দাবি পাহাড় নিয়ে সর্বদলেরও
রাজ্য সরকারের কাজের শ্বেতপত্র চাইল সিপিআই
তুন রাজ্য সরকারের কাজের খতিয়ান নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি তুলল বাম শরিক সিপিআই। শিলিগুড়িতে সিপিআইয়ের রাজ্য সম্মেলন উপলক্ষে সমাবেশে রবিবার দলের সাধারণ সম্পাদক এ বি বর্ধন বলেছেন, “নতুন সরকারের সাত মাস বয়স হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ভোটের আগে ও পরে বহু প্রকল্প ঘোষণা করেছেন। এখনও করে চলেছেন। টাকা বরাদ্দের কথাও বলেছেন। কিন্তু কী কাজ হয়েছে, মানুষের জানা প্রয়োজন। উনি এখনই শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন।” প্রত্যাশিত ভাবেই রাজ্য ও কেন্দ্রের নানা নীতির সমালোচনাও করেন বর্ধন।
চলতি মাসেই সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্মেলনের সমাবেশ থেকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের দিনক্ষণও ঘোষণা করে দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি বিগ্রেড সমাবেশের মাধ্যমে বৃহত্তর আন্দোলনের সূচনার কথাও বলেছেন তাঁরা। প্রয়োজন-ভিত্তিতে আন্দোলনের কথা স্পষ্ট হয়েছে শরিক সিপিআই নেতাদের কথাতেও। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা লোকসভার দলনেতা গুরুদাস দাশগুপ্তের বক্তব্য, “নতুন সরকারকে আরও সময় দিতে আমরা প্রস্তুত। ভাল কাজ করলে অবশ্যই প্রশংসা, সহযোগিতা করব। কাজ ঠিকঠাক না-হলে আন্দোলন, বিরোধিতা করা হবে। শ্রমিক ধর্মঘটের জন্য মাধ্যমিক পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদও জানিয়েছি। শ্রমিক ধর্মঘটে আমরা তৃণমূলকেও যোগ দিতে আহ্বান করছি।” মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য পরীক্ষা পিছনোর সময়েই জানিয়ে দিয়েছেন, ওই ধর্মঘট তাঁরা কোনও ভাবেই সমর্থন করেন না।
সিপিআইয়ের রাজ্য সম্মেলনে প্রকাশ্য সমাবেশের মঞ্চে গুরুদাস দাশগুপ্ত,
মঞ্জুকুমার মজুমদার এবং এ বি বর্ধন। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
দার্জিলিং পাহাড় সমস্যা নিয়ে দ্রুত সর্বদল বৈঠকেরও দাবি তুলেছেন সিপিআই নেতারা। গুরুদাসবাবু বলেন, “পাহাড়ে জিটিএ (গোর্খাল্যান্ড আঞ্চলিক প্রশাসন) চুক্তি হয়েছে। সেটা না-দেখলে বুঝতে পারব না, কী হয়েছে। এর মধ্যে গোর্খাল্যান্ডের ফের দাবি উঠেছে। খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। মুখ্যমন্ত্রীর উচিত, দ্রুত সর্বদল বৈঠক ডাকা। আমরাও আলাদা রাজ্যের বিরোধী। সবাই মিলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা মিটবে।”
বস্তুত, জিটিএ গঠনের প্রক্রিয়ায় দেরির অভিযোগ তুলে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। দলের যুব সংগঠন আলাদা রাজ্যের দাবিতে মিছিল, সভার পরিকল্পনা নিয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্যের উপরে চাপ বাড়াতেই মোর্চা নেতারা যে এই নীতি নিয়েছেন, তা স্পষ্ট। সিপিআই নেতাদের মতে, সর্বদল বৈঠকের মাধ্যমে মোর্চার উপরে ‘পাল্টা চাপ’ সৃষ্টির কৌশল রাজ্য সরকার নিতেই পারে। বিশেষত, রাজ্যের বেশির ভাগ দলই যখন আলাদা রাজ্যের বিরোধী।
‘দু-মুখো নীতি’ নিয়ে চলার অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘অবতার’, ‘স্ব-বিরোধী’ বলেও সমালোচনা করেন সিপিআই নেতারা। বর্ধনের কথায়, “উনি অবতার মনে হয়! রেল মন্ত্রক ও সরকারি সাহায্যের জন্য দিল্লিতে কংগ্রেসকে সমর্থন করে আসছেন। আর কলকাতায় এসে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলে কেন্দ্রের সমালোচনা করছেন!” আর গুরদাসবাবু কথায়, “আমরা এখনই দ্বিচারিতা বলছি না। তবে পুরোটাই স্ব-বিরোধিতা! বিদেশি বিনিযোগ, মূল্যবৃদ্ধি, পেট্রোলের দাম সব ক্ষেত্রেই তা দেখা যাচ্ছে।”
মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম, কৃষক স্বার্থ, গণবণ্টন ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করার দাবি উঠেছে সমাবেশে। সেই সঙ্গে এসেছে লোকপাল বিল নিয়ে অণ্ণা হজারের ভূমিকার সমালোচনাও। লোকসভায় যা বলেছিলেন, সেই সুরেই বর্ষীয়ান সাংসদ গুরুদাসবাবু এ দিনও বলেছেন, “গাঁধীজিই দেশের জনক। শক্তিশালী লোকপাল বিল হোক, আমরাও চাই। সংসদে আলোচনা করে আইন হবে। পাঁচটা লোক বাইরে বসে আন্দোলন করতে পারে। কিন্তু কী আইন হবে, তা ঠিক করতে পারে না।” একই সুর ছিল বর্ধনেরও।
বড় শরিক সিপিএমের বিশেষ কোনও সমালোচনা অবশ্য এ দিন সিপিআই নেতারা করেননি। বামফ্রন্ট সরকার প্রসঙ্গে গুরুদাসবাবু শুধু বলেন, “আমাদের সকলের ভুলত্রুটি হয়েছিল ঠিকই। তা সংশোধন করতে হবে। তবে কিছু কাজই যে হয়নি, তা ঠিক নয়। আরও করা যেত। রাজ্য সম্মেলনে সব আলোচনা করব।” দার্জিলিং জেলা সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী জানান, ২৮ তারিখ পর্যন্ত দীনবন্ধু মঞ্চে সম্মেলনে সারা রাজ্য থেকে ৪০০ প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.