জনবসতির কাছে ক্রাশার তৈরির অভিযোগের তদন্ত শুরু করল প্রশাসন। কাশীপুর ব্লকের লায়েকডি গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ এলাকায় একটি ক্রাশার তৈরির কাজ বন্ধ করার দাবিতে রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসকের কাছে গণস্বাক্ষর করা স্মারকলিপি জমা দেন। রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসক আবিদ হোসেন বলেন, “গ্রামবাসীরা ক্রাশার তৈরির কাজ বন্ধ করার জন্য স্মারকলিপি দিয়েছেন। কাশীপুরের বিডিও’কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
ক্রাশার নির্মাণ করার কাজ এখন প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। স্থানীয় মনিহারা গ্রামের বাসিন্দা সিপিএম নেতা শুভেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর স্ত্রী’র নামে ক্রাশারটি তৈরি করছেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, যেখানে ক্রাশারটি তৈরি করা হচ্ছে, তার কাছেই রয়েছে একটি উচ্চমাধ্যমিক স্কুল। পাশেই রয়েছে একটি বড় পুকুর। বসতি এলাকাও দূরে নয়। ফলে ক্রাশার তৈরি হলে এলাকায় দূষণ ছড়াবে বলে অভিযোগ। ব্লক প্রশাসনের কাছেও অভিযোগ জানানো হয়েছিল। ক্রাশার থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে মনিহারা উচ্চ বিদ্যালয়। সেখানকার প্রধান শিক্ষক সুনীলকুমার দে’র আশঙ্কা, “ক্রাশার চালু হলে ভাঙা পাথরের ধুলো স্কুলে উড়ে আসবে। পাথর ভাঙার শব্দও পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট করবে।” কাছেই লায়েকবাঁধ নামের বড় পুকুর রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা কামাখ্যা লায়েক, গণেশ লায়েক, বৈদ্যনাথ লায়েকদের অভিযোগ, “নানা প্রয়োজনে লায়েকবাঁধ পুকুরের জল ব্যবহার করা হয়। ক্রাশারটি চালু হলে ওই পুকুরের জল নোংরা হয়ে যাবে। সেই জল ব্যবহার করলে নানা ধরনের রোগ ছড়াবে।” এ ছাড়া ক্রাশার থেকে উড়ে আসা ধুলোয় জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্রাশার তৈরি করার আগে ব্লক প্রশাসন, ভূমি ও ভূমি সংস্কারের দফতর, জেলাশাসকের দফতর-সহ নানা দফতর থেকে ছাড়পত্র নিয়ে আসতে হয়। এ ছাড়া পরিবেশগত দিক খতিয়ে দেখে কনসেন্ট অব এসটাবলিস্টমেন্ট দেওয়ার কথা সংশ্লিষ্ট বিডিও অথবা মহকুমাশাসক। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এ ক্ষেত্রে জমবসতি ও স্কুল কাছে থাকায় ক্রাশার তৈরির জন্য ওই ছাড়পত্র পাওয়ার কথা নয়। রাজ্যে পালাবদলের আগে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে শুভেন্দুবাবু ক্রাশার তৈরির কাজ শুরু করেন। মহকুমাশাসক বলেন, “তদন্তে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হবে। নিয়ম না মানা হলে ক্রাশার তৈরির কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।” শুভেন্দুবাবুর দাবি, “ক্রাশার নির্মাণের প্রয়োজনীয় অনুমতি রয়েছে। বিধি ভাঙা হয়নি।” |