নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
বিপন্ন হয়ে পড়েছে বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ির হেরিটেজ সিংহদুয়ার। জলপাইগুড়ি শহরের অন্যতম প্রাচীন ঐতিহ্য রাজবাড়ির সিংহদুয়ারটি গত সেপ্টেম্বর মাসের ভুমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কয়েকটি মাঝারি ধরনের ফাঁটল সহ একদিকে সামান্য হেলে যায়। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, সিংহদুয়ারের ভেতরে অসংখ্য ফাঁটল দেখা দিয়েছে। প্রতিনিয়ত ফাঁটলের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। যে কোনও মুহূর্তে সিংহদুয়ারটি ভেঙে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বাস্তুকাররা। জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “যে ভাবেই হোক সিংহদুয়ারকে রক্ষা করা হবে। এসজেডিএর তরফে ১৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পুরসভার থেকেও টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। হেরিটেজ স্থাপত্য বক্ষণাবেক্ষণের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কলকাতার একটি পেশাদারি সংস্থাকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ঐতিহ্যবাহী সিংহদুয়ারটিকে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরেই মেরামতির জন্য উদ্যোগী হয় জলপাইগুড়ি পুরসভা। কলকাতার একটি পেশাদারি সংস্থাকে মেরামতির কাজের বরাত দেওয়া হয়। |
শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কতৃপক্ষের তরফে সিংহদুয়ার মেরামতির জন্য ১৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। সেই মতো কাজ শুরু করে পেশাদারি সংস্থাটি। কাজ শুরুর পরে দেখা যায়, সিংহদুয়ারের শুধু বাইরেই নয় ভেতরেও বড় রকমের ফাঁটল ধরেছে। দ্রুত ফাঁটল মেরামত না করা হলে যে কোনও দিন সিংহদুয়ার ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই মতো অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে বড় বড় ধাতব স্তম্ভ ভেতরে ঢুকিয়ে সিংহদুয়ারটিকে রক্ষা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি পুরসভা, এমইডি এবং এসজেডিএর বাস্তুকারদের সঙ্গে পেশাদারি সংস্থার প্রতিনিধিদের বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। ডুয়ার্স থেকে জলপাইগুড়ি শহরে ঢোকার মুখেই অবস্থিত বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ির সিংহদুয়ার। হেরিটেজ তালিকায় থাকা ওই সিংহদুয়ারকে বছর চারেক আগে জলপাইগুড়ি পুরসভা সংস্কার করে। সিংহদুয়ারকে মাঝখানে রেখে দু’দিকে সড়ক তৈরি করা হয়।
জলপাইগুড়ি শহরের পরিচিতির অন্যতম প্রতীক এই সিংহদুয়ার। সরকারি বা বেসরকারি যে কোনও ক্ষেত্রেই জলপাইগুড়ি শহর বোঝাতে সিংহদুয়ারের ছবি ব্যবহার করা হয়। বলতে গেলে জলপাইগুড়ি শহরের অন্যতম ‘লোগো’ হিসেবে সিংহদুয়ারের ব্যবহার খুবই জনপ্রিয়। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভুমিকম্পে সিংহদুয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সব মহলেই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। জলপাইগুড়ি পুরসভার নির্বাহী বাস্তুকার যশোপ্রকাশ দেবদাস বলেন, “সিংহদুয়ারের ভেতরের কাঠামোর যে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে তা খুবই উদ্বেগজনক। প্রতিদিন একটু একটু করে ভেতরের ফাঁটল বাড়ছে। সিংহদুয়ারের কাঠামোর বিভিন্ন সংযোগস্থল নড়ে গিয়েছে। খুবই দুর্বল এবং নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে এই হেরিটেজ স্থাপত্যটি।” |