নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
বড়দিনে ঝাড়গ্রাম ডিয়ার পার্কের দরজা খুলে দিল বন দফতর। শীতের মরশুমে বন্ধ মিনি চিড়িয়াখানা খুলে যাওয়ায় সকলেই খুশি। ভিড় জমাচ্ছেন উৎসাহী পর্যটকেরা।
জঙ্গলমহলে ক্রমশ শান্তি ফিরে আসায় দূর-দূরান্ত থেকেও অনেকে এ বার ছুটি কাটাতে ঝাড়গ্রামে এসেছেন। ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়ার দেবশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়দের মতোই কলকাতার কসবা থেকে এসেছেন সতীনাথ চক্রবর্তী, জোকা থেকে পম্পা মণ্ডল। উত্তর কলকাতার হাতিবাগান থেকে ঝটিকা-সফরে আসা মার্কিন-প্রবাসী স্বয়মজিৎ রায় তো রীতিমতো আপ্লুত। পেনসিলভিনিয়া স্টেট ইউনির্ভাসিটির উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগে গবেষণারত স্বয়মজিৎ কয়েকদিনের জন্য ছুটি কাটাতে কলকাতার বাড়িতে এসেছেন। তিনি বলেন, “জঙ্গলমহলে শান্তি ফেরায় লোকজন আসছেন জেনে এক বেলার জন্য ঝাড়গ্রামে চলে এলাম। শাল-সবুজের সমারোহে পার্কটি সত্যিই সুন্দর!” |
ঝাড়গ্রাম শহরের অদূরে ধবনী এলাকায় ৩৪ হেক্টর এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা মিনি চিড়িয়াখানা বা ডিয়ার পার্কটিতে ৯৫টি চিতল হরিণ ছাড়াও রয়েছে ভালুক, হায়না, ফিসিং ক্যাট, সজারু, কুমির, পাইথন, ময়ূর-সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডিয়ার পার্কের তিনটি পূর্ণ বয়স্ক চিতল হরিণ, একটি রেসাস মাঙ্কি (লালমুখো বাঁদর) এবং একটি ড্রোমেডারি ক্যামেলের (এক কুঁজো উট) মৃত্যু হয়। পশু-প্রাণীদের মৃত্যু-মিছিলের জেরে গত ১৫ সেপ্টেম্বর বন্ধ করে দেওয়া হয় ওই পার্ক। এরপরই প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের সুপারিশক্রমে ডিয়ার পার্কের দরজা দর্শকদের জন্য বন্ধ করে দেয় বন দফতর। শুরু হয় পশু-প্রাণীদের চিকিৎসা। |
লাগাতার পশুমৃত্যুর জেরে ১৫ সেপ্টেম্বর বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ঝাড়গ্রামের ডিয়ার পার্ক।
বড়দিনে ফের দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হল সেটি। রবিবার দেবরাজ ঘোষের তোলা ছবি। |
গত তিন মাসে অবশ্য নতুন করে কোনও প্রাণীর মৃত্যু হয়নি। তিন মাস চিকিৎসার পরেও হরিণ-সহ পশু-প্রাণীদের ‘সুস্থতা’ নিয়ে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর সুনিদির্ষ্ট সিদ্ধান্ত না জানানোয় ডিয়ার পার্ক খোলার ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দেয়। ঝাড়গ্রামের ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার (ঝাড়গ্রাম বনাঞ্চল আধিকারিক) পার্থপ্রতিম ত্রিপাঠী বলেন, “কয়েক দিন আগে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা পরিদর্শন করে পার্কটি খোলার পক্ষে মত দেন। এরপর ২৫ ডিসেম্বর থেকে ডিয়ার পার্ক খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রবিবার বড়দিনে উল্লেখযোগ্য দর্শক এসেছিলেন। বৃহস্পতিবার বাদে সপ্তাহের বাকি ৬ দিন দর্শকদের জন্য পার্কটি আপাতত খোলা থাকবে।” |