বড়দিনে ভেঙেছে ধর্মের বেড়া
কাল থেকে নাওয়া-খাওয়া ভুলে বড়দিনের উৎসবের চাঁদা তুলে বেড়াচ্ছিলেন সাহেব শেখ। পেশায় গাড়ি চালক এই মধ্য চল্লিশের মানুষটিই নির্মলনগর যুবক বৃন্দের বড়দিন উৎসব কমিটির সহ সম্পাদক। বলতে গেলে এই উৎসবের প্রাণ পুরুষ। আবার যে মানুষটি পাড়ার পুজো থেকে বড়দিন, সব উৎসবই সফল করতে প্রাণপাত করেন, তাঁর নাম শান্তনু ব্রহ্ম। আর যে গোশালা সেই উপলক্ষে তৈরি করা হয়েছে, তার মূল দায়িত্বে সম্পাদক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী অনুপ বিশ্বাস।
বড়দিনের মেলায়। কৃষ্ণনগরে ছবি তুলেছেন সুদীপ ভট্টাচার্য।
কৃষ্ণনগরের প্রবীণ বাসিন্দারা জানান, এই শহরের চরিত্রটাই এই রকমের। এই শহরে যেমন জগদ্ধাত্রী পুজোয় ঝাঁপিয়ে পড়েন দুলাল শেখ থেকে রহমতেরা, তেমনই ঈদের দিন সমান আনন্দে উৎসবে মেতে ওঠেন কাজল মিত্র বা অনন্ত বসু, আবার বড়দিনের দিনেও সব ধর্ম মিলে মিশে যায়। প্রবীণ বাসিন্দারা বলেন, এই শহরটির নিজেরই একটি চরিত্র রয়েছে, যেখানে ধর্ম কোনও বেড়া তোলেনি। সাহেব শেখ বলেন, “গাড়ি চালানোর পেশা আমার। তাতে আর সময়ের কোনও ঠিক নেই, তাই নামাজটা পড়া হয় না রোজ। কিন্তু ঈদ পালন করি ভক্তি ভরে। সে ভাবেই মেতে উঠি পাড়ার পুজোয়। বড়দিনের উৎসবও তেমনই একটা দিন, যে দিন আমরা সকলে মিলেই আনন্দে মেতে উঠি।” শহরের প্রবীণেরা জানান, আসলে দীর্ঘদিন ধরে পাশাপাশি বাস করতে করতে এখন উৎসবটাই এখানে প্রধান। সেই শরত থেকে একের পর এক উৎসবের নির্ঘণ্ট এই শহরে মানা হয়, যার পরিচয় প্রধানত উৎসবেই সীমাবদ্ধ।
শান্তনুবাবুর কথায়, “আমরা চাই উৎসবটাই বড় করে পালন করতে। তার উপলক্ষ কখনও কোনও পুজো, কখনও বড়দিন, কখনও ঈদ।” আর এই উৎসব প্রাঙ্গণে সকলের সঙ্গে সকলের যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে, তা একটি সুস্থ সামাজিক জীবনের পথই প্রশস্ত করে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অন্য সময়ে লোকে ব্যস্ত থাকেন। তাই অনেক সময় কাছাকাছি বাড়ি হলেও দেখা হয় না। উৎসবের সময় খুশির মেজাজে দেখা হয়। সেই গল্প-গাছার উপরে নির্ভর কের তৈরি হয়ে ওঠে সামাজিক বন্ধনও। তখন রাতবিরেতে সুব্রতের মা অসুস্থ হয়ে পড়লে নিজে থেকেই গাড়ি বার করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান রহমত শেখ। কুন্তল ভট্টাচার্যের বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে রাত জাগেন স্থানীয় বাসিন্দা আলমগির।
নির্মলনগর, আরশিপাড়া, কেউড়াতলা, বাচ্চুপল্লি, মুক্তিনগর, জয়ন্তী পল্লিতে তাই খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের পাশে এই উৎসবে দাঁড়িয়ে যান সব ধর্মেরই মানুষ। বড়দিনের উৎসবের দিন কৃষ্ণনগর ক্যাথলিক চার্চে মোমবাতি জ্বালিয়ে যে ধর্মানুষ্ঠান হয়, সেখানে দেখা যায় সংহিতা চন্দকে। ফাদার রবীন মণ্ডলের বক্তব্য, “ধর্মের গণ্ডি ছাড়িয়ে বড়দিন সব ধর্মের মানুষের কাছে যেন একটা মিলনোৎসব। আমি দেখেছি, গির্জায় নানা ধরনের মানুষই আসছেন। আসলে এক সঙ্গে থাকতে থাকতে উৎসবের প্রাঙ্গণটাই এই ভাবে বড় হয়ে উঠেছে।”
রানাঘাটে অনুষ্ঠান। নেতাজি বিদ্যামন্দির মঞ্চে শনিবার স্থানীয় একটি পত্রিকার তরফে হয়ে গেল একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উদ্বোধন করেন প্রাক্তন রাজ্যপাল শ্যামলকুমার সেন। ছিলেন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সুকুমার মাহাতো প্রমুখ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.