরিদ্র ও আর্থিক ভাবে অনগ্রসর ঘরের ছেলেমেয়েদের হাতে প্রয়োজনীয় পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়ার ব্যবস্থাও করেছেন উদ্যোক্তারা। বইমেলা কমিটির সম্পাদক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা চাই, বঙ্গ সংস্কৃতির প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে এই বইমেলা হয়ে উঠুক সবার মিলনমেলা।”

নৈহাটি উৎসবে সমরেশ-স্মরণ
দীর্ঘ দু’ দশক পরে নৈহাটি রেল ময়দান জমজমাট নৈহাটি উৎসব তথা বইমেলা ঘিরে। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী রবিবার এই উৎসবের উদ্বোধন করেন। এই উৎসবের উদ্যোক্তাদের তরফে আহ্বায়ক পার্থ ভৌমিক জানান, ক্যালকাটা বুকসেলার্স গিল্ডের সহযোগিতায় মহানগরীর বৃত্তের বাইরে এই প্রথম কোনও বইমেলার আয়োজন সম্ভব হল। তবে শুধুই বইয়ের বিকিকিনি নয়, উৎসবের এই আঙিনায় পাশাপাশি রয়েছে প্রতিদিনই নৈহাটি ও সংলগ্ন অঞ্চলের কৃতী ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্মারক বক্তৃতা, আলোচনার আয়োজন। রবিবার সমরেশ বসু স্মারক বক্তৃতায় এই সাহিত্যিকের ছোটগল্প নিয়ে বললেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সমরেশকে কাছ থেকে দেখার ছবি ফুটে উঠল অশোকরঞ্জন সেনগুপ্তের স্মৃতিচারণে। আসরে আরও আছে শিশুমেলা, নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উৎসব চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত, বিকেল তিনটে থেকে আটটা পর্যন্ত।

জমজমাট অপরাধ ভঞ্জন মেলা
অপরাধ-ভঞ্জন মেলায় এসে পুজো দিলে সব পাপ ধুয়ে যায়। এমনই বিশ্বাস করেন কুলিয়ার মানুষ। আর প্রতিবারই কৃষ্ণ একাদশীতে আয়োজিত এই মেলায় তাই পুজো দিতে আসেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। এ বারও কুলিয়ার এই অপরাধ-ভঞ্জনের মেলা জমজমাট। প্রতিবারের মতো এ বারও কল্যাণীর গয়েশপুরে এই মেলা দেখতে ভিড় করেছেন বহু মানুষ। গয়েশপুরের কুলিয়ার এই মেলা অনেক প্রাচীন। এখানেই রয়েছে নিতাই-গৌরের মন্দির। রয়েছে রাধা গোবিন্দ এবং শিবের মন্দিরও। স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস এই মন্দিরে পুজো দিলে পাপমুক্ত হওয়া যায়। এখানকার যমুনা খালে স্নান করে মন্দিরে পুজো দিচ্ছেন বহু মানুষ। বুধবার শুরু হওয়া এই মেলার আজই শেষ দিন।
চাকদহের শিমুরালীর বাসিন্দা লক্ষ্মী সরকার বললেন, “প্রতিটি মানুষই জ্ঞানে-অজ্ঞানে অনেক অপরাধ করেন। এই মেলায় এসে পুজো দিলে সব পাপের ক্ষমা পাওয়া যায়।” গাংনাপুরের বাসিন্দা গীতা মজুমদার বলেন, “এই ঠান্ডায় যমুনায় স্নান করাতে সমস্যা হচ্ছে এনেকেরই। এই শীতে আসতে পারব ভাবিনি। তবে সব বাধা পেরিয়ে চলেই এলাম। না এলে আক্ষেপ করতাম।” এলাকার মানুষের মুখে শোনা যায় এই মেলা কমপক্ষে পাঁচশো তিরিশ বছরের পুরনো। কথিত আছে চপল-গোপাল কুলিয়ায় এসে চৈতন্যদেবের শরন নিয়ে পাপমুক্ত হয়েছিলেন। কল্যাণীর বাসিন্দা শুধাময় গুহঠাকুরতা বলেন, “ভক্তরা এসে যাতে ওই যমুনা খালে স্নান করতে পারেন, সে জন্য ঘাটও তৈরি করা হয়েছে। সংস্খার করা হয়েছে মন্দির। দর্শনার্থীদের জন্য ভোগের ব্যবস্থাও রয়েছে।” গয়েশপুরের পুরপ্রধান গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “মানুষের স্বাচ্ছন্দের কথা মাথায় রেখে এখানে আমরা পানীয় জল, শৌচাগারের ব্যবস্থা করেছি।”

রানাঘাটে অনুষ্ঠান নিজস্ব
নেতাজি বিদ্যামন্দির মঞ্চে শনিবার স্থানীয় একটি পত্রিকার তরফে হয়ে গেল একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উদ্বোধন করেন প্রাক্তন রাজ্যপাল শ্যামলকুমার সেন। ছিলেন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সুকুমার মাহাতো প্রমুখ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.