অসিযুদ্ধ: প্রাক্তন যুযুধান অধিনায়ক যখন কলম হাতে
সচিনদের বয়স হচ্ছে, সহবাগই ভাগ্য গড়ে দেবে
হালফিলে এত গুরুত্বপূর্ণ বক্সিং ডে টেস্ট ম্যাচ আর খেলেনি অস্ট্রেলিয়া। কেপ টাউন-বিপর্যয় আর সপ্তাহ খানেক আগে নিউজিল্যান্ডের কাছে ওদের হার নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। এই অবস্থায় ভীষণ শক্তিশালী একটা ভারতীয় দলের বিরুদ্ধে একটা ভাল পারফরম্যান্স টিমটার মধ্যে আত্মবিশ্বাস আমদানি করতে পারে। আর তার জন্য সোমবার বক্সিং ডে টেস্ট ম্যাচটা ভাল ভাবে শুরু করাটা খুব জরুরি।
অস্ট্রেলিয়ার সবথেকে বড় বাধা হতে যাচ্ছে পাঁচ ফুটের সামান্য বেশি এক ভারতীয়। যে কিনা একটা সেশনে যে কোনও টেস্ট ম্যাচের রং বদলে দিতে পারে। আমার মতে, সিরিজটার নিয়ন্তা হতে যাচ্ছে বীরেন্দ্র সহবাগ। সারা ভারত হয়তো সচিন তেন্ডুলকরের শততম সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু সহবাগই হচ্ছে সেই লোক যে একা ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারে। নতুন বলে জেমস প্যাটিনসন বা সিরিজের পরের দিকে প্যাট কামিন্স যাতে ভয়ঙ্কর হয়ে না উঠতে পারে সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব ওর হাতে। আর সহবাগ কিন্তু বরাবর মেলবোর্নে ব্যাট করা উপভোগ করেছে।
ভারতের মিডল-অর্ডার খুবই নাম করা কিন্তু এটাও ঠিক যে, ওদের বয়স হচ্ছে। কয়েক জনের জন্য অবশ্যই এটা শেষ অস্ট্রেলিয়া সফর। যেমন তেন্ডুলকর, দ্রাবিড়, লক্ষ্মণ। আমার মনে হচ্ছে, অস্ট্রেলীয় পেসারদের গতির সামনে ওরা একটু অস্বস্তিতে থাকবে। আমাদের এই পেসারদের খুব একটা খেলেওনি সচিনরা।
জাহির খান আর ইশান্ত শর্মার ফিটনেস নিয়ে প্রচুর কথা হচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয় ওদের নতুন বলের জুটিটা সবাইকে চমকে দেবে। উমেশ যাদব বা তরুণ ভারতীয় স্পিনাররাও এই অস্ট্রেলিয়া টিমকে সমস্যায় ফেলার ক্ষমতা রাখে। ওদেরকে হালকা ভাবে নিলে কিন্তু ভুল হবে। তা ছাড়া ভারত এ বার অনেক আগে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছে। যে ওয়ার্ম-আপ ম্যাচগুলো ওরা পেয়েছে সেগুলো হয়তো নিজেদের তৈরি করার জন্য আদর্শ নয়। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার যথেষ্ট সময় ওরা এ বার পেয়েছে।
অস্ট্রেলীয়দের এই টেস্ট নিয়ে পরিকল্পনাটা ঠিকঠাক দেখিয়েছে। আমি সব সময় বিশ্বাস করে এসেছি যে, আগেভাগে টিমটা জানিয়ে দেওয়া ভাল। এতে একটা পরিষ্কার বার্তা পৌঁছে দেওয়া যায় যে, আমাদের টিমটা থিতু আছে। কোনও সংশয়ে আমরা ভুগছি না। আগেভাগে গেমপ্ল্যানটাও সেরে নেওয়া যায়।
অস্ট্রেলিয়া যে প্রথম একাদশটা খেলাবে বলে ভেবেছে সেটাও আমার বেশ ভাল লেগেছে। এড কাওয়ান কোনও নতুন টিনএজার নয় আর আমার মনে হয় না বক্সিং ডে টেস্টের বিশালতা ওর ওপর কোনও রকম চাপ তৈরি করবে বলে। ডেভিড ওয়ার্নার ভাল ফর্মে আছে। ওর যোগ্য সঙ্গী হতে পারে কাওয়ান। বরং মাইকেল ক্লার্কের সমস্যা ছিল বেন হিলফেনহস আর মাইকেল স্টার্কের মধ্যে এক জনকে বেছে নেওয়া। ক্লার্ক অভিজ্ঞতাকে বেছে ঠিক কাজই করেছে। হিলফেনহস খুব বিশ্বস্ত পারফর্মার। বড় ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ক্লার্ক নিশ্চয়ই সব কিছু মাথায় রেখে ওকে নিয়েছে।
এই বক্সিং ডে টেস্টটা শুধু তরুণদের জন্য বড় মুহূর্ত নয়। এটা রিকি পন্টিং এবং মাইকেল হাসির জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়। দু’জনেই খুব গর্বিত ক্রিকেটার আর ভেতরে-ভেতরে ওরা নিশ্চয়ই স্বীকার করবে যে, সাম্প্রতিক সিরিজগুলোতে ওরা নিজেদের দক্ষতা অনুযায়ী খেলতে পারেনি। বিশেষ করে রিকি পন্টিংকে নিয়ে কথাবার্তা খুব হচ্ছে। টিমে ওর জায়গা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলছে। কিন্তু সকলের মনে রাখা উচিত যে, পন্টিং বা হাসি অতীতে অনেক বড় ম্যাচ উতরে দিয়েছে আর এখনও সেটা করার ক্ষমতা ওদের আছে। পাশাপাশি রিকিদেরও মনে রাখতে হবে যে, অস্ট্রেলিয়া টিমে কারও জায়গা কেনা নয়। ওদের পারফর্ম করতে হবে আর এটাই সময় নিজেকে আবার প্রমাণ করার।
আর একটা বর্ডার-গাওস্কর যুদ্ধ শুরু হওয়ার মুখে। গত বারো বছরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়াকে এত কম্পমান আর কখনও লাগেনি। ভারতীয়রা মনে করে অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ জেতার এটাই সেরা সুযোগ। তবু বলতে চাই, এই অস্ট্রেলিয়া টিমে বেশ কিছু ঝকঝকে তরুণ ক্রিকেটার আছে। যারা কিন্তু ঘরের মাঠে নিজেদের উজাড় করে দিতে সর্বাত্মক ভাবে ঝাঁপাবে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.