সমাজের মূলস্রোতে ফিরতে ফের প্রশাসনের কাছে আত্মসমর্পণ করলেন চার মাওবাদী। সুজিত ওরফে সন্দীপ সরকার, প্রভাত রাজোয়াড়, সঞ্জয় রাজোয়াড় এবং আয়েন রাজোয়াড় নামে ওই চার মাওবাদী রবিবার বহরমপুর থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশের দাবি, এই চার জনকে তারা বছর খানেক ধরে খুঁজছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানাও ছিল।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার ভরতলাল মিনা বলেন, “এই চার জনের বিরুদ্ধেই মাওবাদী কাজকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ২০১০-এর ১১ নভেম্বর কুন্দীপ সরকার নামে এক যুবককে মাওবাদী সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়। জেরার মুখে সে তার পাঁচ সঙ্গীর নাম জানায়। তখনই এই চার জনের নাম জানা যায়। সন্তোষ রাজোয়ার নামে আরও এক জনকে পুলিশ খুঁজছে।”
সম্প্রতি স্বাভাবিক জীবনে ফেরার লক্ষ্যে বেশ কয়েক জন মাওবাদী পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাঁদের মধ্যে জাগরী বাস্কে, রাজারাম সোরেন, দুর্যোধন রাজোয়াড়ের মতো প্রথম সারির মাওবাদী নেতা-নেত্রী ও স্কোয়াড সদস্য রয়েছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন যে চার জন আত্মসমর্পণ করেছেন, তাঁরা সিপিআই (মাওবাদী)-র নদিয়া-মুর্শিদাবাদ জোনাল কমিটির গ্রাম কমিটির সদস্য। পুলিশ সুপারের দাবি, “রাজ্য সরকার আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের জন্য যে ‘প্যাকেজ’ ঘোষণা করেছে, এই চার জন তার আওতায় আসছেন না। কারণ, এরা কেউই জঙ্গলমহলের তিন জেলার বাসিন্দা নন।”
এই চার জনেরই বাড়ি বহরমপুর থানা এলাকায় ভাগীরথীর তীরে। সন্দীপ ও প্রভাতের বাড়ি চরমহুলায়। সঞ্জয় চর হালালপু এবং আয়েন চরযদুপুরের বাসিন্দা। সন্দীপ এ দিন বলেন, “আমি ২০০৭ সালে একবার কুন্দীপের সঙ্গে জঙ্গলমহলে গিয়েছিলাম। বারো দিন থেকে চলে আসি। সেখানে সংগঠন বাড়ানোর জন্য কী করতে হবে, সেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।” তাঁর কথায়, “কুন্দীপ ধরা পড়ার পরে সেই ২০১০ থেকে আমরা পুলিশের তাড়া খেয়ে বেড়াচ্ছি। ফলে, আমাদের সংসার এক রকম অনাথ হয়ে গিয়েছে। আমরা চাইছিলাম সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে। সে কারণেই আত্মসমর্পণ করেছি।” বাকি তিন জন অবশ্য জঙ্গলমহলে কখনও যাননি বলে দাবি করেছেন। প্রভাতের দাবি, “আমরা শুধু দু’একবার কুন্দীপের বাড়িতে মাওবাদীদের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলাম। কোনও নাশকতামূলক কাজকর্ম করিনি। সেই রকম কোনও অভিযোগও আমাদের বিরুদ্ধে নেই।” |