নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
রাত হোক আর দিন, সুযোগ পেলেই গ্যাস সিলিণ্ডার চুরি করে এলাকা সন্ত্রস্ত করে তুলেছিল ‘জিসিএল’ গ্যাং। তালা ভেঙ্গে সাইকেল চুরি করতেও তারা সিদ্ধহস্ত। গ্যাস সিলিণ্ডার ও সাইকেল চুরির জন্যই অপরাধ জগতে ‘জিসিএল’ গ্যাং নামে পরিচিত হয়ে ওঠে তারা। তাদের হদিশ করতে নাজেহাল হয়ে পড়েছিল পুলিশ। অবশেষে শনিবার সাদা পোশাকের পুলিশ ধরল ‘জিসিএল’ গ্যাংয়ের ৯ সদস্যকে। অধিকাংশই স্কুলছুট। ওই তরুণরা অপরাধ জগতে (গ্যাস অ্যাণ্ড সাইকেল লিফটার) ‘জিসিএল’ গ্যাং নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে। ধৃতদের কাছ থেকে ৪০টি গ্যাস সিলিণ্ডার এবং একটি সাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। জলপাইগুড়ির এক পুলিশ কর্তা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে গ্যস সিলিণ্ডার ও সাইকেল চুরি করে এলাকা সন্ত্রস্ত করে তুলেছিল ওই দলটি। দলটিকে ধরতে সাদা পোশাকের পুলিশ নজরদারি চালায়।” জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “গ্যাস সিলিণ্ডার ও সাইকেল চুরির অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম সুশান্ত রায়, প্রাণগুরুঙ্গ মণ্ডল, রাজু বর্মন, সুদীপ বারুই, প্রদীপ বারুই, জীবনজ্যোতি জানা, গোপাল সাহা, চিত্ত দাস, রিপন আলি। এদের প্রায় প্রত্যেকের বাড়ি মোড়বাজার, ওভারব্রিজ, ঘোড়াবাড়ি এলাকায়। চিত্তর বাড়ি কোচবিহারের সাহেবেরহাটে। সুশান্ত সহ প্রথম ৩ জন সরাসরি চুরির সঙ্গে যুক্ত। বাকিরা গ্যাস সিলিণ্ডার কেনাবেচা এবং বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার কাজে যুক্ত। ওই দলে আরও কয়েকজন রয়েছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। তাদের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এনজেপির বিভিন্ন বসতি এলাকায় ঘুরে বেরিয়ে প্রথমে তথ্য সংগ্রহ করত সুশান্তরা। কোথাও কী অবস্থায় গ্যাস সিলিণ্ডার রাখা হয়, সাইকেল রাখা হয়, সেগুলি কীভাবে চুরি করা যায় তা নিয়ে ছক কষার পরই অভিযান শুরু করত তারা। তালা ভাঙার কয়েকটি লোহার যন্ত্র নিয়ে রাতের অন্ধকারে, অনেক সময় দিনের বেলাতেও হানা দিত দুষ্কৃতী দলের ৩ সদস্য। ১ জন বাইরে পাহারায় থাকত। বাকি ২ জন বাড়ির ভিতরে ঢুকে দরজার তালা ভেঙে গ্যাস সিলিণ্ডার চুরি করত। পরে সাইকেলের সাহায্যে তা নিয়ে চম্পট দিত দুষ্কৃতীর দলটি। একইভাবে সাইকেলও চুরি করত তারা। শুক্রবার রাতে সাদা পোশাকের পুলিশ মোড় বাজার এলাকায় ‘জিসিএল’-এর ২ জন সদস্যকে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে। কিছুক্ষণ পর ওই ২ জনকে শক্তিগড় এলাকায় দেখতে পায় পুলিশ। তাদের ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই পুলিশ বিষয়টি টের পায়। তাদের কাছ থেকে তালা ভাঙ্গার কয়েকটি লোহার যন্ত্র দেখতে পায়। এনজেপি ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে ধৃত সুশান্ত সহ ২ জনকে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করে। তারা ৭ জনের নাম জানায়। শনিবার সারাদিন ধরে মোড়বাজার, ঘোড়াবাড়ি শক্তিগড় এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। চুরির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে রাজু বর্মন নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। মোড়বাজারে একটি পানের দোকানে অভিযান করে সুদীপ ও প্রদীপ গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে ৩৫টি গ্যাস সিলিণ্ডার উদ্ধার করা হয়। |