ময়ূরেশ্বরে মাল বিলি নিয়ে ক্ষোভ
রেশন দোকানে আগুন উত্তেজিত গ্রাহকদের
রেশন বিলি নিয়ে ক্ষোভের জেরে ডিলারের বাড়ির গেট ভেঙে রেশন দোকানে আগুন লাগিয়ে দিলেন গ্রামবাসী। রবিবার বিকেলে বীরভূমের ময়ূরেশ্বর থানার মল্লারপুরের ঘটনা। দমকলের ইঞ্জিন আসার আগে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাই আগুন নিভিয়ে দেওয়ায় বড় বিপদ হয়নি। ওই রেশন ডিলার ও তাঁর পরিবারের সদস্যেরা ঘটনার আগেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।
মল্লারপুরের পশ্চিমপাড়ায় পানাগড়-মোরগ্রাম জাতীয় সড়কের ধারেই কণিকা মণ্ডল নামে ওই ডিলারের দোতলা বাড়ি। বাড়ির নীচেই রেশন দোকান। কণিকাদেবীর নামে ডিলারশিপ থাকলেও তাঁর স্বামী অনাথবন্ধু মণ্ডলই দোকান চালাতেন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। এই রেশন দোকানের আওতায় এলাকার প্রায় সাড়ে তিন হাজার গ্রাহক। দীর্ঘ দিন ধরেই কণিকাদেবী ও তাঁর স্বামীর উপরে ক্ষোভ রয়েছে রেশন গ্রাহকদের। তাঁদেরই একাংশের অভিযোগ, এলাকার অন্য ডিলারেরা ঠিকঠাক মাল দিলেও এই দম্পতি কম পরিমাণ মাল দেন। বিশেষ করে ২৫০ মিলিলিটার কেরোসিনের জায়গায় ২০০ মিলিলিটার দেওয়া নিয়ে গ্রাহকদের ক্ষোভ সবচেয়ে বেশি।
রেশন দোকানে তাণ্ডবের চিত্র। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
স্থানীয় বাসিন্দা তথা ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ রায় বলেন, “কম মাল দেওয়া নিয়ে এলাকাবাসীর একাংশের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। তা ছাড়া, কোনও গ্রাহকের রেশন কার্ড ছিঁড়ে গেলে সেই গ্রাহকের নাম তাঁর কাছে থাকা তালিকায় থাকা সত্ত্বেও ওই ডিলার তাঁকে মাল দিতেন না। দুর্ব্যবহারের অভিযোগও ছিল অনাথবন্ধুবাবুর বিরুদ্ধে। শুক্রবার ব্লক খাদ্য পরিদর্শককে সব জানাই।” ব্লক খাদ্য পরিদশর্ক বিমান চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওই ডিলারের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ ছিল। শুক্রবার অভিজিৎবাবুর কাছে অভিযোগ পেয়ে ডিলার ডেকে সতর্কও করে দিই।”
কেরোসিন কম দেওয়া নিয়ে শুক্রবারই গ্রাহকদের একাংশের সঙ্গে বিবাদ বাধে অনাথবন্ধুবাবুর। রবিবার সকালেও কিছু গ্রাহক তাঁর বাড়িতে গিয়ে ‘হুমকি’ দেন। এর পরেই বিকেল ৫টা নাগাদ গ্রাহকদের সঙ্গে মুখোমুখি বসার কথা জানান অনাথবন্ধুবাবু। ৪টের মধ্যেই শ’তিনেক গ্রামবাসী জড়ো হন। কিন্তু ডিলারের বাড়ির গেটে তালা দেখে ধৈর্যচ্যুতি ঘটে জনতার। কোল্যাপ্সিবল গেট ভেঙে দোকানে আগুন লাগানো হয়। ঘটনার জেরে জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশি টহল চলছে। কেউ গ্রেফতার হয়নি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দমকলকর্মীরা জানান, দোকানের ভিতরে একটি রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের পাশাপাশি কেরোসিন তেলও মজুত ছিল। ঠিক সময়ে ব্যবসায়ীরা আগুন না নেভালে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটত। বছর তিনেক আগে এপিএল গ্রাহকদের দেওয়া গমের মান নিয়ে গোটা রাজ্যে যখন রেশন-রোষ ছড়ায়, সেই সময়েও অনাথবন্ধুবাবুদের বাড়িতে হামলা হয়েছিল। হয় পথ অবরোধও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু গ্রাহকের দাবি, “তার পরেও ওঁরা শোধরাননি। খারাপ ব্যবহার করতেন। কার্ড পাল্টানোর জন্য গেলে সহযোগিতা করতেন না। সব মিলিয়ে মানুষ খেপে ছিলেন।”
এ দিন বহু চেষ্টা করেও অনাথবন্ধুবাবু বা কণিকাদেবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ‘পশ্চিমবঙ্গ এমআর ডিলার অ্যাসোসিয়েশন’-এর জেলা সম্পাদক রবিলাল দাস বলেন, “ওই ডিলার আমাদের সদস্য নন। যদি তিনি কোনও অন্যায় করেও থাকেন, তা হলে আইন নিজের পথে চলবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.